নিসর্গ নির্যাস: নীল- সাদা না কি লাল- সাদা- নীল? মেসি না কি এমবাপে? জয় হবে কার? বামপন্থীরা (LEFT) বলছেন, আর্জেন্তিনা (ARGENTINA) জিতুক বা ফ্রান্স (FRANCE), জয় হবে বামপন্থীদেরই। আজকের ফিফা ওয়ার্ল্ডকাপের ফাইনাল না কি শুধুই লাল। অবাক হচ্ছেন?
আর্জেন্তিনার জাতীয় পতাকায় যে সূর্য দেখা যায় তাকে বলা হয় ‘মে মাসের সূর্য’। ১৮১০ সালের ১৮ থেকে ২৫ মে স্পেনের থেকে স্বাধীনতা পেতে আর্জেন্তিনা যে বিপ্লব চালিয়েছিল সেই বিপ্লব কিন্তু ‘মে বিপ্লব’ নামে পরিচিত। ২৫ মে আজও যথাযথ মর্যাদায় পালিত হয় আর্জেন্তিনায়। প্রসঙ্গত, দেশটি পূর্ণ স্বাধীনতা পায় ১৮১৬ সাল পর্যন্ত যুদ্ধ করে। এখন আসা যাক জাতীয় পতাকায় সূর্য কেন এই প্রসঙ্গে। এই সূর্য আসলে মেঘের আড়াল থেকে বেরিয়ে এসে আলো ছড়িয়ে দেওয়ার প্রতীক। মানে স্পেন উপনিবেশ থেকে স্বাধীনতা লাভ।
অন্যদিকে, ১৮৯০ সালে আর্জেন্তিনায় প্রথম পালন করা হয়েছিল শ্রমিক দিবস। ১৯৩০ সাল থেকে মে দিবস পালিত হয়ে আসছে যথাযোগ্য মর্যাদায়। আর ‘মে দিবস’ মানেই তো দীর্ঘ লড়াইয়ের পর বিজয়।
আর্জেন্তিনা ফুটবল বললেই নাম উঠে আসে দিয়েগো মারাদোনা’র। সেই কিংবদন্তী ফুটবলার ছিলেন ফিদেল কাস্ত্রো’র অন্ধ ভক্ত। ফিদেলের ঘনিষ্ঠ ছিলেন বাংলার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু। তা জানতে পেরেই মারাদোনা ছুটে এসেছিলেন তাঁর কাছে। সেই মারাদোনার উত্তরসূরী মেসি এবং মেসিবাহিনী। আবার, চে গুয়েভারার জন্মস্থান আর্জেন্তিনা। কিউবা বিপ্লবের নায়ক তিনিই।
আর ফ্রান্স মানেই তো ফরাসি বিপ্লব। বামপন্থীদের গর্বের অধ্যায়। ‘স্বাধীনতা, সাম্য, মৈত্রী’। গণতন্ত্রের জয়। ১৭৮৯ থেকে ১৭৯৯ সেই বিপ্লবের শুরুর সময়েই পতন হয়ে গিয়েছিল বাস্তিল দুর্গের।
তাই সাদা-নীল বা লাল-সাদা-নীল দু’দেশেই রয়েছে গর্বের ‘লাল ইতিহাস’। বামপন্থীরা বলছেন, যেই জিতুক জয় হবে আসলে লালেরই। তবু কেউ আর্জেন্তিনা’র সমর্থক কেউ বা ফ্রান্স। সুদূর বিদেশে বিদেশী দু’ই দলের খেলা দেখার আগেই বাম পার্টি অফিসে কেউ টেবিল চাপড়িয়ে গেয়েও উঠছেন ‘সব খেলার সেরা বাঙালির তুমি ফুটবল’। বাম নেতা তাপস সিনহা এই প্রসঙ্গে বলেন, বিপ্লবের মাটি আর্জেন্তিনা, ফ্রান্স। যেই দলই জিতবে আসলে জয় হবে বিপ্লবের। যদিও তিনি চান, জয় হোক আর্জেন্তিনার।