নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্যে অ্যাম্বুলেন্স চালকের(Ambulance Driver) অনুমোদিত পদ(Post) ১৪০০টি। কিন্তু বাস্তব বলছে কার্যত তার অর্ধেকের অর্ধেকও নেই চালক। স্বাস্থ্য দফতর(Health Department) সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যে এখন স্থায়ী(Permanent) অ্যাম্বুলেন্স চালকের সংখ্যা নাকি মাত্র ৩০০। এর বাইরে আছেন অস্থায়ী(Part Time) চালক হিসাবে আছেন ৩৫০জন। কার্যত এই ৬৫০জনকেই এখন ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ডিউটি দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সেই কাজের চাপ অনেকেই নিতে পারছেন না। তার জেরে স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্স চালকদের মন কষাকষিও হয়। আর তখনই ‘বাবা’, ‘বাছা’ বলে গায়ে মাথায় হাত বুলিয়ে তাঁদের কাজ করতে বলার জন্য কার্যত করজোড়ে অনুরোধ করেন স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরা। আর এই হিসাবেই দেখা যাচ্ছে রাজ্যজুড়ে ৭৫০টি স্থায়ী অ্যাম্বুলেন্স চালকের পদ কার্যত ফাঁকাই পড়ে আছে। স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের দাবি, অ্যাম্বুলেন্স চালকদের শূন্যপদ পূরণ তো হয়নিই, উল্টে দিন দিন বেড়েই চলেছে।
সূত্রে জানা গিয়েছে, এখন অস্থায়ী ভাবে যে ৩৫০জন অ্যাম্বুলেন্স চালক রয়েছেন তাঁরা সকলেই চুক্তিভিত্তিক। এই পরিস্থিতিতে জরুরিভিত্তিতে ৩০০ জন স্থায়ী চালক নিয়োগের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল ওয়েস্ট বেঙ্গল হেলথ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডে বা ডব্লুবিএইচআরবি-তে। কিন্তু সেই প্রস্তাব মেনে নিয়োগ আজও হয়নি। স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম জানিয়েছেন, কীভাবে সমস্যা মেটানো যায় সেটা দেখা হচ্ছে। ৩ জুনের মধ্যে চিকিৎসক ও নার্স নিয়োগের তথ্য যাচাই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। এবার আমরা অ্যাম্বুলেন্স চালক সহ বেশ কিছু পদে নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করব। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এখন রাজ্যের অধীনে প্রায় ৯০০টি অ্যাম্বুলেন্স ও বিভিন্ন ধরনের গাড়ি রয়েছে। তার মধ্যে ভ্যাকসিন ভ্যান, ব্লাড ডোনেশন ভ্যান, মুখ্যমন্ত্রী সহ বিভিন্ন ভিভিআইপিদের সঙ্গে থাকা কার্ডিয়াক অ্যাম্বুলেন্সও রয়েছে। টিকাকরণ নেটওয়ার্ক বজায় রাখা, রক্তদান শিবিরগুলিতে সেগুলিকে পাঠানো হয়। পাশাপাশি পিজি, আরজিকর সহ বিভিন্ন বড় মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে রোগী ও চিকিৎসকদের নিয়ে যাওয়া, ফেরত আনাও হয়। এই সবই করতে হয় অ্যাম্বুলেন্স চালকদের।
রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে পরিষেবা দেওয়ার পাশাপাশি এই চালকরাই স্বাস্থ্যভবন ও জেলায় জেলায় স্বাস্থ্যদফতরের কর্মী তথা আধিকারিকদের পিক আপ ও ড্রপ দেন। স্বাস্থ্য যেহেতু জরুরি পরিষেবার আওতায় পড়ে তাই যে কোনও আপৎকালীন পরিস্থিতি, বিপর্যয়ে এই নেটওয়ার্ক চালু রাখতে হয়। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, প্রতি মাসেই কোনও না কোনও চালক অবসর নিচ্ছেন। অসুস্থ হওয়া, মৃত্যুর ঘটনাও রয়েছে। কিন্তু সেইসব শূন্যপদ আর পূরণ হচ্ছে না। আর তার জেরেই প্রকট হচ্ছে সমস্যা। দেখার বিষয় চলতি মাসে বা জুলাই মাসে এই সমস্যার সমাধান হয় কিনা।