-273ºc,
Friday, 2nd June, 2023 3:02 am
নিজস্ব প্রতিনিধি: আজ রাম নবমী। ভগবান শ্রী হরি বিষ্ণুর অবতার শ্রী রামচন্দ্রের জন্মবার্ষিকী পালিত হচ্ছে গোটা দেশজুড়ে। প্রতি বছর চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষের নবমী তিথিতে রামের জন্মোৎসব পালিত হয়। একই রীতি ধরে আগামী ৬ এপ্রিল পালিত হবে রামের প্রধান শীর্ষ হনুমান জন্মজয়ন্তীও। এদিনে, দেবী সিদ্ধিদাত্রী, মা দুর্গার নবম শক্তিকে, ভগবান রামের সঙ্গে পুজো করা হয়। সনাতন ধর্মে রাম নবমীর বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। প্রাচীন ভারতের হিন্দু ধর্মগ্রন্থের মতে যুগ যুগ ধরে ভগবান বিষ্ণুকে বিশ্ব সংসারের পালক বলে মনে করা হয়। যুগ যুগ ধরে তিনি নানা অবতারে জন্মগ্রহণ করছেন পৃথিবীতে। শাস্ত্র অনুযায়ী ত্রেতা যুগে রাম জন্মেছিলেন ভগবান বিষ্ণুর অবতার।
তাই রামের জন্মদিনটি রাম নবমী উত্সব রূপে পালিত হয়। এটি মুলত হিন্দু উত্সব। এটি চৈত্র মাসের নবম দিনে পালিত হয়। মুলত এই উত্সবের দিনে খারাপ শক্তিকে পরাজিত করে ভালোর প্রতিষ্ঠা হয় দিকে দিকে, অর্ধমকে নিক্ষেপ করে ধর্মের প্রতিষ্ঠা করা হয়। তবে বর্তমানে রামের পুজোর থেকেও এই দিনে হনুমানের উৎসব বেশি পালন করা হয়। যাই হোক, আজ ওড়িশা থেকে শুরু করে পাটনা, বিহার জায়গাতে পালিত হচ্ছে রামনবমী। যেখানে বাদ নেই পশ্চিমবঙ্গও। আজ জানাবো, পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার ব্যারাকপুর স্টেশনের ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মের মধ্যে অবস্থিত উল্লেখযোগ্য হনুমান মন্দিরটির বিষয়ে।
বছরের প্রতিদিন এই মন্দিরে ভক্তের ভিড় লেগেই রয়েছে। মন্দিরের চারপাশে ছোট্ট ছোট্ট ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানও গড়ে উঠেছে। হনুমান জীর পূজার জন্যে তাঁরাও ব্যবসা করে জীবন কাটাচ্ছেন। সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দাদের ধারণা, মন্দিরে হনুমানের বিগ্রহটি খুব জাগ্রত। আজ থেকে আগামী ৭ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে এই মন্দিরের রাম নবমী উৎসব। ভক্তদের লাগামছাড়া ভিড় সত্যিই প্রমাণ করে ঠাকুর কোথাও না কোথাও ভক্তদের কথা শুনতে পান। রাম নবমী উৎসব উপলক্ষে আমরা ‘এই মুহূর্তে’-র টিম আজ চলে গিয়েছিলাম ব্যারাকপুরের মন্দির প্রাঙ্গণে। সেখানে গিয়ে, মন্দিরের এক পূজারী মনোজ তিওয়ারির সঙ্গে কথা বলি এবং তিনি জানান মন্দির সম্বন্ধে কিছু অজানা তথ্য। তাঁর কথায়, ১৯৫৩ সালে মন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এই বছর ৭০ বছরে পার করল মন্দিরের বয়স।
আগামী ৬ এপ্রিল ভগবান হনুমানের জন্মদিন। আজ রাম নবমী থেকে এই অনুষ্ঠান শুরু হল, হনুমান জয়ন্তীর ঠিক পরের দিন ৭ এপ্রিল শোভা যাত্রার মাধ্যমে এই অনুষ্ঠান শেষ হবে। এই মন্দিরের হনুমানের বিগ্রহ এতটাই জাগ্রত যে, ঠাকুরের টানে দূর দূর থেকে ভক্ত এখানে পুজো দিতে আসে। ভগবান না টানলে ভক্তরা কিছুতেই এখানে আসতে পারবে না। ভক্তের সমস্ত মনোষ্কামনা পূরণ হচ্ছে প্রতিনিয়ত তাই হয়তো ভক্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। রাম নবমীর দিন ভোর থেকে শুরু হয় পুজো, ভক্ত রাত থেকে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। শোভা যাত্রার দিন নানারকম ঝাঁকিয়া পালন করা হয় অর্থাৎ প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। নারী শক্তি, সেভ ড্রাইভ, সেফ লাইভ-সহ বিভিন্ন জয়ধ্বনি দেওয়া হয়। এছাড়াও বিভিন্ন নাচের ব্যবস্থা করা হয়।
এছাড়া মন্দিরের বিগ্রহ প্রতিষ্ঠার দিন থেকে ৭০ বছর পর্যন্ত একইভাবে রয়েছে। কোনও বছরেই নতুন করে নির্মাণ হয়নি। এই মন্দিরটি সর্বপ্রথম নির্মাণ করেন স্বর্গীয় ধর্মরাজ তিওয়ারি, এরপর এর দায়িত্ব নেন লক্ষ্মীকান্ত তিওয়ারি, আর এখন এই মন্দিরের দায়িত্বে রয়েছেন মন্দিরের তৃতীয় প্রজন্ম মনোজ তিওয়ারি। আগামী ৭ দিন ধরে চলবে এই অনুষ্ঠান। দমদম থেকে কৃষ্ণনগর-সহ রাজ্যের বহু ভক্ত এই মন্দিরে আজকের দিনে সমাগম হয়। এদিন সকাল থেকেই ভক্তসংখ্যা উপচে পড়েছিল। এমনকি রাতেও ভিড় চোখে পড়ার মতো ছিল।