নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্য সরকারি কর্মচারিদের বকেয়া ডিএ দিতে হবে তিন মাসের মধ্যে, শুক্রবার বকেয়া ডিএ মামলার শুনানিতে জানাল কলকাতা হাইকোর্ট। একইসঙ্গে আদালত এদিন জানিয়েছে, স্যাটের রায় তিন মাসের মধ্যে কার্যকর করতে হবে। মহার্ঘ ভাতা আইনত অধিকার, মৌলিক অধিকার বলেও মন্তব্য করেন বিচারপতি হরিশ টন্ডন ও বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তর ডিভিশন বেঞ্চ।
এদিন রাজ্য সরকারের তরফে আদালতে জানানো হয়, তহবিল না থাকায় উঁচু হারে ডিএ দেওয়া যাচ্ছে না। এর পর রাজ্যের যুক্তি গ্রহণযোগ্য নয় বলে জানায় কলকাতা হাইকোর্ট। শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্ট জানায়, কেন্দ্রীয় হারেই ডিএ দিতে হবে রাজ্য সরকারি কর্মীদের। মহার্ঘ ভাতা সরকারি কর্মচারীদের সাংবিধানিক এবং মৌলিক অধিকার। রাজ্য সরকারের আইনজীবীর যুক্তি খারিজ করে দিয়ে আদালত জানায়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে মহার্ঘ ভাতা অন্যরকম ছিল। ১৯৪৭ সালে প্রথম বেতন কমিশন গঠন হওয়ার পর থেকেই মহার্ঘ ভাতা বেতনের অংশ হিসাবে বিবেচিত। জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি হলে সরকারকে ডিএ দিতেই হবে। বকেয়া ডিএ মামলার শুনানিতে এদিন হাইকোর্টের নির্দেশ, ‘রাজ্য সরকার অল ইন্ডিয়া ইনডেক্স অনুযায়ী ডিএ দিতে বাধ্য। রাজ্য সরকারি কর্মীরা ডিএ পাবেন ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী। ৩ মাসের মধ্যেই রাজ্য সরকারকে কর্মীদের ডিএ মিটিয়ে দিতে হবে।’ অন্যদিকে এদিন আদালতের রায়ে খুশি রাজ্য সরকারি কর্মীরা। মামলাকারীরা জানিয়েছেন, সত্যের জয় হল।
উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতার ফারাক নিয়ে মামলা দায়ের হয় ২০১৬ সালে। সেই মামলায় ২০১৮ সালে হাইকোর্ট জানিয়েছিল ডিএ রাজ্য সরকারি কর্মীদের নায্য অধিকার। এর পর রাজ্য সরকার সেই রায়ের রিভিউ পিটিশন দায়ের করে হাইকোর্টে। হাইকোর্ট সেই মামলা পাঠায় স্যাট-এর কাছে। স্যাট সেই রিভিউ মামলায় ২০১৯ সালে জুলাই মাসে জানিয়ে দেয়, মহার্ঘ ভাতা সরকারি কর্মচারীদের অধিকার। ন্যাশনাল ইনডেক্স অনুযায়ী ৬ মাসের মধ্যে কর্মীদের ডিএ মিটিয়ে দিতে হবে রাজ্য সরকারকে। স্যাট-এর সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে আবার কলকাতা হাইকোর্টে রিভিউ পিটিশন দায়ের করা হয় রাজ্য সরকারের তরফে। অবশেষে বকেয়া ডিএ মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়ে দেয়, কর্মীদের বকেয়া ডিএ মিটিয়ে দিতে হবে রাজ্য সরকারকে।