এই মুহূর্তে

সিবিআইয়ের নজরে এবার পরেশকন্যার নিয়োগ পদ্ধতি

নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলাজুড়ে এখন খালি টাকা, টাকা আর টাকা। বলতে পারেন টাকা মাটি আর মাটি টাকা। একা কেন অর্পিতা, খোঁজ লাগালে মিলবে অনেক অপু, অপা, অনামিকা, মৌমিতা, কুশমিতা মায় দেবলীনাও। একা বৈশাখীই বা কেন, কতই তো ছিল ‘তেনার’ ঘনিষ্ঠমহলে। যাক সে কথা। যে তথ্যটা দেওয়ার জন্য এ লেখার অবতারণা। মন্ত্রীকন্যার চাকরি আগেই চলে গিয়েছে। তার জায়গায় আদালতের নির্দেশে ববিতা কাজে যোগও দিয়েছে। কিন্তু চ্যাপ্টার পুরো ক্লোজড হয়ে যায়নি। কেন্দ্রের গোয়েন্দারা এখনও দাঁত কামড়ে পড়ে আছে মন্ত্রীকন্যার পিছনে। মানে রাজ্যের মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর(Paresh Chandra Adhikari) মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর(Ankita Adhikari) ঘটনার তদন্ত নিয়ে। তাঁরা এখন এটাই দেখতে চাইছেন ওই ঘটনায় আরও কে কে জড়িত ছিল। কেননা কোচবিহারের মেখলিগঞ্জের ইন্দিরা গার্লস হাইস্কুলে অঙ্কিতা যে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষিকা পদে যোগ দিয়েছিলেন, সেই পদ সৃষ্টির পিছনে কাদের কাদের হাত ছিল, কাদের কাদের মাথা ছিল, কাদের কাদের কী কী নির্দেশ ছিল এসবই এখন খুঁজে দেখতে শুরু করে দিয়েছেন সিবিআই আধিকারিকেরা।

রাজ্যে স্কুল সার্ভিস কমিশনের(SSC) মাধ্যমে সরকারি ও সরকার পোষিত স্কুলগুলিতে শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়েগের ঘটনায় যে পাহাড়প্রমাণ দুর্নীতি ঘটেছে তা নিয়ে এখন আর সন্দেহ নেই বঙ্গবাসীর। আর সেই দুর্নীতির শিকড় খুঁজতে কলকাতা হাইকোর্টের(Calcutta High Court) নির্দেশে ঘটনার তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই(CBI)। আর সেই সূত্রেই তাঁরা ইতিমধ্যেই রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ফেলেছে একদফা। যদিও এখনও পর্যন্ত তিনি সরাসরি কোনও দুর্নীতির ঘটনায় জড়িত তেমন কোনও তথ্য যেমন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের হাতে আসেনি, তেমনি পরেশ তদন্তে সহযোগিতা করছেন না এমন তথ্যও সিবিআই জনসন্মুখে তুলে ধরেনি। কিন্তু তাঁর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর নিয়োগ পদ্ধতি নিয়ে এখনও তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে সিবিআই। কেননা তাঁদের কাছে প্রমাণ্য নথি রয়েছে। যে নথি বলে দিচ্ছে, অঙ্কিতা যে স্কুলে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষিকা পদে যোগ দিয়েছিল সেই পদের অনুমোদনই ছিল না।

নিয়মানুসারে, কোনও স্কুলে স্থায়ী পদে শিক্ষক নিয়োগ করতে হলে তা রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতরের অনুমোদন সাপেক্ষে করতে হয়। অনুমোদন না পেলে বা না থাকলে সেই বিষয়ে পড়ানোর জন্য অস্থায়ী পদে শিক্ষক নিয়োগ করে সংশ্লীষ্ট স্কুল কর্তৃপক্ষ। যদিও সেখানেও অনুমোদন লাগে। কিন্তু ঘটনার তদন্তে নেমে সিবিআই আধিকারিকেরা জানতে পেরেছেন, অঙ্কিতা যে স্কুলে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের স্থায়ী শিক্ষিকা হিসাবে যোগ দিয়েছিল সেই ইন্দিরা গার্লস হাইস্কুলে ওই বিষয়ে স্থায়ী শিক্ষিকার পদে অনুমোদন ছিল না। আর এখানেই উঠছে প্রশ্ন। যে পদের কোনও অনুমোদনই নেই, সেই পদে কীভাবে অঙ্কিতার নিয়োগ হল? আর এই প্রশ্নে আটকে গিয়েছে অঙ্কিতার জায়গায় চাকরি পাওয়া ববিতার বকেয়া টাকাও। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে অঙ্কিতার চাকরি গিয়েছিল এবং সেই চাকরি আদালতই ববিতার হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। সেই সঙ্গে আদালতের নির্দেশ ছিল অঙ্কিতার পাওয়া ৪১ মাসের বেতন সহ সব সুযোগসুবিধা ববিতাকে দিতে হবে। অঙ্কিতা আদালতের নির্দেশ মেনে ৪১ মাসের বেতন আদালতে জমা করলেও ববিতা এখনও সে টাকা পায়নি। আর তার জেরে সে আবারও কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে যে পদের কোনও অনুমোদনই নেই, সেই পদের বেতন কী অন্য কেউ পেতে পারে? আগামী দিনে আদালত সেই বিষয়ে কী রায় দেয় সেদিকেই সবাই তাকিয়ে থাকবেন।

কিন্তু সিবিআই আধিকারিকেরা এই ঘটনার শিকড়ে যেতে চাইছেন। তাঁরা জানতে পেরেছেন, অঙ্কিতাকে এসএসসি যে সব স্কুলে যোগ দেওয়ার তালিকা দিয়েছিল, তার কোনওটিতেই তিনি যোগ দেননি। তিনি নিয়ম ভেঙে তাঁর বাড়ির কাছে ইন্দিরা গার্লস হাইস্কুলে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষিকা হিসেবে যোগ দেন। কেন এই ঘটনা ঘটল সে দেখতে গিয়েই এখন সিবিআই আধিকারিকেরা চাইছেন ওই ঘটনায় আরও কে কে জড়িত ছিল সেটা খুঁজে বার করতে। এই জন্য তাঁরা ২০১৬ সালের স্টেট লেভেল সিলেকশন টেস্টের মাধ্যমে কোচবিহারের ইন্দিরা গার্লস হাইস্কুলে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও অন্যান্য বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগে পদ-সৃষ্টি সংক্রান্ত সব ফাইল-নোটশিট অবিলম্বে পাঠাতে বলেছেন বিকাশ ভবনকে। কী ভাবে প্রশাসনিক নিয়ম ভেঙে যথাযথ সরকারি অনুমোদন ছাড়াই মন্ত্রিকন্যার জন্যে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে শিক্ষিকার ‘পদ’ সৃষ্টি করা হয়েছিল, কার নির্দেশে সেটা হয়েছিল, তাতে আর কে কে সহায়তা করেছিল, আর কে কে জড়িত ছিল সেটাই এবার খুঁজে বার করতে চাইছেন তাঁরা।

নবান্ন সূত্রে এটাও জানা গিয়েছে, শুধু ইন্দিরা গার্লস হাইস্কুলের ঘটনার ক্ষেত্রেই নয়, রাজ্যের অন্যান্য স্কুলেও স্কুল সার্ভিস কমিশনকে অন্ধকারে রেখে কোথায় কী পদ সৃষ্টি করা হয়েছিল, সেই তথ্য-পরিসংখ্যানও নথি-সহ বিকাশভবনকে জানাতে বলেছে সিবিআই। এর পাশাপাশি এসএসসি’র ওয়েবসাইটে ২০১৬ সালের স্টেট লেভেল সিলেকশন টেস্টে আদতে অনুমোদিত পদ কোথায়-কত বলা হয়েছিল, সেই তথ্যও চাওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে রাজ্যের আরও অন্তত হাজার দেড়েক স্কুল শিক্ষক বা শিক্ষিকার চাকরি নিয়ে টানাপোড়েন শুরু হয়ে গেল।

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

সোমবার পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির ঘরে পৌঁছে যাবে

সুকান্তের জেলায় ভোট প্রশিক্ষণে গরহাজির ৭০০ কর্মীকে শোকজ

১৪ বছর আগে শিলান্যাস, আজও বাস্তবায়িত হয়নি আমতা-বাগনান রেলপ্রকল্প

সন্দেশখালিতে ফের রাজনৈতিক পতাকা লাগানোকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ,সংঘর্ষ

হার নিশ্চিত দেখেই দিল্লিতে ছুট বিজেপি প্রার্থী বিস্তার

ইডি-সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে কমিশনের কাছে নালিশ তৃণমূলের

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর