নিজস্ব প্রতিনিধি: সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী মে মাসেই রাজ্যে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচন(Panchayat Election)। প্রতিবার এই নির্বাচনের আগে গ্রাম বাংলার কিছু কিছু এলাকায় অনুন্নয়ন নিয়ে ভোট বয়কটের ডাক দেওয়ার ঘটনা ঘটতে দেখা যায়। এবারেও বেশ কিছু জায়গায় সেই ঘটনা ইতিমধ্যেই চোখে পড়ছে। কিন্তু তারমধ্যে আলাদা করে সবার নজর কেড়ে নিয়েছে উত্তরবঙ্গের মালদা জেলার(Malda District) পুরাতন মালদা ব্লকের মুচিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ছোটপুর ও ছোটপুর ভেস্টপাড়া গ্রামের একটি বুথ। কেননা এই বুথের প্রায় হাজার জন বাসিন্দা এবার ভোট বয়কটের(Vote Boycott) ডাক দিয়েছেন। আর সেই ডাক তাঁরা দিয়েছেন কোনও অনুন্নয়নের অভিযোগের জেরে নয়, আসন সংরক্ষণের জেরে। তাঁদের ক্ষোভ কোনও রাজনৈতিক দলের বা প্রশাসনের বিরুদ্ধে নয়। তাঁদের ক্ষোভ রাজ্য নির্বাচন কমিশনের(West Bengal State Election) বিরুদ্ধে যারা ওই আসনটিকে সংরক্ষিত(Reserved Seat) হিসাবে ঘোষণা করেছেন।
আরও পড়ুন DA’র দাবিতে দিল্লিতে ধর্না, ব্যবস্থা নিচ্ছে রাজ্য
ঠিক কী হয়েছে? জানা গিয়েছে, ছোটপুর ও ছোটপুর ভেস্টপাড়া গ্রাম পুরোপুরি সংখ্যালঘু অধ্যুষিত। ভোটারদের সবাই মুসলিম। অথচ সেই এলাকাকেই এবার তপশিলী মহিলা সংরক্ষিত আসন করেছে নির্বাচন কমিশন। এর জেরে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন গ্রামবাসীরা। ক্ষুব্ধ স্থানীয় তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যও। কমিশনের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ভোট বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। ছোটপুর ও ছোটপুর ভেস্টপাড়া গ্রাম দুটিতে আগে একটিমাত্র বুথ ছিল। সেই বুথ ভেঙে এবার ২/২ ও ৩/৩ করা হয়েছে। ২/২ বুথের মোট ৮৬৭ জন ভোটার। তাঁরা প্রত্যেকেই মুসলিম। অথচ ওই বুথটিই এবার তপশিলী মহিলা সংরক্ষিত। অর্থাৎ এবার ওই গ্রামের কোনও বাসিন্দা নিজের এলাকার ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না। কমিশনের এই সিদ্ধান্তে ক্ষিপ্ত হয়ে রয়েছেন গ্রামবাসীরা।
আরও পড়ুন পোলবায় গণধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রী, ধৃত ১
ঘটনাটি জানতে পেরে গ্রামবাসীরা বিডিওর কাছে গিয়েছিলেন। তাঁকে জানানো হয়েছিল, ওই গ্রামে একজনও হিন্দু ভোটার নেই। সেক্ষেত্রে বুথের আসনটি তফশিলী মহিলা সংরক্ষিত হল কীভাবে? এতে তো গ্রামের কোনও বাসিন্দাই ওই আসনে দাঁড়াতে পারবেন না। যদিও বিডিও তাঁদের জানিয়ে দেন, তাঁর কিছু করার নেই। গোটা বিষয়টি জেলাশাসকের অধীনে। তিনি যা করার করবেন। সেই কথা শুনে গ্রামের কয়েকজন জেলাশাসকের কাছেও যায়। কিন্তু তিনিও কিছু করতে পারবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। এই অবস্থায় গ্রামবাসীদের সাফ জবাব, তাঁরা বহিরাগত কোনও প্রার্থীকে মানবেন না। নির্বাচন কমিশন নিজেদের সিদ্ধান্ত না বদলালে তাঁরা এবার ভোট বয়কট করার পথে হাঁটবেন।