নিজস্ব প্রতিনিধি: গত ২৫ জুলাই প্রয়াত হন উত্তরবঙ্গের(North Bengal) জলপাইগুড়ির(Jalpaiguri) জেলার ধুপগুড়ির(Dhupguri) বিজেপি(BJP) বিধায়ক বিষ্ণুপদ রায়। সেকারণে ওই কেন্দ্রে আগামী ৫ সেপ্টেম্বর উপনির্বাচন(Bye Election) হতে চলেছে। লোকসভা নির্বাচনের আগে এই বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন কার্যত রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস(TMC) এবং বিজেপি দুই শিবিরের কাছেই কার্যত প্রেস্ট্যিজ ফাইট হয়ে উঠেছে। কেননা এর আগে হওয়া সাগরদিঘী বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে শাসক শিবিরের পরাজয় ঘটেছিল। যদিও সেই নির্বাচনে জয়ী প্রার্থী তার কয়েক মাসের মধ্যেই তৃণমূলে যোগ দেন। তাই শাসক শিবিরের কাছে এবারের নির্বাচনে জয়ের মুখ দেখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে চলেছে। একইরকম ভাবে বিজেপির কাছে এই আসন ধরে রাখাও চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অবস্থায় ধূপগুড়িতে মহকুমা স্তরে উত্তীর্ণ করার দাবিও সামনে উঠে এসেছে।
আরও পড়ুন যাদবপুরে পড়ুয়া মৃত্যুর ঘটনায় মুখ খুললেন বিধায়ক তন্ময় ঘোষ
ধূপগুড়িকে মহকুমা করার দাবি দীর্ঘদিনের। একুশের বিধানসভা ভোটে তৃণমূল প্রার্থী মিতালী রায়ের প্রচারে এসে মহকুমা নিয়ে আশার কথা শুনিয়ে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছিলেন, ধূপগুড়িকে মহকুমা করার কাজ চলছে। কিন্তু, বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী পরাজয়ের পর মহকুমা করার কাজে কিছুটা ভাটা পড়ে যায় বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা। কিন্তু এখন উপনির্বাচনের সময় আবারও সেই বিষয়টি সামনে উঠে এসেছে। মহকুমার দাবিতে ধূপগুড়ি শহরের বিভিন্ন জায়গায় সাঁটা হচ্ছে পোস্টার। এমনকী মহকুমা নাগরিক মঞ্চের তরফে নেওয়া হয়েছে মানববন্ধন কর্মসূচিও। ভোটে জিতলে ধূপগুড়িকে মহকুমা করার দাবি পূরণ করা নিয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ধূপগুড়ির তৃণমূল প্রার্থী নির্মলচন্দ্র রায়। নির্মলবাবু বলেন, ধূপগুড়িবাসীর দাবিকে যথাযথ মর্যাদা দিয়ে আমি ঊর্ধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানাব। দীর্ঘদিন ধরেই ধূপগুড়িবাসী মহকুমা নাগরিক মঞ্চের ব্যানারে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু সেই দাবি এখনও পূরণ হয়নি। আন্দোলনকারীদের দাবি, নাগরাকাটা, বানারহাট, ধূপগুড়ি ব্লক এবং ধূপগুড়ি পুরসভা এলাকা নিয়ে নতুন মহকুমা গঠন করা হোক।
আরও পড়ুন যাদবপুরের নিরাপত্তায় প্রাক্তন সেনাকর্মীরা, উঠল প্রস্তাব
এদিকে ধূপগুড়ি ধরে রাখতে কোমর বাঁধছে বিজেপিও। এদিন তাঁরা এই উপনির্বাচনের জন্য ৪০ জন তারকা প্রচারকের তালিকা প্রকাশ করেছে বিজেপি! সেই তালিকায় দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীরা ছাড়াও আছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও দলের কেন্দ্রীয় পদাধিকারীরা। ধুপগুড়ি কেন্দ্রের প্রার্থী নির্বাচনেও রীতিমতো চমক দিয়েছে গেরুয়া শিবির। পুলওয়ামায় ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় নিহত সিআরপিএফ জওয়ান জগন্নাথ রায়ের স্ত্রী তাপসী রায়কে প্রার্থী করেছে বিজেপি। ৩২ বছরের তাপসীর একটি শিশু সন্তানও রয়েছে। শহিদ জওয়ানের পরিবারের প্রতি সহানুভূতিকে ভোটবাক্সে কার্যত কাজে লাগাতে চাইছে গেরুয়া শিবির। গত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির বিষ্ণুপদবাবু তৃণমূল প্রার্থী মিতালি রায়কে প্রায় ৪৬ হাজার ভোটে হারিয়েছিলেন। কিন্তু পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপি এই এলাকায় একেবারেই ভাল ফল করতে পারেনি। ফলে দলের ফল কেমন হবে, সেটা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে দলের অন্দরেই। সম্ভবত সেকারণেই প্রচারে সর্বস্ব দিয়ে ঝাঁপাতে চাইছে গেরুয়া শিবির। ৪০ জনের তারকা প্রচারকদের তালিকায় একদিকে যেমন সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষরা রয়েছেন। অন্যদিকে তেমনই রয়েছেন অমিত মালব্য, সুনীল বনশল, মঙ্গল পাণ্ডেদের মতো কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকরা। মিঠুন চক্রবর্তী, লকেট চট্টোপাধ্যায়দের মতো তারকা বিজেপি নেতারাও রয়েছেন প্রচারকের তালিকায়। রয়েছেন বাংলার একাধিক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও।