নিজস্ব প্রতিনিধি: দক্ষিণ কলকাতার হরিদেবপুর(Haridevpur) থানা এলাকার চকরামপুরে নিজের বাড়িতেই খুন(Murder) হয়েছিলেন বেসরকারি সংস্থার কর্মী বছর ৪২-এর বাপ্পা ভট্টাচার্য। কার্যত খুন হওয়ার ৩দিন পরে তাঁর দেহ যখন পুলিশ উদ্ধার করে তখন তাতে রীতিমত পচন ধরে গিয়েছিল। বাপ্পাবাবু বাড়িতে একাই থাকতেন। তাঁর মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছিল এবং সেই তরুণী থাকতেন বেহালায় নিজের শ্বশুরবাড়িতে। গত বুধবার সেই খুনের ঘটনা সামনে আসে। ঘটনার তদন্তে নামে কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড শাখার আধিকারিকেরা। তাঁরা বাপ্পাবাবুর মেয়ের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন এলাকার বাসিন্দাদের। সেই সঙ্গে বাপ্পাবাবুর মোবাইলের কললিস্টও খতিয়ে দেখেন তাঁরা। আর সেই জায়গা থেকেই কয়েকজন যুবকের নাম জানতে পারেন তদন্তকারী আধিকারিকেরা। এরপরেই বিহারের(Bihar) ঔরঙ্গাবাদ(Aurangabad) থেকে বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেফতার(Arrest) করা হয় ঘটনার মূল অভিযুক্ত কুন্দন লালকে। তাঁকে জেরা করে শুক্রবার ভোরে গ্রেফতার করা হয় ওই খুনের ঘটনায় জড়িত আরও দুই যুবক দেবরাজ রায় ও জিতেন লামাকে।
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, মধ্য কলকাতায়(Kolkata) একটি চা পাতার দোকানে কাজ করতেন বাপ্পাবাবু। সেই সূত্রেই তাঁর সঙ্গে আলাপ হয়েছিল কুন্দনের। দুইজনই নিয়মিত মদ খেতেন। সেই মদের টানেই বাপ্পাবাবুর বাড়িতে কুন্দন ও তার সঙ্গীরা আসাযাওয়া শুরু করে যা এলাকাবাসীর নজরে পড়েছিল। বিষয়টি বাপ্পাবাবুর মেয়ের কানেও উঠেছিল। সেই নিয়ে প্রতিবাদও করেন তিনি। কিন্তু বাপ্পাবাবুর বাড়িতে কুন্দন ও তার সঙ্গীদের আসাযাওয়া ও মদ্যপানের আসর বসানো থেমে যায়নি। পুলিশ অভিযুক্তদের জেরা করে জানতে পেরেছে, কুন্দন বাপ্পাবাবুর কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা ধার নিয়েছিল।। সেই টাকা বাপ্পাবাবু বার বার ফেরত চাইলেও তা কুন্দন দেয়নি। গত রবিবার রাতে বাপ্পাবাবুর বাড়িতে মদের আসরে তা নিয়ে বচসা বাঁধে বাপ্পাবাবুর সঙ্গে কুন্দনের। সেই সময় সেখানে উপস্থিত ছিল দেবরাজ রায় ও জিতেন লামাও। বচসা চলাকালীন সময়েই কুন্দন ধাতব মূর্তি দিয়ে বাপ্পাবাবুর মাথা ও মুখে আঘাত করে। আর সেই কারণেই অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়েই মৃত্যু হয় বাপ্পাবাবুর।
পুলিশ জানতে পেরেছে এই ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত ছিল না। এমনকি বাপ্পাবাবুকে খুন করার অভিপ্রায়ও তাদের ছিল না। তবে বাপ্পাবাবুর সঙ্গে সেদিন কুন্দনের ঝগড়া বাঁধতেই বাকিরা কুন্দনের পক্ষ নিয়ে তাঁর ওপর চড়াও হয়। বাপ্পাকে বিছনায় শুয়ে প্রথমে মাটির টব দিয়ে মারার চেষ্টা করে তারা। সেটিকে এড়িয়ে যাওয়ার পর তারা আরও মারমুখী হয়ে ওঠে। তখনই ধাতব মূর্তি তুলে তাঁকে আঘাত করে তারা। এরপরই মৃত্যু হয় বাপ্পাবাবুর। কুন্দনকে পুলিশ বিহার থেকে গ্রেফতার করলেও দেবরাজ ও জিতেনকে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদিনই ৩জনকে আদালতে তোলা হবে বলে জানা গিয়েছে।