নিজস্ব প্রতিনিধি: উত্তরবঙ্গের(North Bengal) বালুরঘাট লোকসভা(Balurghat Constituency) কেন্দ্রে এবার তৃণমূল প্রার্থী করেছে রাজ্যের মন্ত্রী বিপ্লব মিত্রকে। এদিন অর্থাৎ রবিবার দুপুরে তাঁর সমর্থনেই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় ২টি জনসভা করেন তৃণমূল(TMC) সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। এর মধ্যে প্রথম সভাটি হয় কুমারগঞ্জে। দ্বিতীয় সভাটি তিনি করেন বালুরঘাটে। এর মধ্যে প্রথম সভা থেকে তিনি নিশানা বানান দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে(Narendra Modi)। প্রধানমন্ত্রীকে লক্ষ্য করে তিনি বলেন, ‘বিজেপির কিছু গদ্দার বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী করেছে? আমি একটা কথা বলতে চাই, এটা কি বাংলার নির্বাচন যে আমার কাছে কৈফিয়ত চাওয়া হচ্ছে? এটা দিল্লির নির্বাচন। তাই কৈফিয়তও মোদিকেই দিতে হবে। যখন পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন আসবে তখন হাজার বার কৈফিয়ত দেব। কিন্তু এটা কেন্দ্রের ভোট। তাই জবাব মোদিবাবুকেই দিতে হবে। একটা কাজ করেছ? কী করেছ? আবাস যোজনা, ১০০ দিনের কাজের টাকা বন্ধ করেছ। সারা দেশ বিক্রি করেছ। ইতিহাস, ভুগোল বিক্রি করেছ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার কী করেছে, তা বলতে শুরু করে তবে দিনরাত একাকার হয়ে যাবে। একটা রামায়ণ, একটা মহাভারত, একটা কোরান, একটা বাইবেলে কুলাবে না।’
এর পাশাপাশি মমতা বলেন, ‘কালো টাকা কোথায় গেল? সকলকে ১৫ লক্ষ টাকা দেবে বলেছিল। কেউ টাকা পেয়েছেন? বছরে ২ কোটি চাকরি দেবে বলেছিল। কয়জনকে দিয়েছে? জবাব চাই জবাব দাও। জবাব তোমায় দিতেই হবে মোদিবাবু। নয়তো দেশের লোক তোমায় ছাড়বে না। কোভিডের ইনজেকশন দিল। তাতেও প্রধানমন্ত্রীর ছবি। দূরদর্শন দেখেছেন? রং বদলে গেল। মন কি বাত, তিনি নিজেই বলেন। নিজেই শোনেন। কাউকে বলতে দেন না। আজ পর্যন্ত সাংবাদিক বৈঠক করতে দেখিনি ওকে। নিজেরাই সাজিয়ে গুছিয়ে সমাজমাধ্যমে বসিয়ে দেয়। দূরদর্শনের রং গেরুয়া হচ্ছে কী ভাবে? রেল স্টেশনের রং কী ভাবে হচ্ছে? আমাদের গর্ব সেনাবাহিনীর বাড়ির রং গেরুয়া হচ্ছে। যারা সাধু হচ্ছেন, তাঁদের অপমান নয়? কাশিতে পুলিশকেও গেরুয়া পরিয়েছেন। কবে বলবে দেখবেন, সকালে গেরুয়া শরবত খেতে হবে। কে কী পরবেন, রং পছন্দ করবেন নিজের বিষয়। বলে আমরা আবাস করতে দিইনি। ৪২ লক্ষ আবাস করেছি। সত্যি হলে কান মুলে ক্ষমা চাইবেন। সত্যি না হলে মিথ্যে বলবেন। সব পঞ্চায়েত আমাদের নয়। তা সত্ত্বেও সব দেখে ৪২ লক্ষ বাড়ি আগে করেছি, আরও ১১ লক্ষ বাড়ি করব। কেন্দ্র এই টাকা একা দেয় না। মাছের তেলে মাছ ভাজে। বলে আমরা টাকা খেয়েছি। ৪২ লক্ষ বাড়ি ওরা একা করেছে।’
মমতার নিশানা থেকে এদিন বাদ যায়নি বিজেপিও। তিনি বলেন, ‘দেশের সব থেকে বড় ডাকাত বিজেপি(BJP)। ভুলেও এনআরসির আবেদন করবেন না। করলেই বিদেশি করে দেবে। সকলকে আমিষ খেতে হবে এমন নয়। দুধ, মাখন, ছানা, সয়াবিন, বার্লি যা-ই খান, কেউ বারণ করেনি। ভেজে খরচ বেশি। ননভেজে মায়েরা মাছের ঝোল-ভাত করলেই কাজ শেষ। তাই ৮০ শতাংশ ভারতে আমিষ খায়। যাঁরা আমিষ খায়, খেতে দিন। তোমরা কে হস্তক্ষেপ করার? বিজেপির অনেক টাকা আছে, তা-ই মিথ্যে কথা বলে রোজ কোটি কোটি টাকার বিজ্ঞাপন দিচ্ছে। অথচ ১০০ দিনের কাজের টাকা নেই। তিন বছর টাকা দিল না গরিব লোকগুলোর। এই যে বোমা ফাটানোর কথা বলছে, আমিও টার্গেট অভিষেকও টার্গেট। এরা আমাদের জীবন পর্যন্ত নিয়ে নিতে পারে, এত ডেঞ্জারাস এরা। মনে রাখবেন, নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা কখনও ভাবি না। আমার মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবি। এইসব চালাকি, নানারকম চক্রান্ত, যেমন পুলওয়ামায় করেছিল। এগুলো হচ্ছে চক্রান্ত, এই চক্রান্ত ভেঙে দেবই আমরা। বিজেপিকে ভাঙুন, নাহলে ওরা দেশ ভেঙে দেবে।’