নিজস্ব প্রতিনিধি: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে(Jadavpur University) পড়ুয়া মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশ(Police) এখনও পর্যন্ত ৯জনকে গ্রেফতার(Arrest) করেছে। তাদের মধ্যে অন্যতম হল অরিত্র মজুমদার(Aritra Majumdar)। সেই অরিত্রের সঙ্গে বাঁকুড়া(Bankura) জেলার বিষ্ণুপুরের(Bishnupur) বিধায়ক(MLA) তন্ময় ঘোষের(Tanmoy Ghosh) একটি ছবি তুলে ধরে সিপিএমের সঙ্গে জোর প্রচার করার চেষ্টা চলছে সোশ্যাল মিডিয়াতে যে, ওই পড়ুয়ার মৃত্যুর ঘটনায় জড়িত আছে তৃণমূলও। সেই ঘটনার জেরে এবার মুখ খুলেছেন তন্ময়। উল্লেখ্য তন্ময় ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর থেকে বিজেপির প্রার্থী হিসাবে জয়ী হলেও ২০২২ সালে তিনি তৃণমূলে চলে আসেন।
আরও পড়ুন যাদবপুরের নিরাপত্তায় প্রাক্তন সেনাকর্মীরা, উঠল প্রস্তাব
এদিন সেই তন্ময় যাদবপুরের ঘটনায় জানিয়েছেন, ‘যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক পড়ুয়া মৃত্যুর ঘটনা অত্যন্ত মর্মান্তিক এবং ভয়ঙ্কর। সমস্বরে সমবেত ভাবে এর নিন্দা জানাতেই হবে। আমি নিজেও এর আগে একাধিকবার এই বিষয়ে সামাজিক মাধ্যমে লিখেছি। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাওয়া এবং বাংলা বিভাগের নিহত পড়ুয়ার পরিবারের পাশে না দাঁড়ানোর অর্থ চূড়ান্ত অমানবিক, এ কথা বলাই বাহুল্য। সেই কারণে সমস্ত শুভ বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া থেকে শিক্ষকরা মাঠে নেমে আন্দোলনরত। সেই লড়াইকে কুর্নিশ না জানিয়ে থাকার অর্থ পাপ। কিন্তু গত কয়েকদিনে আমাকে ঘিরে সামাজিক মাধ্যমে কিছু কথা অহেতুক ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে। যা নিয়ে দু একটি কথা না বললেই নয়। ৮-৯ বছর আগে একটি আন্দোলনের ছবি আমারই প্রোফাইল থেকে তুলে নিয়ে সিপিএম এবং বিজেপি আসরে নেমেছে এবং ওদের রাজনৈতিক কুৎসার অফিসিয়াল লাইন নিয়েই আমাকে কাঠগড়ায় তোলার পরিশ্রম সাধ্য কাজ জারি রেখেছে। দাবি করা হচ্ছে এই সাম্প্রতিক ঘটনায় বিতর্কে জড়ানো এক ছাত্র নেতাকে আমি নাকি শেল্টার দিয়েছি। সম্পূর্ণ মিথ্যা একটি তথ্য। ওই ছবি হোক কলরব আন্দোলনের সময়ের।’
আরও পড়ুন তৃণমূলকর্মীকে পিটিয়ে খুন স্বরূপনগরে, কাঠগড়ায় বাম-বিজেপি
এর পাশাপাশি তন্ময় লিখেছেন, ‘যখন দল মত নির্বিশেষে সব মানুষ ছাত্রছাত্রীরা আন্দোলন করেছেন। বহু প্রাক্তনী সাধারণ মানুষের মতোই আমিও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে যাই এবং ন্যায্য কারণেই যাই। সাত রংয়ের আন্দোলনে এই সিপিএম এসএফআইয়ের বহু তাবড় নেতার সঙ্গে এক মিছিলে হাঁটি। বক্তব্য রাখি। ওই উক্ত ছবিও সেটাই প্রমাণ করে। আমার পিছনে যে বিশেষ ছাত্রনেতাকে দেখিয়ে শেলটারিংয়ের অভিযোগ তোলা হচ্ছে স্পষ্ট ভাবে জানাচ্ছি তাকে আমি ব্যক্তিগতভাবে কোন সম্পর্ক বা যোগাযোগ কোনোটাই নেই। কারণ আমি একজন প্রাক্তনী। আন্দোলনের স্রোতে আরও শয়ে শয়ে প্রাক্তনীর মতো আমিও সেদিন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে পৌঁছই। আর প্রতিবাদী ভিড়ের কোনও দল হয় না, কোনও ধর্ম হয় না। কিন্তু কেন এই উদ্দেশ্য প্রণোদিত প্রচার? আসলে চুনি কোটালের খুনি সিপিএম এবং রোহিত ভেমুলার খুনি বিজেপি এই ঘটনায় তৃণমূলকে জড়াতে পারছে না। কারণ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট ভাবে পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন। পুলিশ কঠোরতম ব্যবস্থা নিয়েছে। ইতিমধ্যে ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাই ওরা খুঁজছে খুঁজছে, খুঁড়ছে খুঁড়ছে, পাগল হয়ে গেছে তবু রামরেডদের আফসোস, ইশ কোনও তৃণমূল অ্যাঙ্গেল নেই?’
আরও পড়ুন বিপজ্জনক ঘোষণার পরেও কেন ছিল ঝুঁকির বাস, প্রশ্ন পাথরিয়াঘাটায়
তন্ময় এটাও জানিয়েছেন, ‘আমি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছি গত বছরের মার্চ মাসে। আর আট বছর আগের হোক কলরব আন্দোলনের সময় আমার পরিচয় ছিল শুধু মাত্র আমি একজন প্রাক্তনী এবং সামাজিক আন্দোলনের কর্মী হিসেবেই। ফলে কষ্ট কল্পনা করে খাপ পঞ্চায়েত বসানো হয়ে গিয়েছে। সিপিএম এসব না করে বরং একটু ভাবুক না ওদের কাছে লেনিন বুঝে খগেন মূর্মু কেন হঠাৎ এখন বিজেপি আরএসএসের পা চাটছে? বিজেপি একটু ভাবুক না ইডি সিবিআই করেও কেন ওদের সংগঠনকে ধরে রাখা যাচ্ছে না? কেন দলে দলে মানুষ কেবল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপরেই আস্থা রেখে চলেছেন? আমাকে নিয়ে অহেতুক চর্চা ছেড়ে ওরা যদি এই সব নিয়ে ভাবতেন তাহলে হয়তো দুটো ভোট বেশি পেলেও পেতে পারতেন। আবার বলছি কোনও স্বপ্নকে যাদবপুর খুন হতে দেবে না। লড়াই এবং তদন্ত দুইই জারি আছে।’