নিজস্ব প্রতিনিধি: এখনও এক বছর হয়নি। মনে হচ্ছে কয়েক দিন আগের কথা। খেতে খুব ভালবাসতেন। আড্ডা দিতে, গল্প করতেও বিস্তর পছন্দ করতেন। রাজনীতি তো চিরকালীন পেশা ছিল, নেশাও। হয়ে উঠেছিলেন রাজ্য রাজনীতির জীবন্ত কিংবদন্তী। অথচ হুট করেই চলে গেলেন তিনি। আর রেখে গেলেন একটা অপূর্ণ শূন্যতা। তাঁর জন্মদিনে তাই স্মৃতিচারণাই একমাত্র ভরসা। সেই পথেই পা বাড়ালেন কলকাতা পুরনিগমের ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর এবং তাঁর স্নেহধন্যা সুদর্শনা মুখোপাধ্যায়(Sudarshana Mukhopadhay)। আজ রাজ্যের প্রয়াত রাজনীতিবিদ ও মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের(Subrata Mukhopadhay) ৭৬তম জন্মবার্ষিকী(Birthday)। এই প্রথম তাঁর জন্মদিন পালিত হচ্ছে তাঁকে ছাড়াই। স্বাভাবিক ভাবেই মন ভারাক্রান্ত তাঁর পরিবারের সদস্যদের, অনুগামীদের, ভক্তমণ্ডলীর। তবুও কিছুটা শক্ত মনে এদিন সুব্রতবাবুর জন্মবার্ষিকীতে এক রক্তদান শিবির ও সুব্রতবাবুর বিরল কিছু ছবির প্রদর্শনীর আয়োজন করেন সুদর্শনা। আর সেটাও সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের স্পর্শধন্য ক্লাব একডালিয়া এভারগ্রিনের(Ekdalia Evergreen) আঙিনায়। সেই সঙ্গে ছিল বাচ্চাদের মিষ্টিমুখ করা ও বৃক্ষরোপণের অনুষ্ঠানও।
গত বছর ৪ নভেম্বর কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। সুব্রতবাবুর স্মৃতিতেই এদিন সুদর্শনা একডালিয়া ক্লাবে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেন। সঙ্গে ছিল সুব্রতবাবুর কিছু বিরল মুহুর্তের ছবির প্রদর্শনীও। এদিন এই কর্মসূচিতে অংশ নেন সুব্রত বক্সি, সৌগত রায়ের মতো নেতারা। তবে এসবের থেকেও বড় বেশি ছুঁয়ে গিয়েছে সবাইকে যে ঘটনা তা হল সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের অনুপস্থিতির ঘটনা। তাঁর মতো ব্যক্তিত্ব বাংলার রাজনীতিতে এখন বড়ই বিরল। কেননা সুব্রত মুখোপাধ্যায় আজীবন দক্ষিণপন্থী রাজনীতি করে গেলেও বাম নেতাদের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন তেমনি কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে চলে এলেও দুই দলের নেতার সঙ্গেই তাঁর সখ্যতা ছিল। রাজনীতির ময়দানে নেমে বাম বা কংগ্রেসকে আক্রমণ করেছেন তিনি। কিন্তু কখনই শালীনতার গন্ডি পার হয়ে সেই আক্রমণ শানেননি তিনি। আজকের রাজ্য রাজনীতিতে যখন কুকথা, হুমকি, ধমকির বন্যা বয়ে যাচ্ছে তখন সুব্রত মুখোপাধ্যায় মানুষের কাছে মানুষের মনে সেই নেতা হয়ে রয়েছেন যাকে আপামর মানুষ আজও শ্রদ্ধা করেন।