নিজস্ব প্রতিনিধি: দ্রুত শুরু হবে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া। নোটিশ দিয়ে এমনটাই জানিয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC)। দীর্ঘ ৬ বছর পর ফের রাজ্যে হতে চলেছে এসএসসি মারফৎ শিক্ষক নিয়োগ। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে শিক্ষক নিয়োগের জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী (CM) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরেই জারি হল এসএসসি-র নোটিশ।
মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে শিক্ষক নিয়োগ করা হবে। সেই সঙ্গে নিয়োগ হবে প্রধান শিক্ষক পদেও। দ্রুত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হবে বলেও জানা গিয়েছে। রাজ্যের স্কুল সার্ভিস কমিশনকে শিক্ষক নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন ব্রাত্য বসু। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেই তড়িঘড়ি নেওয়া হয়েছে পদক্ষেপ। কিছুদিনের মধ্যেই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হবে শূন্যপদ ও পরীক্ষার তারিখ।
অন্যদিকে, এসএসসিতে যারা দুর্নীতির রাস্তায় চাকরি পেয়েছিলেন তাঁদের চাকরি বাতিল করছে রাজ্য। যোগ্য উত্তীর্ণদের চাকরি দেওয়ার কড়া নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। ইতিমধ্যেই সেই প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে রাজ্যের শিক্ষা দফতর। আর এতেই উৎফুল্ল যোগ্য প্রার্থীরা। জরুরি ভিত্তিতে নিয়োগ করা হবে প্রকৃত উত্তীর্ণদের। নিরপেক্ষ ভাবে শুরু হয়েছে চিহ্নিতকরণের কাজ।
জানা গিয়েছে, যোগ্য উত্তীর্ণদের চাকরি দেওয়া হবে কলকাতা হাই কোর্টে পরবর্তী শুনানির আগেই। নবান্নের কড়া নির্দেশ ছিল গত ২৭ এপ্রিলের মধ্যেই শিক্ষা দফতরকে দিতে হবে সেই সংক্রান্ত প্রাথমিক সমীক্ষার রিপোর্ট। শুরু হয়ে গিয়েছিল প্রকৃত যোগ্য ও ভুয়ো নির্বাচনের কাজ। রাজ্যের মতে, আইনি প্রক্রিয়া যেমন চলছে চলুক। তবে ভুয়োদের সরিয়ে যোগ্যদের চাকরি দেওয়ার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার নীতিগত দিক থেকে এই সিদ্ধান্ত নিতে চাইছে। যোগ্যদেরকেই আইনগত ভাবেই চাকরি দেবে রাজ্য।
জানা গিয়েছিল, কয়েক হাজারেরও বেশি প্রধান শিক্ষক নিয়োগ করবে রাজ্য। মধ্যশিক্ষা পর্ষদ সেই তালিকা প্রস্তুত করে পাঠিয়ে দিয়েছে এসএসসি দফতরে। শূণ্যপদ নেহাত কম নয়। আর এই প্রস্তাবেই উৎফুল্ল প্রধান শিক্ষক পদপ্রার্থীরা। ঘোষণা করা হয়েছিল শূণ্যপদ প্রায় ২২০০। এদিকে সম্প্রতি বিধানসভায় শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু তাঁর বক্তব্য পেশ করার সময় জানিয়েছেন, রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলে ৫৮০০-রও বেশি প্রধান শিক্ষকের পদ খালি আছে। আর তা জেনে আরও উৎফুল্ল হয়ে উঠেছেন পদপ্রার্থীরা।
উল্লেখ্য, রাজ্য সরকার বিদ্যালয় স্তরে একাধিক উল্লেখযোগ্য প্রকল্প চালায়। শিক্ষার মান, পরিকাঠামোর উন্নয়ন ও শিক্ষার্থী কল্যাণে সেই প্রকল্পগুলি পরিচালনার দায়িত্বে থাকেন প্রধান শিক্ষক। প্রধান শিক্ষকদের অনুপস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকরা সেই দায়িত্বে থাকেন। কিন্তু সেই ব্যবস্থা অস্থায়ী। চলছে এসএসসি নিয়গে একাধিক মামলা। এমনিতেই রাজ্যে শিক্ষকের অভাব। এর মধ্যে বিদ্যালয়ে একজন শিক্ষককে প্রকল্প পরিচালনার কাজে নিয়োজিত করলে পঠন-পাঠনে প্রভাব পড়ে। সেই সঙ্গে বাড়ে মাত্রাতিরিক্ত চাপ। রাজ্য সরকার সবদিক মাথায় রেখেই তাই প্রধান শিক্ষক সহ সবকটি নিয়োগ দ্রুত সেরে ফেলতে চায়। মজবুত করতে চায় রাজ্যের শিক্ষা পরিকাঠামো। উল্লেখ্য, রাজ্যের স্কুলগুলিতে শূন্যপদের সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন লক্ষেরও বেশি। স্বভাবিকভাবেই প্রধান শিক্ষক নিয়োগের পরে শিক্ষক পদ খালি হবে আরও। উল্লেখ্য, প্রধান শিক্ষক নিয়োগ সমাপ্ত হয়েছিল ২০১৯ সালে। বৃহস্পতিবার এসএসসির তরফ থেকে নোটিশ দিয়ে জানানো হয়েছে, দ্রুত হবে নবম- দশম ও একাদশ শ্রেণিতে শিক্ষক নিয়োগ। এও জানানো হয়েছে, দ্রুত হবে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ। এই নোটিশের পরেই রাজ্যের বেকার ও চাকুরিপ্রার্থীদের মুখে ফুটেছে হাসি।