নিজস্ব প্রতিনিধি: বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে স্ত্রীর প্রেমিককে খুন করার অভিযোগ উঠল। ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জ থানার পীরপুর গ্রামে। পরিকল্পনা করেই এই খুন করা হয়েছে বলে তদন্তকারীরা মনে করছেন। প্রথমে স্ত্রীকে দিয়ে তাঁর প্রেমিককে ডেকে নিয়ে আসা হয়। তারপর চার জন মিলে ওই যুবককে খুন করে বলে অভিযোগ। অভিযুক্ত চার জনের মধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাকি একজনের খোঁজ চালাচ্ছে তদন্তকারীরা। শুক্রবার সকালে অভিযুক্তের বাড়ির ৫০০ মিটার দূরে এক বাগান থেকে মৃত ব্যক্তির কাটা মুণ্ডু উদ্ধার হয়।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত যুবকের নাম বাবুসোনা ঘোষ। ৩৫ বছর বয়স তাঁর। নদিয়া জেলার ধুবুলিয়া থানার মায়াকোল এলাকার বাসিন্দা তিনি। স্থানীয় ধুবুলিয়ার বাসিন্দা প্রহ্লাদ ঘোষ। সেই প্রহ্লাদ ঘোষের স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন বাবুসোনা। প্রহ্লাদ ঘোষের স্ত্রী নমিতা ঘোষের সঙ্গে বাবুসোনার বিবাহ বহিভূর্ত সম্পর্কের কথা জানতে পেরেছিলেন প্রহ্লাদ। প্রথমে স্ত্রীর আচরণে সন্দেহ হয়েছিল তার। ধীরে ধীরে বিষয়টি নিয়ে নিশ্চিত হন প্রহ্লাদ। বাবুসোনা ও নমিতার মধ্যে সম্পর্কের কথা জানার পর স্ত্রীকে সেই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার কথা বলেছিলেন তিনি। এমনকী স্ত্রীর প্রেমিক বাবুসোনাকেও প্রহ্লাদ সতর্ক করেছিল বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু তাতেও কোনও কাজ না হওয়ায় অবশেষে স্ত্রীকে ঘুঁটি সাজিয়ে বাবুসোনাকে খুন করার সিদ্ধান্ত নেয় প্রহ্লাদ। বাবুসোনাকে নিজের বাড়িতে ডেকে পাঠিয়ে বাড়ির কাছে বাগানে নিয়ে গিয়ে তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করার পর ধড় থেকে মুণ্ডু আলাদা করে দেওয়া হয়। মৃতের দেহ মাথাভাঙা নদীতে ভাসিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি বাবুসোনার কাটা মুণ্ডু পুঁতে রাখা হয় বাড়ি থেকে ৫০০ মিটার দূরে আমবাগানে। বাবুসোনার জামাকাপড়ও পুঁতে দেওয়া হয়। প্রহ্লাদ ঘোষ ও তাঁর স্ত্রী-সহ চারজন এই খুনের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ।
অন্যদিকে এই ঘটনার তদন্তে নেমে অভিযুক্ত স্বামী প্রহ্লাদ ঘোষ ও তাঁর স্ত্রী নমিতা ঘোষকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রহ্লাদের দুই আত্মীয় শঙ্কর ঘোষ ও প্রসেনজিৎ ঘোষকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই ঘটনা নিয়ে কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) কৃশানু রায় বলেন, ‘ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তা তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, তার ভিত্তিতে তদন্ত এগোচ্ছে।’ মৃত বাবুসোনার স্ত্রী শ্যামলী ঘোষের অভিযোগ, তাঁর স্বামীকে জোর করে ফাঁসানো হয়েছে। দোষীদের ফাঁসির দাবি করেছেন শ্যামলী।