নিজস্ব প্রতিনিধি: ভিউজ পাওয়ার লোভে বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সরা যা খুশি তাই করছেন। ফলোয়ার সংখ্যা বাড়ানোর চক্করে সরকারি নিয়ম ভাঙ্গতেও পিছপা হচ্ছে না কেউ কেউ। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ার কাঁধে চেপে রাতারাতি তারকা বনে যাচ্ছেন সোশ্যাল ইনফ্লুয়েন্সাররা। তাঁদের রোয়াব দেখলে অরিজিনাল তারকারাও পান লজ্জা। যাই হোক, সম্প্রতি একজন বিখ্যাত ইউটিউবার ভিউজ বানানোর লোভে গোটা একটা দিন নিয়ম ভেঙে বিমানবন্দরে রাত কাটিয়ে গ্রেফতার হলেন। ঘটনাটি ঘটেছে, বেঙ্গালুরুর কেম্পেগৌড়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। পুলিশি সূত্র অনুযায়ী, ২৩ বছর বয়সী অভিযুক্ত ইউটিউবার সম্প্রতি বেঙ্গালুরুর কেম্পেগৌড়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমানে ওঠার নাম করে প্রবেশ করেন।
কিন্তু বিমানে না উঠে তিনি গোটা বিমানবন্দরের ভ্লগ ভিডিও বানান। পরে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে গেলেও তিনি মিথ্যে দাবি করতে থাকেন। গত ৭ এপ্রিল দুপুর ১২ ট্ নাগাদ চেন্নাইগামী এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইটের টিকিট নিয়ে বিমানবন্দরে প্রবেশ করেন বেঙ্গালুরুর ইয়েলাহাঙ্কার বাসিন্দা বিকাশ গৌড়া। তিনি পেশায় একজন নামি ইউটিউবার। এরপর তিনি ইচ্ছাকৃতভাবেই বিমানে না চড়ে তিনি বিমানবন্দরের আশেপাশের সমস্ত ছবি, নিজের ক্যামেরায় বন্দি করেন। অর্থাৎ তাঁর ভ্লগ বানানোই একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল। তাঁকে বিমানবন্দরের চারপাশে ঘোরাঘুরি করতেও দেখা যায়। এরপর ১২ এপ্রিল, তিনি তাঁর ইউটিউব চ্যানেলে কথিত ভিডিওটি আপলোড করেন। যাতে এখনও পর্যন্ত প্রায় ১.১৩ লক্ষ ভিউজ ছাড়ায়। জানা যায়, তিনি বিমানবন্দরে একটি পুরো দিন কাটিয়েছেন এবং বিমানবন্দর প্রাঙ্গণের নিরাপত্তাকে ফাঁকি দিয়ে অনেক জায়গায় প্রবেশ করেছেন। যেটা কিনা সম্পূর্ণ বেআইনি। এরপর ভিডিওটি প্রকাশ্যে আসা মাত্রই পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে।
কিন্তু তিনি বিষয়টি সম্পূর্ন এড়িয়ে গিয়েছেন। একজন সিনিয়র পুলিশ অফিসার বলেছেন, “অভিযুক্ত বিমানবন্দরে প্রবেশ করেন এবং কেম্পেগৌড়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনাল-2-এ নিরাপত্তা পরীক্ষা করিয়ে তিনি বোর্ডিং লাউঞ্জের দিকে রওনা হন। কিন্তু বিমানে ওঠার পরিবর্তে তিনি বিমানবন্দর চত্বরে ঘোরাঘুরি করেন এবং বিমানবন্দরে প্রায় ছয় ঘণ্টা কাটান।” ভিডিওটি রেকর্ড করার পর, তিনি বিমানবন্দর ছাড়ার আগে নিরাপত্তা কর্মীদের বলে যান যে, তিনি তাঁর ফ্লাইট মিস করেছেন। যেহেতু তার কাছে বৈধ টিকিট এবং বোর্ডিং পাস ছিল, তাই নিরাপত্তা কর্মীরা তাকে সন্দেহ করেনি।প্রাথমিক তদন্তানুযায়ি, অভিযুক্ত ইউটিউবার প্রচারের জন্যেই এটি করেছিলেন।বিষয়টি ১৫ এপ্রিল বিমানবন্দরের নিরাপত্তা কর্মীদের নজরে আসে এবং সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্সের আধিকারিকদের অভিযোগের ভিত্তিতে মিঃ গৌড়ার বিরুদ্ধে ৫০৫ ধারা (জনসাধারণের দুষ্টুমি করার বিবৃতি) এবং ৪৪৮ (ঘরে প্রবেশাধিকার) এর অধীনে একটি মামলা দায়ের করা হয়। ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তবে মিঃ গৌড়া পরে জামিনে মুক্তি পেয়ে যান।