নিজস্ব প্রতিনিধি: মানব পাচারের অভিযোগে রোমানিয়ায় ৩০ দিনের জন্যে গৃহবন্দী থাকার নির্দেশ দেওয়া হল বিখ্যাত ইন্টারনেট ইনফ্লুয়েন্সার অ্যান্ড্রু টেট-কে। শুক্রবার বুখারেস্টের একটি আদালত এই ঘোষণা করেছে। অ্যান্ড্রু টেট একজন বিখ্যাত সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার। যিনি তাঁর অসামান্য জীবনধারা এবং বিতর্কিত দৃষ্টিভঙ্গির জন্যে বিখ্যাত। টেটের সোশ্যাল মিডিয়ায় লাখ লাখ অনুরাগী। যিনি নিজের বিলাসবহুল জীবনযাত্রার নানা ব্লগ বানায়। কিন্তু তাঁদের বিরুদ্ধে সমালোচকদের দাবি, টেট নারীদের অবমাননা করে। মঙ্গলবার ইনফ্লুয়েন্সারকে তাঁর ভাই প্রাক্তন কিকবক্সার ক্রিষ্টান, এবং রোমানিয়ার আরও দুইজন সন্দেহভাজন মহিলাকে আটক করা হয়। যাঁরা মানব পাচার, ধর্ষণ এবং মহিলাদের যৌন শোষন কেন্দ্রিক একটি অপরাধমূলক সংগঠনের তৈরি করেছিলেন বলে অভিযোগ। যদিও অভিযুক্ত অ্যান্ড্রু টেট এবং তাঁর ভাই পুরো বিষয়টাই অস্বীকার করেছেন। উল্লেখ্য, তাঁদের বিরুদ্ধে গত ডিসেম্বরে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। প্রসিকিউটররা জানিয়েছেন, অভিযুক্তরা ৭ জন মহিলাকে ভালবাসা ও বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করেছিলেন।
তাঁদের পরে ভয় দেখিয়ে এবং জোরপূর্বক পর্ণগ্রাফি ভিডিওতে অংশ নিতে বাধ্য করা হয়। এবং সেগুলি পরবর্তীতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে দেওয়া হয়। যাঁদের মধ্যে কেউ কেউ রোমানিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা। অভিযুক্ত ৪ সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে গত ২৯ ডিসেম্বর থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়, এরপরই আজ প্রসিকিউটরাররা তাঁদের হেফাজতে রাখার দিনক্ষণ বাড়ানোর কথা জানালে আজ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয় বুখারেস্টের আদালত।
রোমানিয়ান প্রসিকিউটরদের বিবৃতি অনুসারে, আসামীদের মধ্যে একজনকে ২০২২ সালের মার্চ মাসে একজন মহিলাকে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। এদিকে অ্যান্ড্রু চলমান মামলার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে টুইটে বলেন, “ভাবুন, আমাকে গত কয়েক ঘণ্টা কোনো চার্জ ছাড়াই জেলে আটকে রাখা হয়েছিল। যদি তাঁদের কাছে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগই থাকত, তাহলে এতদিন অপেক্ষা কেন?” তাঁদের বিরুদ্ধে এখনও মামলা চলছে। আপাততঃ আদালত অ্যান্ড্রু টেট এবং তাঁর ভাইকে আগামী ৩০ দিনের জন্যে গৃহবন্দী থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ সত্যি প্রমাণিত হলে চিরকালের মতো জেল হতে পারে তাঁদের। তদন্ত জারি থাকবে, অর্থ পাচার এবং নাবালকদের পাচারের সম্ভাব্য অভিযোগ মুলতুবি রয়েছে। অ্যান্ড্রু টেট-কে এর আগেও, একটি বিতর্কিত ভিডিওর কারণে ২০১৬ সালে ব্রিটিশ টিভি শো “বিগ ব্রাদার” থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।