নিজস্ব প্রতিনিধি, লাহোর: তীরে এসে ডুবল তরী। টেল এন্ডারদের ব্যর্থতায় বিফলে গেল মহম্মদ নবি-রশিদ খানদের লড়াই। শ্রীলঙ্কার কাছে জেতা ম্যাচ হাতছাড়া করার পাশাপাশি সুপার ফোরে পৌঁছনোর সুবর্ণ সুযোগও হাতছাড়া করল আফগানিস্তান। আর মূল্য চুকিয়ে বিদায় নিতে হল এশিয়া কাপ থেকে। তবে হারলেও মঙ্গলবার লাহোরের গদ্দাফি স্টেডিয়ামে হাশমাতুল্লাহ শাহিদিদের বুক চিতিয়ে লড়াই করার স্মৃতি ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে অনেকদিন রয়ে যাবে।
প্রথমে ব্যাট করে কুশল মেন্ডিজের ৯২ রানের সুবাদে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২৯১ রান তুলেছিল শ্রীলঙ্কা। সুপার ফোরে ওঠার জন্য ৩৭.১ ওভারে ২৯২ রান তোলার লক্ষ্যমাত্রা ছিল হাশমাতুল্লাহ শাহিদিদের র কাছে। কিন্তু সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় আফগানিস্তান। তৃতীয় ওভারেই মাত্র চার রান করে সাজঘরে ফেরেন রহমানুল্লাহ গুরুবাজ। এর পরে ইব্রাহিম জারদানকে (৭) ফিরিয়ে আফগান শিবিরে জোর ধাক্কা দেন কাসুন রাজিথা। তৃতীয় উইকেটে জুটি বেঁধে গুলাবদিন নাইব ও রহমত শেখ খানিকটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছিলেন। নবম ওভারে নাইবকে (২২) ফিরিয়ে ফের ধাক্কা মাথিশা পাথিরানা।
চতুর্থ উইকেটে জুটি বেঁধে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালান রহমত শেখ ও হাশমাতুল্লাহ শাহিদি। দুজনে ৭১ রান যোগ করেন। রহমতকে (৪০ বলে ৪৫)ফিরিয়ে দেন কাসুন রাজিথা। তখনও বিসময়ের বাকি ছিল। ক্রিজে এসে তাণ্ডব শুরু করেন মহম্মদ নবি। ছয় ও চারের বন্যা বয়ে দেন। তিনি যতক্ষণ ব্যাঋটিং করছিলেন ততক্ষণ মনে হচ্ছিল লক্ষ্যপূরণ হতে পারে আফগানদের। কিন্তু বিধ্বংসী নবিকে (৩২ বলে ৬৫) ফিরিয়ে শ্রীলঙ্কা শিবিরে স্বস্তি ফেরান মাথিশা। ৭ নম্বরে নামা করিম জানাত দলকে সুপার ফোরে তোলার লড়াই চালিয়েছিলেন। কিন্তু তিনিও ১৩ বলে ২২ রান করে ফেরেন। খানিকবাদে দুনিথের বলে সাজঘরে ফেরেন আফগান অধিনায়ক হাশমাতুল্লাহ শাহিদি (৫৯)। এর পরে নাজিবুল্লাহ জাদরান ও রশিদ খান অষ্টম উইকেটে জুটি বেঁধে খেলা ঘোরানোর চেষ্টা করেন। দু’জনে ২৩ বলে ৩৯ রান যোগ করেন। বিধ্বংসী নাজিবুল্লাহকে (১৫ বলে ২৩) ফিরিয়ে দেন কাসুন রাজিথা। এর পরে ৩৭ তম ওভারে দলকে লক্ষ্যের কাছে পৌঁছে দিয়েছিলেন রশিদ খান। সুপার ফোরে পৌঁছতে তখন আফগানিস্তানের প্রয়োজন ছিল এক বলে তিন রান। কিন্তু মুজিব উর রহমান তা পারেননি। উল্টে ধনঞ্জয় ডি’সিলভার মতো অনিয়মিত বোলারের বলে আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন। ফজল হক ফারুখি যখন ব্যাট করতে এসেছিলেন তখন জয়ের জন্য আফগানদের প্রয়োজন ছিল তিন রান। হাতে ছিল ৭৭ বল। কিন্তু তিনিও ধনঞ্জয়ের বলে লেগ বিফোর উইকেট হয়ে শূন্য রানে সাজঘরে ফিরলেন। আর ক্রিজের অন্য প্রান্তে দাঁড়িয়ে দুই সতীর্থের আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নোর্বাক দর্শকের মতো দাঁড়িয়ে দেখলেন ১৬ বলে ২৭ রানের অবিশ্বাস্য ইনিংস খেলা রশিদ খান।