নিজস্ব প্রতিনিধি: তিনি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি মুখী হয়েছেন একুশের ভোটের আবহেই। পদ্মশিবিরে গিয়ে প্রার্থীও হয়েছেন। জিতেওছেন। তাও আবার জেলা তথা রাজ্যের হেভিওয়েট মন্ত্রীকে হারিয়ে। যিনি কিনা আবার তাঁর বাল্যবন্ধুও। তা সে যাই হোক, এখন তিনি বিজেপির বিধায়ক। তাই রাজনৈতিক ভাবে আক্রমণ করতেই পারেবন রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলকে। কিন্তু সেই আক্রমণ শানতে গিয়েই যেভাবে তিনি নির্বাচন কমিশনকে আক্রমণ করে বসলেন তা কার্যত বিতর্কের জন্ম দিয়ে দিল। তিনি বিজেপি বিধায়ক মিহির গোস্বামী। এদিন সাংবাদিক বৈঠক থেকে তৃণমূলকে আক্রমণ করতে গিয়ে তিনি আক্রমণ করে বসেছেন নির্বাচন কমিশনকে। তাঁর দাবি নির্বাচন কমিশন ‘ধৃতরাষ্ট্র’ হয়ে গিয়েছে। আর মিহিরের এহেন দাবি ঘিরেই বেঁধেছে বিতর্ক।
আগামী ৩০ অক্টোবর রাজ্যের যে ৪টি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন হতে চলেছে তার মধ্যে রয়েছে কোচবিহার জেলার দিনহাটা বিধানসভা কেন্দ্রটিও। সেখানেই বিজেপি প্রার্থী অশোক মণ্ডলের প্রচারে বাধা দেওয়ার অভিযোগব উঠেছে। বিজেপির দাবি তৃণমূলের লোকেরাই বাধা দিচ্ছে তাঁদের প্রচারে। আবার তৃণমূলের দাবি এই বাধা এলাকার মানুষজনেরই স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ। এপ্রিল মাসে ভোটের সময়ে যেভাবে দিনহাটায় তৃণমূল প্রার্থী উদয়ন ঘোষের ওপর হামলা চালানো হয়েছিল এবং শীতলকুচিতে ৪জন নিরীহ ভোটারকে গুলি করে মেরে দেওয়া হয়েছিল তার জেরেই এখন বিজেপিকে প্রচারে বাধা দিচ্ছেন সাধারন মানুষ। সেই ঘটনা ঘিরেই মিহির এদিন সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেখানে তিনি তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার পাশাপাশি রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধেও সরব হন।
এদিনের সাংবাদিক বৈঠক মিহির বলেন, ‘এখানে এসে রাজ্যের মন্ত্রী সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিচ্ছেন। নির্বাচন কমিশন এসব দেখতে পাচ্ছে না। এখন কমিশন ধৃতরাষ্ট্র হয়ে গিয়েছে। আমাদের প্রার্থী প্রচারে গিয়ে বাধা পেয়েছেন। উদয়ন গুহর নির্দেশে শারীরিকভাবে নির্যাতন করছে তৃণমূল। কিন্তু, পুলিশ কিছু করছে না। নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করেও কোনও লাভ হয়নি। কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। পরপর আমাদের প্রচারে বাধা দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার সকালেও একই ঘটনা। আমরা ফের নির্বাচন কমিশনের কাছে যাব। ফের অভিযোগ জানাব। রাজ্যে আইনের কোনও শাসন নেই। এখানে শাসক ভোট করায়। তাই ভোটদান কতটা গণতন্ত্র মেনে হবে তা নিয়ে আমার সন্দেহ রয়েছে। রাজ্য জুড়ে সন্ত্রাস চলছে। নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ, নির্বাচন আবহে এই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করুন।’ আর মিহিরের এই নির্বাচন কমিশনকে ‘ধৃতরাষ্ট্র’ বলা নিয়েই বিতর্ক বেঁধেছে। কেননা একথা বলার অর্থই হল মিহির কমিশনকে অন্ধ বলে প্রতিপন্ন করতে চাইছেন।