নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা: ভারতের পুলিশ হেফাজত থেকে পালিয়েও শেষ রক্ষা হল না। মঙ্গলবার রাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন সহ ৪০ দেশে এটিএম জালিয়াতি করে কোটি-কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া জালিয়াতি চক্রের অন্যতম দুই পাণ্ডাকে গ্রেফতার করেছে কাউন্টার টেরররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিসিসি) গোয়েন্দারা। ধৃত দুই পাণ্ডা হল তুরস্কের নাগরিক হাকান জানবুরকান ও বাংলাদেশের নাগরিক থেকে মফিউল ইসলাম। ধৃতদের কাছ থেকে পাঁচটি বিভিন্ন মডেলের ফোন, একটি ল্যাপটপ, ১৫টি ক্লোন কার্ডসহ মোট ১৭টি ক্রেডিট-ডেবিট কার্ড বাজেয়াপ্ত করা হয়।
বুধবার সাংবাদিক সম্মেলনে সিটিসিসি প্রধান আসাদুজ্জামান জানান, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, নেদারল্যান্ডস, জার্মানি সহ বিশ্বের ৪০টি দেশে এটিএম জালিয়ালির সঙ্গে জড়িত হাকান জানবুরকান। ভারতের বিভিন্ন এটিএম বুথ থেকে প্রায় ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে অসমের পল্টন বাজার থানার পুলিশের হাতে দুই বাংলাদেশিসহ গ্রেফতার হয়েছিল। জেল হেফাজতে থাকাকালীন পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে আগরতলার গোবিন্দ বল্লভ পন্থ হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায়। পরে এক ভারতীয় নাগরিকের সাহায্যে দুই লাখ টাকার বিনিময়ে সিকিম হয়ে নেপাল পৌঁছয়। সেখান থেকে ভ্রমণ সংক্রান্ত নথি সংগ্রহ করে তুরস্কে ফিরে যায়। নতুন পাসপোর্ট তৈরি করে ব্যবসায়িক ভিসা নিয়ে গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর বাংলাদেশে আসে। পল্টনের এক আবাসিক হোটেলে ডেরা গড়ে। গত ২-৪ জানুয়ারি পর্যন্ত ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের বিভিন্ন বুথে গিয়ে কার্ড ক্লোনিং স্ক্যামিংয়ের সাহায্যে একাধিকবার টাকা উত্তোলনের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। অ্যান্টি ফেমিং টেকনোলজি ব্যবহার করায় অ্যালার্ম সিস্টেমের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। তার পরেই পুলিশে অভিযোগ দায়ের করে। তদন্তে নেমে বিভিন্ন এটিএম বুথের সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে হাকান জানবুরকান ও মফিউল ইসলামকে শনাক্ত করা হয়।’
জেরায় আন্তর্জাতিক এটিএম জালিয়াতির অন্যতম পাণ্ডা জানিয়েছে, একাধিক পাসপোর্ট ব্যবহার করে ২০১৬, ২০১৮, ২০১৯ ও ২০২০ সালেও বাংলাদেশে এসেছিল। মফিউল ইসলামের সহযোগিতায় বেশ কিছু বুথ থেকে জালিয়াতি করে টাকা হাতিয়েও নিয়েছে। কার্ড ক্লোনিং চক্রের সঙ্গে আর কারা জড়িত তা জানার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন সিটিসিসি প্রধান।