নিজস্ব প্রতিনিধি: ছেলের বিরুদ্ধে উঠেছিল মায়ের নাবালিকা সহকর্মীকে একাধিকবার ধর্ষণ করার অভিযোগ। সেই অভিযোগের জেরেই প্রথমে ছেলে(Son) ও পরে মাকেও(Mother) গ্রেফতার(Arrest) করেছে পুলিশ। কিন্তু ওই অভিযোগের সত্যতা নিয়েই এবার প্রশ্ন উঠে গেল নানান মহলে। কেননা যে নাবালিকা এই অভিযোগ তুলেছে তার দাবি মতো, ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে একদিনই। আর সেটা ২৪ অক্টোবর, মানে কালিপুজোর রাতে। সেই রাতেই নাকি মায়ের ওই নাবালিকা সহকর্মীকে খাবারে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দিয়ে ৩ বার ধর্ষণ করেছে ছেলে। যদিও সেই ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের হয়েছে চলতি মাসের ১৬ তারিখে। অর্থাৎ মূল ঘটনার প্রায় ২ মাস বাদে অভিযোগ দায়ের। কেন এমন হল? কেনই বা নাবালিকা তার পরিবারকে এই ঘটনা আগে জানায়নি? এমনই প্রশ্ন উঠছে নানান মহলে। ঘটনার জেরে প্রশ্নের মুখে পড়েছে কলকাতার(Kolkata) হরিদেবপুর(Haridevpur) থানার পুলিশের ভূমিকাও। সব থেকে বড় প্রশ্ন, কোনও মহিলা বা নাবালিকা কোনও অভিযোগ করলেই কী কাউকে গ্রেফতার করতে হবে, যদি সেই অভিযোগের সততা নিয়ে প্রশ্ন থাকে!
আরও পড়ুন সীমান্ত নিরাপত্তার দায়িত্ব রাজ্যেরও, বৈঠকে মন্তব্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্যাতিতা নাবালিকা যে বিউটি পার্লারে কাজ করত সেখানেই কাজ করতেন অভিযুক্ত যুবকের মা। ২৪ অক্টোবর মানে কালিপুজোর রাতে ওই মহিলার বাড়ি গিয়েছিল নাবালিকা। সেখানে তাকে নাকি এমন কিছু খেতে দেওয়া হয় যা খেয়ে বেহুঁশ হয়ে যায় মেয়েটি। এরপর ওই মহিলার ১৮ বছরের যুবক নাকি তাকে পর পর ৩ বার ধর্ষণ করে। ঘটনার অভিঘাত নাকি এমন ছিল যে ওই নাবালিকা তার বাড়ির লোকদের কিছুই জানাতে পারেনি এতদিন। সম্প্রতি সে বিষয়টি বাড়ির লোকদের জানায় ও তারপর হরিদেবপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। এরপরই পুলিশ প্রথমে ছেলে ও তারপর মাকে গ্রেফতার করে আদালতে তোলে। যদিও আদালতে পেশ করার আগে ধৃত মহিলা নিজের ও তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘আমাদের ফাঁসানো হয়েছে। আসলে ওই মেয়ে আমার ছেলেকে প্রোপোজ করেছিল। তাতে রাজি হয়নি আমার ছেলে। তাই আমাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হল।’
আরও পড়ুন রেল উচ্ছেদ করতে চাইলে দিতে হবে পুনর্বাসন, শাহকে বার্তা মমতার
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দক্ষিণ কলকাতার হরিদেবপুর এলাকার ওই ঘটনায় মা ও ছেলের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২০ বি, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, ৩২৮ খাবারে নেশার দ্রব্য মেশানো, পক্সো আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে ২ মাস বাদে নাবালিকার শরীরেও তো ধর্ষণের ছিঁটেফোঁটা কিছু মিলবে না মেডিকেল টেস্টে যা ধর্ষণের প্রমাণ হিসাবে গণ্য হবে। সেক্ষেত্রে মেয়েটি যে সত্যি বলছে তার গ্যারেন্টি কী? মিথ্যা অভিযোগেও তো সে মা-ছেলেকে হেনস্থা করার সুযোগ পেয়ে গেল। আদালতে ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হলে মা-ছেলে শাস্তি পাবে। না পেলে খালাস হয়ে যাবে। কিন্তু যে হেনস্থা ও সামাজিক মানহাণির মধ্যে দিয়ে তাঁরা এখন যাচ্ছেন তা কীভাবে পূরণ হবে! যদিও পুলিশের আধিকারিকদের দাবি, দেশের আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হয়েছে। গ্রেফতারি ভুল নয়। আইনজীবীদের একাংশের অবশ্য দাবি, এই ধরনের মিথ্যা ও ভুয়ো অভিযোগ তুলে দেশের যুবক সম্প্রদায়ের চূড়ান্ত ক্ষতিসাধন করে চলেছে এখনকার মেয়েরা। দেশজুড়ে এই ধরনের ভুয়ো ধর্ষণের অইযোগ দায়ের হওয়ার ঘটনা বেড়েই চলেছে। কার্যত আইনের সুযোগ নিয়ে এই অপকর্ম ঘতিয়ে চলেছে দেশের মেয়েরাই। পরিসংখ্যান বলছে দেশে এখন প্রতিদিন প্রতি ৩০ মিনিট অন্তর একজন করে যুবক হেনস্থার শিকার হন এই ধরনের ভুয়ো অভিযোগের।