নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: একটা নয়, দু’টো নয়, একসঙ্গে চারটি বেনারসি শাড়িতে সেজে উঠলেন জলপাইগুড়ির বৈকণ্ঠপুর রাজবাড়ির দুর্গাপ্রতিমা। প্রাচীন রীতি মেনেই চতুর্থীর সন্ধ্যায় উমার শাড়ি পরিয়ে দিল স্থানীয় মহিলারা। একইসঙ্গে লক্ষ্মী, গণেশ, কার্তিক, সরস্বতীকেও শাড়ি-কাপড় পরানো হয় এদিন।
কালের নিয়মে ইতিউতি বারোয়ারি পুজোর ঢল নেমেছে প্রচুর। ব্যতিক্রম নয় জলপাইগুড়িও। কিন্তু হাজারো বারোয়ারি পুজোর মাঝে এখনও নিজস্ব ঐহিত্য রীতি-রেওয়াজ পালন করে যাচ্ছে বৈকণ্ঠপুর রাজবাড়ি। প্রতিপদেই বসানো হয়েছে ঘট। শনিবার রাজ পরিবারের সদস্য প্রণতকুমার বসুর উপস্থিতিতে দেবীর শাড়ি পরানো হল। চারটি বেনারসি পরানোর কারণ, দেবীর কাঠামোর উচ্চতা এতটাই যে একটি শাড়িতে কুলোয়না। তাই দেবীকে প্রথমে দু’টি শাড়ি পরানো হয়। তারপর আবার তার ওপরে আরও দু’টি শাড়ি পরানো হয়। একইভাবে গণেশ ও কার্তিককে দু’টি করে ধুতি পরানো হয়।
বৈকন্ঠপুর রাজপরিবারে বরাবরই স্থানীয়দের মান্যতা দেওয়া হয়। রাজপরিবারের সেই নিয়ম অনুযায়ী দেবীকে পরিবারের লোকেরা শাড়ি পরায় না। বরং এই দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয় স্থানীয় মহিলাদের হাতে। যুগ যুগ ধরে এই নিয়মই চলে আসছে। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। দেবী দুর্গাকে শাড়ি পরিয়ে প্রিয়াঙ্কা দত্ত এক স্থানীয় নহিলা জানান, ‘গত কয়েকবছর ধরে আমরাই রাজবাড়ির দেবীদুর্গাকে শাড়ি পরাই। এই দিনটির জন্য বছরভর অপেক্ষা করে থাকি। এবারেও আমরা শাড়ি পরালাম। শুধু দুর্গা নয়। লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ, জয়া, বিজয়া, মহামায়া সবাইকে আমরা শাড়ি পরালাম। আর এই কাজ করতে আমাদের খুব ভালো লাগে।’ পরিবারের সদস্য প্রণতকুমার বসু বলেন, ‘চারটি শাড়ি পরা অবস্থায় দেবীর পুজো হয়। কিন্তু যখন প্রতিমা নিরঞ্জণ হয়, তখন উপরের শাড়ি বা ধুতি খুলে নিয়ে রাজবাড়ীতে রাখা হয়। বাকি শাড়ি পরা অবস্থায় প্রতিমা নিরঞ্জণ করা হয়।’