নিজস্ব প্রতিনিধি: নিত্যদিনের ষড়যন্ত্র। কীভাবে বাংলার(Bengal) মানুষকে টাইট দেওয়া যাবে যাতে তাঁরা মমতা(Mamata Banerjee) ভজনা ছেড়ে মোদি(Narendra Modi) বন্দনায় মেতে ওঠেন। কেননা এই বাংলার মানুষই বাংলার মেয়ের ওপর আস্থা রেখে গেরুয়া ব্রিগেডকে একুশের বিধানসভা নির্বাচনে গোহারান হারিয়ে ছেড়ে দিয়েছে। আর তাই বাংলায় একের পর এক কেন্দ্রের প্রকল্পের টাকা পাঠানো যেমন বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে, ঠিক তেমনি এবার বাংলার মানুষকে ভাতে মারার ফন্দি নিয়ে রেশনে(Ration) চাল-গমের জায়গায় মিলেট পাঠানোর কথা ভাবা শুরু করে দিয়েছে মোদি সরকার। সূত্রে তেমনটাই জানা গিয়েছে। জোয়ার(Joyar), বাজরা(Bajra) ও রাগি(Ragi) – এই ৩টি খাদ্যশস্যকে একসঙ্গে মিলেট(Millet) বলা হয়। পশ্চিম ভারতে এই মিলেটের বহুল ব্যবহার থাকলেও মধ্য ভারত এবং উত্তর ভারতের লোকেরাও তা খান। কিন্তু বাংলায় এই খাদ্যশস্য কেউ খায় না বললেই চলে। এবার সেই মিলেটকেই বাংলার রেশন দোকানগুলির মাধ্যমে বিলির সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে কেন্দ্র সরকার।
আরও পড়ুন পঞ্চায়েত নির্বাচনের জট কাটল, হস্তক্ষেপে নারাজ আদালত
দিল্লির সাউথ ব্লক সূত্রে জানা গিয়েছে, রেশন ব্যবস্থার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে মোটা দানার খাদ্যশস্য হিসাবে চিহ্নিত মিলেট সরবরাহ করতে রাজ্য সরকারগুলিকে বলছে কেন্দ্রীয় সরকার। মিলেট নিয়ে রাজ্য সরকারগুলির সঙ্গে কেন্দ্রের একাধিক বৈঠক হয়েছে। রাজ্যগুলিকে জোয়ার, বজরা, রাগিসহ বিভিন্ন ধরনের মিলেট সংগ্রহের পরিমাণ বাড়াতে বলা হয়েছে। পুষ্টির মাত্রা অনেক বেশি থাকায় খাদ্য হিসেবে মিলেটের ব্যবহার বৃদ্ধিতে জোর দিয়েছে কেন্দ্র। স্কুলের মিড ডে মিল প্রকল্প, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের খাদ্যসহ সরকারের বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্পে মিলেটের ব্যবহার বাড়াতে বলা হয়েছে। সাধারণ মানুষের কাছে মিলেটকে তুলে ধরতে দেশজুড়ে প্রচারও শুরু হয়েছে। কেন্দ্রের সব দফতর ও সংস্থার ক্যান্টিনে মিলেট থেকে তৈরি খাদ্যসামগ্রী রাখার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন পঞ্চায়েত ভোটে ছাড়পত্র দিলেও রাজ্যের জাতিগত গণনায় স্থগিতাদেশ হাইকোর্টের
বাংলা সহ দেশের প্রায় সব রাজ্যেই কমবেশি মিলেট জাতীয় শস্য হয়। তবে তার উৎপাদন বেশি হয় কর্ণাটক, রাজস্থান, মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ প্রভৃতি রাজ্যে। সরকারি উদ্যোগে চাষিদের কাছ থেকে মিলেট এরাজ্যে সংগ্রহ করা হয় না। যেসব রাজ্যে বেশি পরিমাণ মিলেট হয় সেখানে সরকারি উদ্যোগে চাষিদের কাছ থেকে তার কিছুটা কেনা হয়। কয়েকটি রাজ্যে রেশনে মিলেট সরবরাহও করা হয়। কেন্দ্রীয় সরকার রেশনসহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পে মিলেটের ব্যবহার আরও বাড়াতে চলেছে। মিলেটের ব্যাপারে কর্ণাটক সরকারের উদ্যোগকে মডেল হিসেবে তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মতো যেসব রাজ্যে মিলেটের উৎপাদন খুব কম সেখানে ভিন রাজ্য থেকে তা পাঠিয়ে বাংলায় রেশনে সরবরাহ করা হবে কি না সে ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত এখনও কেন্দ্র জানায়নি। এই পরিস্থিতিতে আগামী দিনে চাল-গমের বদলে কিছু মিলেট দেওয়ার সম্ভাবনা থাকছে বলে মনে করছেন অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলারস ফেডারেশনের মাথারা। কিন্তু রাজ্যের মানুষের খাদ্যভাসের সঙ্গে মিলেট মানানসই হবে কি না সে প্রশ্ন থাকছেই।