নিজস্ব প্রতিনিধি: স্বাধীনতা দিবসের আগে উত্তরবঙ্গের(North Bengal) বুকে বাড়তি নজর দিতে হচ্ছে রাজ্য প্রশাসন ও গোয়েন্দাদের। কেননা সেখানে জন্ম হয়েছে একটি নতুন জঙ্গি সংগঠনের। কামতাপুর লিবারেশন আর্মি বা KLO ভেঙেই এই নয় জঙ্গি সংগঠনটি তৈরি হয়েছে। নাম দেওয়া হয়েছে KLO(KN)। জীবন সিংয়ের(Jiban Singha) নেতৃত্ব থেকে বেরিয়ে গিয়ে নতুন সংগঠনটি তৈরি করেছে কয়েকজন কেএলও জঙ্গি। যাদের নেতৃত্বে রয়েছে ডি এল কোচ(D L Coach)। মূলত উত্তরবঙ্গকে অশান্ত করতেই এই নয়া জঙ্গি সংগঠনের জন্ম হয়েছে বলে রাজ্যের গোয়েন্দা বাহিনীর আধিকারিকেরা জানতে পেরেছেন। তাদের আশঙ্কা, উত্তরবঙ্গ ও অসমে হুমকি, তোলাবাজি ও নাশকতা চালাতে পারে এই সংগঠন। তাই এই নতুন জঙ্গি সংগঠনটির গতিবিধির ওপর কড়া নজরদারি চালাচ্ছেন গোয়েন্দারা।
আরও পড়ুন বিরোধিতার সুর না বদলালে বাংলায় ৪২ আসনেই লড়বে তৃণমূল
জীবন নিয়ন্ত্রিত KLO’র মধ্যে কোন্দল অনেকদিনের। বিশেষ করে জীবন শান্তি আলোচনার আবেদন করতেই সেই দ্বন্দ্ব বাড়ে বলেই খবর। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময় গোপন ডেরা থেকে শান্তি আলোচনার জন্য বার্তা দেন KLO চিফ জীবন। এনিয়েই তার সঙ্গে KLO’র সহকারী প্রচার সচিব ডি এল কোচের বিরোধ বাঁধে। তার নেতৃত্বেই বেশ কয়েকজন KLO ছেড়ে বেরিয়ে আসে। তারা কামতাপুর লিবারেশন অর্গানাইজেশন (কোচ ন্যাশনালিস্ট) বা KLO(KN) নামে নতুন এই জঙ্গি সংগঠন তৈরি করে। রাজ্যের গোয়েন্দা আধিকারিকদের ধারনা, জীবনের কায়দায় হুমকি, তোলাবাজি ও নাশকতা চালানোই এই সংগঠনের প্রধান লক্ষ্য। আর তাই এই নয়া জঙ্গি সংগঠনকে নিয়ে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন থানাকে সতর্ক করা হয়েছে। এছাড়া, বিভিন্ন রেল স্টেশন, বাসস্ট্যান্ড, বাজার সহ জনবহুল এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
আরও পড়ুন ‘মোদি বিশ্বাস করেন যে তাঁকে পালটে দিতে পারে একমাত্র বাংলার বাঘিনী’: ফিরহাদ
এই নয় জঙ্গি সংগঠন অসম ও উত্তরবঙ্গে জাল বিস্তারের চেষ্টা করছে বলে জানা গিয়েছে। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, এপ্রিল মাসে অসমের কোকরাঝাড় জেলার চক্রশিলা অভয়ারণ্যে পাহাড়ের ওপর ডেরা বাঁধে কেএলও(কেএন)-এর একটি দল। তাতে আটজন ছিল। মূলত অর্থ সংগ্রহই ছিল দলটির উদ্দেশ্য। পরবর্তীতে অসম পুলিশের বিশেষ বাহিনী অভিযানে দুই কেএলও(কেএন) সদস্যর মৃত্যু হয়। সংশ্লিষ্ট সংগঠনে অসমের কিছু যুবক যোগ দিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু, উত্তরবঙ্গের কেউ সংগঠনটিতে শামিল হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা। গোয়েন্দাদের চিন্তার অপর একটি কারণও আছে। KLO(KN)’র বর্তমান মাথা ডি এল কোচ অসমের কোকরাঝাড়ের লোক হলেও সে বোমা আর গ্রেনেড বানাতে পারদর্শী। বাংলাদেশের চট্টগ্রামের পার্বত্য উপত্যকায় তার যাতায়াত রয়েছে। সেই সঙ্গে তাঁর সঙ্গে ত্রিপুরার নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠন ন্যাশেনাল লিবারেশন ফ্রন্ট অব ত্রিপুরার নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে। তাঁদের সমর্থনে উত্তরবঙ্গে বড়সড় নাশকতা ঘটিয়ে সে বাংলাদেশের নিশ্চিন্তে গা ঢাকা দিতে পারবে।