নিজস্ব প্রতিনিধি: সোশাল মিডিয়ায় সোনার ঠাকুরের মূর্তি বিক্রির প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা। এই প্রতারণা চক্রের হদিশ মিলল কুলতুলিতে। একেবারে ফিল্মি কায়দায় আগ্নেয়াস্ত্র সহ গ্রেফতার এই চক্রের মূল পান্ডা। ঘটনাস্থলে পালিয়ে যায় তাঁর সাগরেদরা। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, সুন্দরবন অঞ্চলের বাসিন্দারা মাছ ধরতে এসে মাঝেমধ্যেই বাঘের হামলার মুখে পড়ত। সেই হামলা থেকে বাঁচতে তাঁরা ঠাকুরকে প্রতিনিয়ত স্মরণ করেন। তাঁদের সেই বিশ্বাসকে হাতিয়ার বানিয়ে সোশাল মিডিয়ায় মাধ্যমে সম্পর্ক তৈরি করে তাদের সোনার ঠাকুর বিক্রি করার প্রলোভন দেখানো হত। তাঁদের বিশ্বাস অর্জন করার জন্য সোনার ঠাকুরের হাত তাদেরকে দেওয়া হত। সেই হাত কোনও সোনার দোকানে গিয়ে দেখিয়ে পরীক্ষা করালে, তাঁদের আরও বিশ্বাস জন্মাতো। সেই সুযোগ নিয়েই মোটা টাকায় সোনার ঠাকুর বিক্রির প্রলোভন দেওয়া হত। বিশ্বাস জন্মে যাওয়ার পর নিজের সর্বস্ব দিয়ে অনেকেই এই ঠাকুর কিনতে রাজিও হতেন। যখন তাঁরা প্রতিমা নেওয়ার জন্য হাজির হতেন তখন তাঁদের সর্বস্ব লুঠ করে পালিয়ে যেত দুষ্কৃতিরা।
পুলিশ সুত্রে জানা গিয়েছে, ২০২১ সালের আগে এই ধরণের প্রতারণা চক্রের বাড়বাড়ন্ত দেখা দিয়েছিল এই এলাকায়। এই প্রতারণা চক্র কিছুদিন বন্ধ থাকলেও সম্প্রতি ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। অনেকেই প্রতারিত হচ্ছেন। এই বিষয়ে কুলতুলি থানায় একাধিক অভিযোগও দায়ের হয়েছে। এই প্রতারণা চক্রকে ধরতে কুলতুলি থানার আইসি অর্ধেন্দু শেখর দে সরকার একটি নাটকের ফাঁদ তৈরি করেন। একেবারে ফিল্মি কায়দায় কাস্টমার সেজে ঠাকুর কেনার প্রস্তাব দেওয়া হয়। সেই প্রস্তাব অনুযায়ী বুধবার দুপুরে জামতলা মোড়ে দেখা করার সময় স্থির হয়। আগে থেকেই সিভিল পোশাকে মোতায়েন ছিল পুলিশ। হঠাৎ করেই জায়গা পরিবর্তন করা হয়। জালাবেড়িয়া মোড়ে দেখা করার কথা বলা হয়। গ্রাহক জালাবেড়িয়া বাজারে পৌঁছলেই পুলিশও পৌঁছে যায়। বিষয়টি বুঝতে পেরে পালানোর ছক করে দুষ্কৃতিরা।
বাইকে ধাওয়া করে কুলতুলি থানার ইনচার্জ এক অভিযুক্তকে ধরে ফেলে। তার নাম তালিমুল। এই চক্রের মূল পান্ডা বলে জানা গিয়েছে। তার কাছ থেকে একটি ওয়ান সাটার, লাইভ কার্তুজ, একটি বাইক ও দুটি মোবাইল বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। ধৃতকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বারুইপুর আদালতে আবেদন জানাবে পুলিশ। এলাকায় এই প্রতারণা চক্র ফের সক্রিয় হওয়ায় পুলিশকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন কুলতুলির বিধায়ক গণেশ চন্দ্র মন্ডল।