নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা: রাজধানীর সোহরাওয়ার্দি হাসপাতালের মর্গে মৃত মহিলাদের ধর্ষণের মতো জঘন্যতম ঘটনায় অভিযুক্ত মুন্না ভগতকে অব্যাহতি দিল আদালত। পুলিশের বিশেষ আবেদনে সাড়া দিয়ে তেজগাঁও থানায় দায়ের করা দুই পৃথক মামলায় সোহরাওয়ার্দি হাসপাতালের মর্গে অস্থায়ী কর্মী হিসেবে কাজ করা ‘পিশাচ’কে মুক্তি দিয়েছেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৬ এর বিচারক মোহাম্মদ আল মামুন। গত ১৮ নভেম্বর একটি মামলায় ও ২১ নভেম্বর আরও একটি মামলায় তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। মর্গে মৃত মহিলাদের ধর্ষণের মতো পৈশাচিন ঘটনার আসামীকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার বিষয়টি জানাজানি হতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে রাখা বেশ কয়েকজন মহিলার ময়নাতদন্ত করতে গিয়ে কার্যত চমকে গিয়েছিলেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক। কেননা প্রত্যেকের সঙ্গেই মৃত্যুর পরে যৌন সঙ্গমে লিপ্ত হওয়ার মতো প্রমাণ পেয়েছিলেন তিনি। এমন পৈশাচিক কাণ্ডের কথা হাসপাতালের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনেন তিনি। পুলিশকে গোটা ঘটনার কথা জানানো হয়। কিন্তু এমন ন্যক্কারজনক ঘটনার তদন্তে নেমে যোগহসূত্র খুঁজে পেতে হিমশিম খায় পুলিশ। পরে মামলা হস্তান্তর করা হয় সিআইডি’কে। সংস্থার দুঁদে গোয়েন্দারা তদন্তে নেমে জানতে পারেন ২০১৬ থেকে ২০১৯ সালের অক্টোবর পর্যন্ত সাতজন মৃত কিশোরীকে ধর্ষণ করা হয়েছে। গত বছরের ১৯ নভেম্বর হাসপাতালের ডোম যতন লালের সহকারী মুন্না ভগতকে পাকড়াও করেন। জেরার মুখে সে স্বীকার করে, গত দু’তিন বছর ধরেই ওই মর্গে আসা তরুণীদের মৃতদেহের সঙ্গে বিকৃত ধর্ষণ কাণ্ড চালিয়ে গিয়েছে। মর্গে কর্মরতরা সবাই ঘুমিয়ে পড়তে রাতের অন্ধকারে সুযোগ বুঝে ওই পৈশাচিক কাণ্ড ঘটাত।
গত বছরের ১০ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় মুন্নার বিরুদ্ধে প্রথম মামলা দায়ের হয়। ১৫ দিন বাদে ২৫ ডিসেম্বর ওই একই থানায় তার বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা দায়ের করা। দুই মামলার তদন্তকারী শাহরিয়ার আলম চূরান্ত চার্জশিট দাখিল করে মুন্নাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন জানান। সেই আবেদনে সাড়া দিয়েছেন বিচারক।