এই মুহূর্তে




‘শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে লড়ব’, এসআইআর আতঙ্কে পর পর আত্মহত্যা নিয়ে গর্জে উঠলেন মমতা

নিজস্ব প্রতিনিধি: নির্বাচন কমিশনের ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধনী (এসআইআর) প্রক্রিয়া শুরুর পরেই রাজ্যে শুরু হয়েছে মৃত্যুমিছিলের সারি। ভিটে মাটি ছেড়ে উদ্বাস্তু হওয়ার আশঙ্কায় আত্মহত্যা করেছেন দুজন। একজন আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছেন। পর পর আত্মহত্যার ঘটনায় এসআইআরের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যবাসীকে অভয়বাণী দিয়ে বলেছেন ‘বিশ্বাস হারাবেন না এবং কোনও চরম পদক্ষেপ নেবেন না। আমাদের মা-মাটি-মানুষ সরকার আপনাদের সঙ্গে আছে। আমরা বাংলায় এনআরসি বাস্তবায়ন করতে দেব না। সামনের দরজা দিয়ে নয়, পিছনের দরজা দিয়েও নয়।আমরা একজন বৈধ নাগরিককেও “বহিরাগত” হিসেবে চিহ্নিত করতে দেব না। আমাদের রক্তের শেষ বিন্দু দিয়ে জনগণের অধিকার রক্ষার জন্য লড়ব। বিজেপি এবং তাদের বান্ধবদের জাতির সামাজিক কাঠামো ভেঙে ফেলার ঘৃণ্য এজেন্ডাকে পরাজিত করার জন্য লড়াই করব।’

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে সমাজমাধ্যম ‘এক্স’-এ নিজের হ্যান্ডলে এক দীর্ঘ পোস্ট করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এসআইআর আতঙ্কে রাজ্যে পর পর আত্মহত্যার ঘটনায় বিজেপিকে নিশানা করে তিনি লিখেছেন ‘বিজেপির ভয়, বিভাজন এবং ঘৃণার রাজনীতির করুণ পরিণতি আমরা প্রত্যক্ষ করছি। বিজেপির নির্দেশে নির্বাচন কমিশন বাংলায় এসআইআর ঘোষণা করার ৭২ ঘন্টার মধ্যেই একের পর এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। যা এড়ানো যেত। গত ২৭ অক্টোবর, খড়দহের পানিহাটির ৫৭ বছর বয়সী প্রদীপ কর আত্মহত্যা করেন। একটি চিরকুট রেখে যান যেখানে লেখা ছিল, “আমার মৃত্যুর জন্য এনআরসি দায়ী। পরের দিন ২৮ অক্টোবর কোচবিহারের দিনহাটার ৬৩ বছর বয়সী এক ব্যক্তি এসআইআর আতঙ্কে ও হয়রানির ভয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।আর আজ পশ্চিম মেদিনীপুরের বাসিন্দা ৯৫ বছর বয়সী ক্ষিতিশ মজুমদার যিনি তার মেয়ের সাথে বীরভূমের ইলামবাজারে বসবাস করতেন তিনি ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদের আশঙ্কায় আত্মঘাতী হয়েছেন।’

এসআইআর আতঙ্কে পর পর আত্মহত্যার ঘটনায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকেও কাঠগড়ায় তুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপির ভোট কুশলীকে নিশানা করে মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন ছুড়েছেন-‘রাজনৈতিক ফায়দা লাভের জন্য সৃষ্ট ট্র্যাজেডির জন্য কে জবাব দেবে? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কি দায়িত্ব নেবেন? বিজেপি এবং তার মিত্ররা, যাদের তত্ত্বাবধানে এই ভয়ের মনোভাব ছড়িয়ে পড়েছে, তারা কি কথা বলার সাহস পাবেন?’ এখানেই থামেননি মমতা। তীব্র ক্ষোভ উগরে দিয়ে লিখেছেন, ‘৯৫ বছর বয়সী একজন বৃদ্ধ, যিনি এই মাটির জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন, নিজেকে এই মাটির মানুষ প্রমাণ করার জন্য মৃত্যুবরণ করতে বাধ্য হয়েছেন। জাতির বিবেকের উপর এর চেয়ে গভীর ক্ষত আর কী হতে পারে? এটি কেবল ট্র্যাজেডি নয়-মানবতার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা।’

মুখ্যমন্ত্রী আরও লিখেছেন, ‘প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে, বাংলার মানুষ মর্যাদার সঙ্গে বসবাস করে আসছে। আজ তাদের জিজ্ঞাসা করতে বাধ্য করা হচ্ছে যে তারা এখনও তাদের জন্মভূমির বাসিন্দা কিনা। এই নিষ্ঠুরতা বিবেকহীন এবং কোনও মতেই মেনে নেওয়া যায় না।’

এসআইআর নিয়ে অযথা আতঙ্কিত হয়ে নিজেকে শেষ করে দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত না নেওয়ার জন্য রাজ্যবাসীর কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি লিখেছেন, ‘আমি প্রতিটি নাগরিকের কাছে আবেদন করছি, উত্তেজিত হবেন না, বিশ্বাস হারাবেন না এবং কোনও চরম পদক্ষেপ নেবেন না। আমাদের মা-মাটি-মানুষ সরকার আপনার সঙ্গে আছেন। আমরা বাংলায় এনআরসি বাস্তবায়ন করতে দেব না। সামনের দরজা দিয়ে নয়, পিছনের দরজা দিয়েও নয়। আমরা একজন বৈধ নাগরিককেও “বহিরাগত” হিসেবে চিহ্নিত করতে দেব না।কথা দিচ্ছি, শেষ রক্ত বিন্দু থাকা পর্যন্ত আমরা জনগণের অধিকার রক্ষার জন্য এবং বিজেপি এবং তাদের দোসরদের ঘৃণ্য এজেন্ডাকে পরাজিত করার জন্য লড়াই করব।’

 

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

সোনাগাছির যৌনকর্মীরা কার্তিক পুজোয় মেতে উঠলেন অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর সঙ্গে

বেআইনি ভাবে পুকুর ভরাটের অভিযোগ রেশন ডিলারের বিরুদ্ধে

হাসপাতাল থেকে উধাও হয়ে যাওয়া সদ্যোজাত শিশুকে ভাঙড় থেকে উদ্ধার করল কলকাতা পুলিশ, গ্রেফতার ২

জগদ্দলে বিজেপির মণ্ডল সভাপতির পদ পাইয়ে দিতে ৩০ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ RSS নেতার বিরুদ্ধে

অপরিচিতার কাছে শিশু পুত্রকে রেখে ওষুধ কিনতে যান মা, সদ্যোজাতকে নিয়ে উধাও যুবতী

রাজ্য ও ভিন রাজ্যের কয়েকশো বাংলাদেশি হাকিমপুর সীমান্তের পথে, আটক করল বিএসএফ

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ