নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্য সরকার আত্মসমর্পণকারী প্রাক্তন মাওবাদীদের(Maoist) রাজ্য পুলিশে হোমগার্ডের চাকরি দিচ্ছে। সেই সঙ্গে হাতির হামলায় মৃত পরিবারদের একজনকেও রাজ্য পুলিশে চাকরি প্রদান করা হচ্ছে রাজ্যের তরফে। মাওবাদীদের দাবি, রাজ্য পুলিশের স্পেশাল হোমগার্ড পদে যাদের চাকরি দেওয়া হচ্ছে তারা আদতে ‘ক্রিমিন্যাল’। সেই চাকরি প্রদানের প্রতিবাদেই শুক্রবার ১২ ঘন্টার বাংলা বন্ধের(Bandh) ডাক দিয়েছে মাওবাদীরা। আর সেই বন্ধে এদিন কিছুটা হলেও ধাক্কা খেল জঙ্গলমহলের(Junglemahal) জনজীবন। পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম জেলার আদিবাসী অধ্যুষিত ব্লকগুলিতে এদিন বন্ধের রীতিমত প্রভাব পড়েছে। তবে তার বাইরে বন্ধের সেভাবে কোনও প্রভাব পড়তে দেখা যাচ্ছে না।
পুরুলিয়া(Purulia) জেলার মানবাজার মহকুমা এলাকা, বাঁকুড়া(Bankura) জেলার রায়পুর, রানীবাঁধ, হীরাবাঁধ, খাতড়া, সারেঙ্গা, সিমলাপাল, তালড্যাঙরা ব্লকে এবং ঝাড়গ্রাম(Jhargram) জেলার বিনপুর-১, বিনপুর-২, জামবনি, ঝাড়গ্রাম, সাঁকরাইল ব্লকে জনজীবন রীতিমত স্তব্ধ হয়েছে। ওই সমস্ত এলাকায় বন্ধ রয়েছে সমস্ত রকমের বেসরকারি বাস ও গণপরিবহণ। বন্ধ রয়েছে সব দোকানবাজার, হাট, স্কুল। হাতেগোনা কিছু সরকারি বাস যেমন চলছে তেমনি সরকারি অফিসও খোলা রয়েছে। যদিও উপস্থিতির হার কম বললেই চলে। তবে এর বাইরের এলাকাগুলিতে বন্ধের কোনও রকম প্রভাব পড়েনি। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে বৃহস্পতিবার বাঁকুড়া জেলার বারিকুল থানার মেলাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের কেন্দতল মোড় এলাকায় উদ্ধার হওয়া মাওবাদী পোস্টারে বন্ধ পালন না করলে ‘মৃত্যুদন্ড’ দেওয়া হবে বলে যে হুমকি দেওয়া হয়েছিল তার জেরেই আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে আমজনতা ভয়ে নিজেদের ঘরবন্দী রেখেছেন। যদিও এদিন সকাল থেকেই ওই সব এলাকায় পুলিশি টহলের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহলদারিও চলছে।
মানুষকে আরও বেশি করে আতঙ্কিত করে তুলেছে গতকাল বেলপাহাড়িতে ল্যান্ডমাইন উদ্ধারের ঘটনাটি। গতকাল বেলপাহাড়িতে সিআরপিএফ বাহিনীর ১৮৪ নম্বর ব্যাটালিয়নের ক্যাম্পের কাছেই একটি ল্যান্ডমাইন উদ্ধার হয়। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে দিন-দুই আগেই ওই ল্যান্ডমাইন পোঁতা হয়েছিল। কে বা কারা সেই ল্যান্ডমাইন পুঁতে গিয়েছে তা এখনও জানতে পারেনি পুলিশ। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, পুলিশ জোর গলায় যতই দাবি করুক না কেন যে জঙ্গলমহলে মাওবাদীদের কোনও গতিবিধি নেই, বাস্তব কিন্তু তা নয়। পোস্টার দেওয়া, বন্ধের ডাক দেওয়া, ল্যান্ডমাইন পুঁতে যাওয়ার ঘটনা কিন্তু বলে দিচ্ছে শাল, সেগুন, মহুয়া, অর্জুনের বনে মাও অনুপ্রবেশ আবারও শুরু হয়ে গিয়েছে। পুলিশেরও কিছু আধিকারিক মনে করছেন, জঙ্গলমহলে ঘাঁটি গেঁড়ে কাজ শুরু না করলেও ঝাড়খণ্ড থেকে নিয়মিত মাওবাদীদের অনুপ্রবেশ ঘটছে জঙ্গলমহলের নানা এলাকায়।