এই মুহূর্তে




সাগরে ফুঁসছে রিমল, ধেয়ে আসছে বাংলার পানে, বিপদ সুন্দরবনের

Courtesy - Google and Windy




নিজস্ব প্রতিনিধি: শেষ মুহুর্তে বড় বাঁক নিতে চলেছে বঙ্গোপসাগরে(Bay of Bengal) জন্ম নেওয়া ঘূর্ণিঝড় রিমল(Rimal)। ওপার বাংলা নয়, এপার বাংলাতেই হতে চলেছে তার ল্যান্ডফল(Landfall)। রবিবার দুপুর ২টো নাগাদ দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবনের(Sundarban) দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে সেই সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়(Cyclone) আছড়ে পড়তে চলেছে। ভূমি স্পর্শকালে সেই ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ থাকবে ঘন্টায় ১৩০ থেকে ১৫০কিমি। সুন্দরবনে ভূমি স্পর্শ করেই তা আরও বাঁয়ে বাঁক নিয়ে সোজাসুজি দুই ২৪ পরগনা, কলকাতা, নদিয়া হয়ে মুর্শিদাবাদের দিকে এগিয়ে যাবে। তবে এই ঝড়ের জেরে সব থেকে বড় ধাক্কার মুখে পড়তে চলেছে সুন্দরবন এবং তার আশেপাশে থাকা গ্রামীণ এলাকা। ঝড়ের প্রকোপে সব থেকে বেশি ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়বে দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, কলকাতা ও পূর্ব মেদিনীপুর। তবে এই সবের থেকেও বড় ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়বে দক্ষিণ ২৪ পরগনা। বিশেষ করে সুন্দরবন। ঝড়ের পাশাপাশি সুন্দরবন এবং দুই ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ, ক্যানিং ও বসিরহাট মহকুমার বিস্তীর্ণ অঞ্চল তীব্র জলোচ্ছ্বাসের(Tidal Wave) মুখে পড়তে পারে।

দিল্লির মৌসম ভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার দুপুর ২টা নাগাদ সুন্দরবনের দক্ষিণ পূর্ব প্রান্তে শুরু হবে সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের ল্যান্ডফল। এর জেরে প্রথম ধাক্কাটাই পড়বে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায়। যার দরুণ গ্রামীণ সুন্দরবন সব থেকে বেশি ক্ষয়ক্ষতির মুখ পড়বে। তবে এর প্রভাব কলকাতাসহ দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ অংশ জুড়েই পড়বে। প্রভাব পড়বে উপকূলবর্তী ও তার কাছাকাছি থাকা এলাকাতেও। দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় বড় ধরনের দুর্যোগ পরিস্থিতি তৈরির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে এর দরুণ। অনেক জায়গাতেই ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হবে। ঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ কোনও কোনও স্থানে ১০০ কিমি ছাড়াতে পারে। কার্যত এদিন থেকেই অর্থাৎ শনিবার থেকেই দুই ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলার উপকূলবর্তী এলাকায় জোরালো ঝড় ও বজ্রপাতসহ বৃষ্টি শুরু হয়ে যাবে। রবিবার থেকে ঝড়বৃষ্টির মাত্রা ও দুর্গত এলাকার ব্যাপ্তি আরও বাড়বে।  সোমবারও ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব থাকবে। দক্ষিণবঙ্গের অন্য এলাকায় ঝড়বৃষ্টি হবে এইসময়ে। আলিপুর আবহাওয়া দফতর ইতিমধ্যেই দুই ২৪ পরগনার ক্ষেত্রে Red Alert জারি করেছে। পাশাপাশি ওই ২ দিন হাওড়া, কলকাতা, হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর এবং নদিয়া জেলার জন্য থাকছে Orange Alert। সোমবার মুর্শিদাবাদ জেলার জন্যও Orange Alert জারি করা হয়েছে।  

বজ্রপাতসহ ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সতর্কতা যে জেলাগুলিতে আছে তার মধ্যে রয়েছে—দুই ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, পূর্ব বর্ধমান এবং পশ্চিম মেদিনীপুর। এই এব এলাকায় ৭০ থেকে ২০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি হতে পারে এই দুই দিনে। অর্থাৎ রবি ও সোমবারে। বৃষ্টির সঙ্গে থাকবে জোরালো ঝোড়ো হাওয়া। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় রবি ও সোমবার ঝোড়ো হাওয়ার সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটারে পৌঁছতে পারে। উত্তর ২৪ পরগনায় ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১১০ কিমি বেগে ঝড় বইতে পারে। কলকাতা, হাওড়া, পূর্ব মেদিনীপুর ও নদিয়া জেলায় ঝড়ো হাওয়ার সর্বোচ্চ গতিবেগ ১০০ কিমি ছুঁতে পারে। দক্ষিণবঙ্গের অন্যান্য জেলায় ঘণ্টায় ৪০ কিমি থেকে সর্বোচ্চ ৮০ কিমি গতিবেগে ঝড় বইতে পারে।   

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় বাংলায় আছড়ে পড়ার প্রেক্ষিতে রাজ্যের সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবিলায় শুক্রবারই দিল্লি থেকে National Crisis Management Committee’র একটি জরুরি বৈঠক হয়ে গিয়েছে। কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গৌবার সভাপতিত্বে আয়োজিত এই বৈঠকে নবান্ন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যোগ দেন রাজ্যের মুখ্যসচিব বি পি গোপালিকা। দুর্যোগ মোকাবিলা করে সাধারণ মানুষকে নিরাপদে রাখতে রাজ্য প্রশাসন আগাম কী কী ব্যবস্থা নিয়েছে, তা বিস্তারিতে জানান মুখ্যসচিব। জেলাগুলিতে কন্ট্রোল রুম খুলে পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। খাদ্যসামগ্রী এবং ওষুধ-সহ সমস্ত জরুরি সামগ্রী মজুতও রাখা হয়েছে। পর্যাপ্ত সংখ্যায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে আশ্রয় দেওয়ার স্থান। বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখতেও রাজ্য পদক্ষেপ করেছে। পরমার্শ দেওয়া হয়েছে ওই সময় মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে না-যাওয়ার জন্য।

ক্যাবিনেট সচিব বৈঠকে বলেন, রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার মিলে দুর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবিলায় সবরকম ব্যবস্থা নেবে। দুই তরফেই প্রধান লক্ষ্য হবে, মৃত্যু সম্পূর্ণ ভাবে রুখে দেওয়া এবং মানুষের সম্পত্তি ও পরিকাঠামোর ক্ষয়ক্ষতি যতটা সম্ভব হ্রাস করা। রাস্তার হোর্ডিংগুলি ঝড়ে উড়ে গিয়ে যাতে কোনোরকম ক্ষয়ক্ষতি না-করে তার ওপর বিশেষ নজর রাখার কথা জানিয়েছেন ক্যাবিনেট সচিব। দুর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার ও তার বিভিন্ন সংস্থা রাজ্য সরকারের পাশে আছে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ১২টি টিমকে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন জায়গায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে আরও ৫টি টিমকে। উপকূলরক্ষী বাহিনীও প্রস্তুত আছে পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব এবং আবহাওয়া দপ্তরের ডিজি-সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় এজেন্সির শীর্ষ কর্তারা এই বৈঠকে ছিলেন।




Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

রাতে স্কুলে বন্যপ্রাণীর উৎপাত, ক্লাস রুমে খাঁচা বসানো হল বনদফতরের উদ্যোগে

পাকিস্তানের জাতীয় পতাকা পুড়িয়ে বিক্ষোভ দেখালেন হিন্দু সমাজকল্যাণ সমিতির কার্যকর্তারা

বন্দুক হাতে ‘পাকিস্তানি ভাইয়া’র সঙ্গে ছবি শেয়ার করে পুলিশি নজরে নদিয়ার যুবক

গরম থেকে মুক্তি পেতে স্নান করতে গিয়ে মৃত ২, প্রায় দু’দিন পর উদ্ধার দেহ

ওয়াকফ থেকে ইস্যু ঘোরাতে কাশ্মীরে এই হামলা বিজেপি’ র পরিকল্পিত : মর্জিনা খাতুন

৩০ এপ্রিল রাজ্যে ‘হিট-স্ট্রোক ট্রিগার ইভেন্ট’ তৈরি হবে, বিশেষ সর্তকতা জারি

Advertisement




এক ঝলকে
Advertisement




জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর