এই মুহূর্তে




প্রাণ বাঁচাতে থামানো হল ট্রেন, তবু শেষরক্ষা হল না, মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল শিশু

নিজস্ব প্রতিনিধি: জটিল রোগে আক্রান্ত ছেলেকে নিয়ে হাওড়া থেকে বেঙ্গালুরুর পথে রওনা হয়েছিলেন বাবা। আশা ছিল, সন্তান সুস্থ হয়ে ফিরে আসবে। কিন্তু ট্রেন খড়গপুর পেরোনোর পরেই শিশুসন্তানের শুরু হয় প্রবল শ্বাসকষ্ট । মস্তিষ্কের জটিল রোগে আক্রান্ত হয়েছিল সে। শ্বাসকষ্ট হচ্ছে দেখি সহযাত্রীরা রেল কর্তৃপক্ষকে জানান। তারপর কন্ট্রোল রুমে খবর যায়। সেখান থেকে খবর পাঠানো হয় বেলদা হাসপাতালে। অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। হাওড়া-এসএমভিটি বেঙ্গালুরু সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসের স্টপেজ ছিল না বেলদা স্টেশনে। তা সত্ত্ব রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ জরুরী ভিত্তিতে বেলদা স্টেশনে থামানো হয় ট্রেন। অ্যাম্বুলেন্সে করে তড়িঘড়ি শিশুটিকে নিয়ে যাওয়া হয় বেলদার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। কিন্তু এত চেষ্টার পরেও ফলাফল হলো শুন্য। শেষ রক্ষা করা গেল না। হাসপাতালে পৌঁছানোর পরেই শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।

সন্তানকে হারিয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা আলতাফ। কিন্তু রেল কর্তৃপক্ষ ও সহযাত্রীরা যেভাবে তাঁদের পাশে থেকেছেন সেই জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন তিনি। আলতাফ পেশায় একজন শ্রমিক। বছর তিনেক আগে বিয়ে করেন। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে জন্ম হয় ছেলে সমীরের। কিন্তু জন্ম থেকেই মস্তিষ্কেরা বিরল রোগে আক্রান্ত হয়েছিল সে। এই রোগের নাম হাইড্রোসেফালাস। কলকাতা চিত্তরঞ্জন মেডিক্যাল কলেজ থেকে শুরু করে পিজি সব জায়গাতেই চিকিৎসা হয়েছিল। কিন্তু কোথাও সঠিকভাবে এই রোগ নিরাময় হয়নি। বাধ্য হয়ে বছর দেড়েক আগে সমীরকে নিয়ে আলতাফ যান বেঙ্গালুরু। সেখানেই হয় অস্ত্রোপচার। সুস্থ হয়ে ওঠে অনেকটা শিশুটি। হাসপাতাল থেকে জানিয়ে দেওয়া হয় যদি বড় কোন সমস্যা না হয় তাহলে আর বেঙ্গালুরু আসতে হবে না। কলকাতার যে কোনও হাসপাতালে চেকআপ করালেই হবে।

সবই ঠিক চলছিল । ছন্দপতন ঘটে দিন ১৫ আগে। ফের দেখা যায় সমস্যা, দিনরাত কাঁদতে শুরু করে শিশুটি। সেই সঙ্গে চলে বমি ও শ্বাসকষ্ট। আবার ছেলেকে নিয়ে পিজিতে দৌড়ান বাবা। অভিযোগ, ছেলের অবস্থা এত খারাপ দেখেও ভর্তি নেয়নি পিজি। কখনও পাঠানো হয়েছে নিউরো বিভাগে কখনও বা মেডিসিন বিভাগে। গত্যন্তর না দেখে বাধ্য হয়ে তৎকালে টিকিট কেটে শুক্রবার রাত্রি ১০:৪৫ নাগাদ হাওড়া থেকে বেঙ্গালুরু গামী হাওড়া-এসএমভিটি বেঙ্গালুরু সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসে করে ছেলেকে নিয়ে রওনা দেন আলতাফ। কিন্তু শেষ রক্ষা আর হল না। একটাই আক্ষেপ তাঁর, পিজিতে শুধু শুধু দৌড়াদৌড়ি না করে যদি ১৫ দিন আগে বেঙ্গালুরুতে ছেলেকে নিয়ে যাওয়া যেত তাহলে হয়তো আজ বেঁচে থাকত তাঁর সন্তান।

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

ডেঙ্গুর বলি ভাঙড়ের লাঙলপোতার মাজেদা বিবি, আইডি হাসপাতালে চিকি‍ৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু

নবগ্রামে জঙ্গি সংগঠনের কাছ থেকে পাওয়া ফোন নাম্বারের সূত্র ধরে হানা NIA’ র

SIR ফর্ম হাতে পাওয়ার পর নথি নিয়ে টেনশন, আত্মহত্যা টোটো চালকের!

পার্থের মুক্তি নিয়ে মুখ খুললেন ‘বান্ধবী’ অর্পিতা, কী বললেন?

সামশেরগঞ্জের পরিযায়ী শ্রমিকের রহস্যজনক মৃত্যু গাজিয়াবাদে

জাপানের ওকায়ামা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাম্মানিক ডি লিট পেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ