নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: জলপাইগুড়ির রাজবাড়ির সপ্তমী পুজোতে দেবী দুর্গাকে আমিষ ভোগ দেওয়া হয়। শনিবার নবপত্রিকা স্নানের মধ্য দিয়ে পুজো শুরু হয়। এরপর মায়ের ভোগ দেওয়া হয়। এদিনের এই আমিষ ভোগে পাঁচ রকম মাছ(Fish) দেওয়া হয়। এদিন মায়ের পাতে ইলিশ, কাতলা, পটল চিংড়ি, পাবদা ও রুই মাছ দেওয়া হয়েছে। রুপোর থালায় সাজিয়ে অন্যান্য ভোগের সাথে এই পাঁচ রকম মাছ দেওয়া হয়েছে। এদিনই সন্ধ্যার পর অর্ধ রাত্রি পুজো হবে। এই পুজোতে নরবলির প্রথা ছিল একসময়। এখন সেই প্রথা বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
তার বদলে এখন সেখানে চালের মন্ড দিয়ে মানুষের আকৃতি বানিয়ে কুশ দিয়ে বলি দেওয়া হয়। এর সঙ্গে ৮টি পায়রা বলি দেওয়া হয় বলে জানান রাজপরিবারের কুল পুরোহিত শিবু ঘোষাল। অন্যদিকে,সপ্তমীর সকালে জলপাইগুড়ির দেব বাড়ির কলাবউ’ স্নান সম্পূর্ণ হয় নিয়ম-নীতি মেনে।নবপত্রিকার পুজো প্রকৃতপক্ষে শস্যদেবীর পুজো। গণেশের বউ নয়, বরং নবরূপে দেবী দুর্গারই প্রতীক নবপত্রিকা।সপ্তমীর সকালের প্রধান রীতি হল নবপত্রিকা স্নান । চলতি কথায় কলা বউ স্নান।
ষষ্ঠীর বোধনের পর সপ্তমীর সকালে নটি গাছের সমন্বয়ে কলা বউ এসে বসে গণেশের পাশে। তাই অনেকেরই ধারণা কলা বউ গণেশের স্ত্রী। এটা এক্কেবারে ভুল ধারণা। নবপত্রিকা আসলে দুর্গারই রূপ। এই গাছ আদৌ গণেশের স্ত্রী নন, বরং মা দুর্গা অর্থাৎ গণেশের জননী।নবপত্রিকা বলতে বোঝানো হয় নটি গাছকে। যাতে মূলত দৃশ্যমান কলাগাছ। এটি ছাড়াও ৮ টি গাছ থাকে। যা জড়িয়ে ফেলা হয় শ্বেত অপরাজিতার লতা ও ন গাছা হলুদ সুতোয়। তারপর গাছ-গোছাকে গঙ্গায় স্নান করাতে যাওয়া হয়।
নবপত্রিকার সঙ্গে ফলনের দেবীর বন্দনারও মিল খুঁজে পান অনেকে। কী কী গাছ থাকে এই নবপত্রিকায় ? কলা গাছ, কচু গাছ, হলুদ গাছ, জয়ন্তী গাছ, বেল গাছ, ডালিম গাছ , অশোকের ডাল, মান কচু গাছ এবং ধান গাছ। তাদের পরানো হয় লালপেড়ে শাড়ি। তারপর তাকে সিঁদুরের টিপ পরানো হয়।শুরু হয়েছে জলপাইগুড়ি রাজবাড়ীর(Rajbari) ৫১৪ তম(514 Years Pujo) বর্ষের দুর্গা পুজো। সপ্তমীর সকাল থেকেই কলা বৌ স্নান, নবপত্রিকা প্রবেশের মধ্যে দিয়ে রাজপরিবারের সদস্যদের উপস্থিততে চলছে পুজো।