নিজস্ব প্রতিনিধি: ঘটনা ২০২২ সালের মে মাসের। পুরুলিয়া জেলায়(Purulia District) প্রশাসনিক সভা করতে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। সেই সভায় ঝালদার পুরপ্রধানকে(Jhalda Municipality Chairman) দেখে বেশ চমকেই গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কেননা পুরপ্রধানের বিশাল ভুঁড়ি। সেই সভায় বেশ হালকা মেজাজে ঝালদার পুরপ্রধানের ভারী শরীর নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বড় ভুঁড়ি দেখে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ‘এত বড় মধ্যপ্রদেশ নিয়ে কাজ করেন কী করে? ব্যায়াম করেন নিয়মিত?’ ভুঁড়ি কমানোর জন্য কী কী করা উচিত সেই পরামর্শও তাঁকে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এমনকী, প্রাণায়াম কীভাবে করতে হবে সেই কথাও জানিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘কিছু তো অবশ্যই আছে। নিশ্চয়ই লিভারটা বড়! কিছু না থাকলে এত বড় মধ্যপ্রদেশ হয় কী করে! একমাস এখন সেদ্ধ ভাত খেতে হবে। আর পকোড়া খাবেন না। সন্ধ্যে ৭টার মধ্যে খাওয়া শেষ করুন। না হলে পরের দিন সকাল ১০টা পর্যন্ত কিছু খাবেন না।’ সেই ঘটনার পর থেকেই ঝালদা পুরসভার পুরপ্রধান সুরেশ আগরওয়ালকে(Suresh Agarwal) সবাই ‘পকোড়াবাবু’ বলে ডাকতে শুরু করেছে। এদিন সেই ‘পকোড়াবাবু’র হাতেই ফের উঠে গেল ঝালদা পুরসভার দায়িত্ব। তিনি এদিন নতুন করে এই পুরসভার পুরপ্রধান নির্বাচিত হয়েছেন।
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে এদিন অর্থাৎ ৩ ফেব্রুয়ারি পুরুলিয়া জেলার ঝালদা পুরসভার নয়া পুরপ্রধান বেছে নেওয়ার জন্য হজির হয়েছিলেন শহরের কাউন্সিলররা। সেই নির্বাচনী আস্থা ভোটে জয়ী হন সুরেশ। সর্বসম্মতিক্রমে সুরেশ আগওয়ালকেই চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত করেন কাউন্সিলররা। পুরপ্রধান হিসাবে ফের দায়িত্ব পাওয়ার পরে সুরেশ সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জানান, ‘কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে শনিবার আস্থা ভোট হয়েছে এবং আমিই চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি। শপথ পরে নেব।’ তবে এদিন ঝালদা পুরসভার সব কাউন্সিলর এই পুরপ্রধান নির্বাচন পর্বে হাজিরা দেননি। শহরের ১২জন কাউন্সিলরদের মধ্যে হাজির সুরেশ সহ মাত্র ৬জন। তাঁরা সবাই তৃণমূলেরই। গরহাজির ছিলেন প্রাক্তন পুরপ্রধান শীলা চট্টোপাধ্যায়ও। এদিন সুরেশকে পুরপ্রধান পদে সমর্থন করেন তৃণমূলের(TMC) ৫ কাউন্সিলর। এরা হলেন – বিপ্লব কয়াল, জবা মাছোয়াড়, সুদীপ কর্মকার, পূর্ণিমা বাগদি ও রিজওয়ানা খাতুন। সূত্রের দাবি শহরের এক নির্দল কাউন্সিলরের সমর্থনও থাকছে সুরেশের সঙ্গে। খালি দেখার বিষয় এবার যাবতীয় রাজনৈতিক জটিলতা কাটিয়ে উঠে ঝালদাকে উন্নয়নের অভিমুখে নিয়ে আসতে পারেন কিনা সুরেশ।