নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রায় ৩০ বছরের পুরাতন বিদ্যাসাগর সেতুর(Vidyasagar Setu) দুইদিকের পাইলনের কেবলস বদলের কাজ শুরু হতে চলেছে ১ নভেম্বর থেকে। আর তাই লক্ষ্মীপুজো মিটলেই এই সেতুতে যান নিয়ন্ত্রণের(Traffic Control) পথে নামছে Kolkata Police। সহযোগিতায় থাকছে Howrah City Police-ও। প্রাথমিক ভাবে ঠিক করা হয়েছে ৮ মাসের টানা ওই যান নিয়ন্ত্রণের সময়ে বিদ্যাসাগর সেতু দিয়ে কোনও পণ্যবাহী যান চলাচল করতে দেওয়া হবে না। এমনকি দুরপাল্লার ভারী বাসও হাওড়া ব্রিজ দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হতে পারে। তবে সাধারন যাত্রীবাহী বাস, ৪ চাকার ছোট গাড়ি এবং ২ চাকার স্কুটি ও বাইক চলাচল করতে দেওয়া হবে বিদ্যাসাগর সেতু দিয়ে।
দুই শহরের পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ৮২৩ মিটার দীর্ঘ বিদ্যাসাগর সেতুর ৬টি লেনের মধ্যে দুই পাশের ২টি করে লেন আটকে দুই দফায় এই কাজ হবে। প্রতিটি দফা হবে ৪ মাস করে। প্রথম দফায় নভেম্বর থেকে পরের বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত কলকাতা থেকে হাওড়া মুখী লেনের অংশে কাজ হবে। পরের ৪ মাস কাজ হবে হাওড়া থেকে কলকাতা মুখী লেনে। প্রাথমিক ভাবে ঠিক করা হয়েছে, প্রথমে হাওড়ামুখী রাস্তার দু’টি লেন আটকানো হবে। তখন বাকি চারটি লেনকে দু’ভাগে ভাগ করে সেখানে অস্থায়ী পথ-বিভাজিকা তৈরি করা হবে। যাতে দু’দিকের দুই লেন দিয়ে গাড়ি যেতে পারে। পুলিশের অনুমান, এ ভাবে গাড়ি চালানো হলে ছোট গাড়ি এবং বাস চলাচল করতে পারবে। তবে টানা ৮ মাসের এই যান নিয়ন্ত্রণ এখন দুই শহরের দুই পুলিশ প্রশাসনের কাছেই কার্যত চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে চলেছে।
তবে দুই শহরের পুলিশের আধিকারিকেরা মনে করছেন চলতি বছরের কালীপুজো, ছটপুজো এবং ইডেন গার্ডেন্সে বিশ্বকাপের বিভিন্ন খেলার দিনে দুই শহরেই যান চলাচল ব্যবস্থায় সমস্যা হতে পারে। কারণ, নভেম্বরের মাঝামাঝি কালীপুজো ও ছটপুজো। কালীপুজোর নিরঞ্জন এবং ছটের জন্য Strand Road, Kings Way-তেই শুধু নয়, শহরের অনান্য বিভিন্ন রাস্তা বন্ধ রাখা হয়। ফলে ওই ক’দিন যাতে শহরের গতি রুদ্ধ না হয়ে পড়ে তার জন্য ওই দিনগুলিতে লরি বা পণ্যবাহী যে কোনও গাড়ি শহরে ঢুকতে বা বেরোতে দেওয়া হবে না বলেই ঠিক করা হয়েছে। একই সঙ্গে, VIP Road এবং B T Road-এ কাজের জন্য নভেম্বরের ওই সময়ে যান নিয়ন্ত্রণ করা হতে পারে নিবেদিতা সেতুতে যাওয়ার দু’টি রাস্তাতেও। ফলে ওই সব রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী ছোট গাড়িকে যানজটের কবলে পড়তে হতে পারে অতিরিক্ত পণ্যবাহী গাড়ি যাওয়ার কারণে। বিদ্যাসাগর সেতু দিয়ে এখন দৈনিক প্রায় ৯০ হাজার গাড়ি চলাচল করে। কোনও কোনও দিন তা লক্ষের ঘরও পার হয়ে যায়। স্বাভাবিক ভাবেই এই সেতুতে যান নিয়ন্ত্রণ বেশ কঠিন পরিস্থিতি তৈরি করতে চলেছে।
প্রাথমিক ভাবে ঠিক করা হয়েছে, যে সব পণ্যবাহী লরি এখন বেহালা-আলিপুরের দিক থেকে এসে বিদ্যাসাগর সেতু ধরে, সেগুলিকে তখন হসপিটাল রোড, ধর্মতলা, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, শ্যামবাজার, টালা সেতু, বি টি রোড হয়ে নিবেদিতা সেতু দিয়ে পাঠানো হবে। আবার টালিগঞ্জ-ভবানীপুরের দিক থেকে আসা লরি বা ট্রাককে এক্সাইড মোড়, ধর্মতলা হয়ে ওই একই রুটে নিবেদিতা সেতুতে পাঠানো হবে। সব চেয়ে বেশি পণ্যবাহী লরিচলাচল করে বিদ্যাসাগর সেতু এবং বন্দর এলাকার মধ্যে। ওই এলাকা থেকে যে সব লরি ও ট্রাক শহরের বাইরে যায়, তাদের হেস্টিংস মোড় থেকে ঘুরিয়ে স্ট্র্যান্ড রোড, কিংস ওয়ে, ধর্মতলা হয়ে পাঠানো হবে নিবেদিতা সেতুতে।