নিজস্ব প্রতিবেদক: যুদ্ধে কখনও কোনও কিছুর সমাধান করতে পারে না। তাতে শুধুই ধ্বংস, মৃত্যু আর কান্না ছাড়া কিছুই মেলে না। তাই শান্তির বার্তা দিতে অভিনব পথ বেছে নিলেন এক সেলুনের মালিক। ‘দয়া করে যুদ্ধ বন্ধ করুন’, লিখলেন মাথার চুলে কাঁচি আর ক্ষুর চালিয়ে। বেশি দূর নয়, কলকাতার উল্টো দিকে থাকা হাওড়া(Howrah) শহরের কদমতলা(Kadamtala) এলাকায় এক সেলুনের(Saloon) মালিক রবীন দাসের(Rabin Das) ‘প্লিজ স্টপ ওয়ার’ এখন মন কেড়েছে হাওড়া তথা রাজ্যবাসীর। এই ‘স্পেশাল কাট’- এর খোঁজ নিচ্ছেন অনেকেই। সোশ্যাল মিডিয়ায় এখন রীতিমত ভাইরাল রবীনবাবুর কাজ।
হাওড়া কদমতলা এলাকার রবীন দাসের সেলুন হাওড়া শহরের মধ্যে রীতিমত জনপ্রিয় এক সেলুন। রবীনবাবু চুল কাটাকে শুধু পেশা হিসেবে নয়, দেখেন নেশা হিসেবেও। রবীন মনে করেন, এটা নিছক ক্ষৌরকর্ম নয়। এই কাজও এক শিল্প। তাই বিভিন্ন সময়ে একাধিক প্রাসঙ্গিক বিষয় উঠে এসেছে তাঁর স্পেশাল হেয়ার কাটিংয়ে। এবারেও হল তাই। তবে বার্তা আরও দামী। ইউক্রেন- রাশিয়া যুদ্ধের বিরুদ্ধে ‘কাঁচি- ক্ষুর’ ধরেছেন তিনি। তাতেই ফুটে উঠেছে শিল্প। চুলে কাঁচি আর ক্ষুর বুলিয়ে মাথায় ফুটিয়ে তুলছেন যুদ্ধবিরোধী এই বার্তা। শান্তির এই বার্তা যেন সদা ‘শিরোধার্য’। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে তোলপাড় চলছে বিশ্বজুড়ে। বিধ্বস্ত ইউক্রেন(Ukraine) তবুও নতি স্বীকার না করে প্রত্যাঘাত করছে। নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়েছে ভারত। দুই দেশের একাধিকবার শান্তি বৈঠক হলেও মেলেনি সমাধান সূত্র। বিশ্ব উন্মুখ হয়ে রয়েছে যুদ্ধ শেষের অপেক্ষায়।
এই যুদ্ধ আর তার জেরে মাথার চুলে বিশেষ কাটিং করে জনসমাজে স্পষ্ট বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার প্রসঙ্গে রবীনবাবু জানিয়েছেন, যুদ্ধ কখনই কোনও সমস্যার সমাধান করতে পারে না। বরঞ্চ তা আরও হাজারো সমস্যার জন্ম দেয়। ঠিক এখন যেমনটি দেখা যাচ্ছে ইউক্রেনের মধ্যে। সেখানকার প্রায় ৪০ লক্ষ মানুষ অন্যদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন। যারা আছেন তাঁরা মারা পড়ছেন নতুবা গৃহহীণ হয়ে জীবন কাটাচ্ছেন। এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ হওয়া উচিত। তিনি সেটাই করছেন। সহযোগিতা করছেন তাঁর সেলুনে চুল কাটতে আসা মানুষেরা। যুদ্ধের জেরে এদেশে জ্বালানির দাম বেড়ে চলেছে নিত্যদিন। তার জেরে আমজনতা সব থেকে বেশি সমস্যার মুখে পড়েছে। মোদি সরকার আমজনতার কথা না ভেবেই পেট্রোল, ডিজেল, রান্নার গ্যাসের দাম বাড়িয়ে চলেছে। তাই তার বিরুদ্ধেও তিনি প্রতিবাদ জানাবেন এই পথেই। রবীন আরও জানিয়েছেন, যারা তাঁর সেলুনে যুদ্ধ বিরোধী বার্তা দিতে স্পেশাল কাটিং করতে আসেন সেলুনে তাঁদের কাছ থেকে তিনি কোনও টাকা নেননি। আবার এই কাজ বিনামূল্যে তিনি অনেককেই শিখিয়েছেন।