নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা: শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরেই আফগানিস্তানের মতো তালিবানি শাসন শুরু হয়েছে ভারতের দয়ায় স্বাধীনতা পাওয়া বাংলাদেশে। মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী তথা জামায়েতপন্থী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তরফে শুরু হয়েছে তালিবানি নিদান। শনিবারই প্রাণে মেরে মেলার হুমকি দিয়ে দেশের প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান-সহ সুপ্রিম কোর্টের ছয় বিচারপতিকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে। তার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে থাকা আবেদ খান-সহ দেশের বরেণ্য ৫১ সাংবাদিককে ‘জাতীয় শত্রু’ হিসাবে ঘোষণা করে তাঁদের জাতীয় প্রেস ক্লাবে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারির নিদান দেওয়া হয়েছে। ওই নিদান জানতে পেরে হতচকিত হয়ে পড়েছেন সাংবাদিক মহল।

ক্ষমতার পালাবদলের পরেই গাযের জোরে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী ও পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের এজেন্ট হিসাবে সুপরিচিত হাসান হাফিজের নেতৃত্বে জাতীয় প্রেস ক্লাবের দখল নিয়েছে বিএনপি ও জামায়েতপন্থীরা। শনিবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তরফে জাতীয প্রেস ক্লাব দখলকারী হাসান হাফিজকে এক চিঠি পাঠিয়ে জামায়েতপন্থী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তরফে আবেদ খান-সহ ৫১ সাংবাদিককে ‘জাতীয় দুশমন’ ঘোষণা করে তাঁদের নিষিদ্ধ করার নিদান দেওয়া হয়েছে। ওই নিদান দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সমন্বয়ক তথা জঙ্গি সংগঠন হিয়বুত তাহরীর দুই সদস্য আব্দুল কাদের ও আব্দুল হান্নান মাসুদ।

যে সব বরেণ্য সাংবাদিকদের নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন আবেদ খান, দৈনিক ‘সমকাল’ সম্পাদক আলমগীর হোসেন, দৈনিক ‘যুগান্তর’ সম্পাদক সাইফুল আলম, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, জাতীয প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক তথা ‘ভোরের কাগজ’ পত্রিকার সম্পাদক শ্যামল দত্ত। এছাড়াও প্রেসক্লাবের সদস্য প্রভাষ আমিন, জায়েদুল আহসান পিন্টু, মোজাম্মেল বাবু, আশীষ সৈকত, ইকবাল সোবহান চৌধুরী, সোহেল হায়দার চৌধুরী, ফারজানা রুপা, আরিফ জেবতিক, অশোক চৌধুরী, শাহজান সরদার, সুভাষ সিংহ রায়, আজমল হক হেলাল, আবুল খায়ের, মঞ্জুরুল ইসলাম (ডিবিসি), প্রণব সাহা (ডিবিসি), নঈম নিজাম (বাংলাদেশ প্রতিদিন), খায়রুল আলম, সুভাষ চন্দ্র বাদল, জ.ই মামুন, জাফর ওয়াজেদ (পিআইবি), শাহনাজ সিদ্দিকী (বিএসএস)।

এছাড়াও রয়েছেন সাইফুল ইসলাম কল্লোল (বিএসএস), পাভেল রহমান, আজিজুল ইসলাম ভূঁইয়া, সৈয়দ বোরহান কবির, শাবান মাহমুদ, সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, মোল্লা আমজাদ হোসেন, শফিকুর রহমান, আবুল কালাম আজাদ, মামুন আবদুল্লাহ (ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভি), সোমা ইসলাম (চ্যানেল আই), শ্যামল সরকার (ইত্তেফাক), অজয় দাশগুপ্ত (সমকাল), শাকিল আহমেদ (৭১ টিভি), রামা প্রসাদ (সমকাল), সঞ্জয় সাহা পিয়াল (সমকাল), ফরাজী আজমল (ইত্তেফাক), আনিসুর রহমান (বিএসএস), স্বপন বসু (বিএসএস), হাসান জাবেদ (এনটিভি), মিথিলা ফারজানা (৭১ টিভি), শবনম আজিম (৭১ টিভি), এনামুল হক চৌধুরী, দীপক কুমার আচার্য ও নাঈমুল ইসলাম খান। দেশের বরেণ্য সাংবাদিকদের জাতীয় শত্রু হিসাবে ঘোষণা করে মূলত তাদের উপরে ব্যাক্তি আক্রমণ শানানোর পথ প্রশস্ত হয়েছে বলে মনে করেন সাংবাদিকরা।