নিজস্ব প্রতিনিধি: মৃত্যুর সংখ্যা এখনও বেড়ে চলেছে বকটুইয়ের(Boktui) বুকে। মূল ঘটনার প্রায় দেড় মাস বাদে আরও এক মৃত্যুর ঘটনা ফিরিয়ে আনল বীরভূম(Birbhum) জেলার রামপুরহাট(Rampurhat) থানার বকটুইয়ের ঘটনার স্মৃতি। গত ২১ মার্চ রাতে পানাগড়-মোড়গ্রাম সড়কের ধারে বকটুই মোড়ে দুষ্কৃতীদের ছোঁড়া বোমার আঘাতে খুন হন বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল উপপ্রধান ভাদু শেখ। সেই খুনের জেরে সেই ঘটনার ১ ঘন্টার মধ্যেই বকটুই গ্রামে চড়াও হয় ভাদুর অনুগামীরা। উন্মত্তের মতো তাঁরা ১০-১২টি বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। তার জেরেই পরের দিন অর্থাৎ ২২ মার্চ সকালে দমকলের আধিকারিকেরা ৮ জনের দগ্ধদেহ উদ্ধার করেন। দিন কয়েক পর রামপুরহাট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আরও এক মহিলার মৃত্যু হয়। এরপর ৪০ দিন ধরে লড়াই করার পর রবিবার ভোররাতে মারা গেলেন বকটুইয়ের ঘটনায় আহত আরও এক মহিলা। তাঁর নাম আতাহাররা বিবি(Aatahara Bibi)। এই নিয়ে বকটুইকাণ্ডে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে হল ১০।
জানা গিয়েছে, গত ২১ মার্চ বকটুইয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় আতাহারা বিবি ২৫ শতাংশ দগ্ধ শরীর নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন রামপুরহাট মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। মাঝে একবার তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়াও পেয়েছিলেন। কিন্তু পরে তাঁর আবারও অবস্থার অবনতি হয়। তার জেরে তাঁকে ফের হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। শেষে এদিন ভোর ৩টে ২০ মিনিটে মারা যান তিনি। ফলে বকটুইকাণ্ডে ১ নাবালিকা, ১পুরুষ ও ৮জন মহিলা সহ মোট ১০ জনের মৃত্যু হল। বকটুই কাণ্ড নিয়ে এখন রাজ্য রাজনীতির উথালপাথাল দশা কিছুটা হলেও থিতিয়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টের(Calcutta High Court) নির্দেশে ঘটনার তদন্তভার হাতে পেয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই(CBI)। আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত চালাচ্ছেন। এরই মাঝে সম্প্রতি এই ঘটনার জন্য পুলিশকেও দায়ী করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। দিন কয়েক আগে পুলিশ সুপারকে তীব্র ভর্ৎসনা করে তিনি বলেন, ‘কোথাও কিছু হলে প্রত্যাঘাত তো হবে। যদি ডিএসপি সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে যেতেন তাহলে এটা হত না। রামপুরহাটে অনেক ভুল হয়েছে। তার খেসারত দিতে হয়েছে সরকারকে।’
বকটুই কাণ্ডে নিহতদের পরিবারের সদস্যদের চাকরি দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের তরফে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য আর্থিক সাহায্যের কথাও ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বেআইনিভাবে আর্থিক সাহায্য এবং চাকরি দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি বিরোধীদের। তার জল গড়িয়েছে কলকাতা হাইকোর্টেও। নতুন করে তা নিয়ে মামলা দায়ের হয়েছে সেখানে। তা নিয়েও উষ্মাপ্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমি আমার থেকে চাকরি দিয়েছি। কারও থেকে না। আমাদের দেখে শেখা উচিত। ঘুষ লুকিয়ে দিলে হয়। আমরা লুকিয়ে কাউকে কিছু দিইনি।’