নিজস্ব প্রতিনিধি: স্বামীর পণের দাবি মেটাতে পারেননি বলে বিয়ের পাঁচ বছর পর গৃহবধূকে কুপিয়ে ও পুড়িয়ে খুনের চেষ্টার অভিযোগ। বুধবার রাতে এই ভয়ঙ্কর ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ক্যানিংয়ের(Canning) গোপালপুর এলাকায়। অভিযুক্ত স্বামী ও শাশুড়ি পলাতক। অত্যন্ত আশঙ্কাজনক অবস্থায় ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ওই বধূ।
বিয়ে হয়েছিল পাঁচ বছর আগে। দুই সন্তানও রয়েছে। এর পরও পণের জন্য চাপ দিতে থাকে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন। সেই পণের টাকা না মেটাতে পারায় মহিলাকে কুপিয়ে ও পরে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে খুন করার চেষ্টা করল স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এমন ভয়ঙ্কর অভিযোগ উঠেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ক্যানিংয়ে। পাঁচ বছর আগে ক্যানিংয়ের দাঁড়িয়া গ্রামপঞ্চায়েতের রোনিয়া এলাকার বাসিন্দা হালিমা শেখের সঙ্গে বিয়ে হয় শাহজামালের। পেশায় অটোচালক শাহজামালের বাড়ি গোপালপুর পঞ্চায়েত এলাকার ধর্মতলায়।
বিয়ের পর থেকেই সংসারে অশান্তি লেগেই থাকত। হালিমার ওপর স্বামী অত্যাচার করত বলে অভিযোগ। হালিমার পরিবারের দাবি, শাহজামাল বাপেরবাড়ি থেকে টাকাপয়সা, নানা দামি দামি সামগ্রী নিয়ে আসার জন্য চাপ দিত। ক্রমাগত মারধর করত। বিয়ের বছর পেরতে না পেরতেই পুত্রসন্তানের জন্ম দেন হালিমা। তার কয়েক বছর পর আরও একটি সন্তানের মা হন তিনি। তবুও থামত না অত্যাচার। মাঝেমধ্যেই অত্যাচার থেকে বাঁচতে বাপেরবাড়িতে চলে যেতেন হালিমা। শাহজামাল ফের তাঁকে বুঝিয়ে বাড়িতে ফেরত নিয়ে যেতেন। ইদানীং হালিমাকে তাঁর বাপের বাড়িতেও যেতে দিত না শাহজামাল। হালিমার বাপের বাড়ি সূত্রে দাবি, মেয়ে অসুস্থ শুনে বুধবার তাঁরা হালিমাকে দেখতে আসেন। এসে দেখেন হালিমার শরীরের অর্ধেক অংশ পুড়ে গিয়েছে। তাঁকে যখন উদ্ধার করা হয় সেই সময় শরীর ভেজা অবস্থায় ছিল। ক্ষতচিহ্ন ছিল মাথায় এবং গায়ে। অভিযোগ, প্রথমে ধারাল অস্ত্র দিয়ে হালিমাকে আক্রমণ করা হয়। এর পর শরীরে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পর যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে কাছাকাছি একটি পুকুরে ঝাঁপ দেন তিনি। অভিযোগ এর পর সেই পুকুরেই তাঁকে ডুবিয়ে মারার চেষ্টা করেন স্বামী এবং শাশুড়ি। এরপর স্থানীয়রা হালিমাকে উদ্ধার করে বাপেরবাড়িতে খবর দেয়। হালিমাকে তড়িঘড়ি নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। অত্যন্ত আশঙ্কাজনক অবস্থায় ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। আধপোড়া শরীরে ওই গৃহবধূ জানান, স্বামীকে ভালবাসি। সংসার করতে চেয়েছিলাম। দুই সন্তানের মুখ চেয়ে অত্যাচার সহ্য করেও মুখ বুজে ছিলেন। অভিযুক্ত স্বামী ও শাশুড়ি পলাতক। তাদের খোঁজে চলছে তল্লাশি