নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা: না ফেরার দেশে পাড়ি দিলেন কিংবদন্তী গীতিকার-পরিচালক-প্রযোজক গাজী মাজহারুল আনোয়ার (Gazi Mazharul Anwar)। আজ রবিবার সকাল সাতটা নাগাদ বারিধারায় নিজের বাড়িতেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন প্রবীণ গীতিকার (Legendary Lyricist)। তড়িঘড়ি নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এক নামী বেসরকারি হাসপাতালে। কিন্তু চিকিৎসকদের যাবতীয় প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে দিয়ে অনন্তলোকে পাড়ি দেন। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। প্রবীন গীতিকার স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়ে, নাতি-নাতনি সহ অসংখ্য অনুরাগীকে রেখে গিয়েছেন। গাজী মাজহারুল আনোয়ারের (Gazi Maxharul Anwar) অকালপ্রয়াণের খবরে সাংস্কৃতিক মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
১৯৪৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার (Cumilla) দাউদকান্দির তালেশ্বর গ্রামে জন্ম গাজী মাজহারুল আনোয়ারের। মাত্র ২১ বছর বয়সে তৎকালীন পাকিস্তান রেডিওর গীতিকার হিসেবে গান লেখা শুরু করেন। ১৯৬৭ সালে ‘আয়না ও অবশিষ্ট’ সিনেমার জন্য গান লিখে সাড়া ফেলে দেন। তার পর থেকে চলচ্চিত্র জগতের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে পড়েন। গল্প লেখার পাশাপাশি, চিত্রনাট্যকার ও পরিচালক হিসেবেও যুক্ত হন। তাঁর প্রথম পরিচালিত ছবি ‘নান্টু ঘটক’। মোট ৪১টি চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছেন।
অসংখ্য কালজয়ী গানের রচয়িতা গাজী মাজহারুল আনোয়ার। জীবনে ২০ হাজারের বেশি গান লিখেছেন। বেশ কয়েকটি দেশাত্মকবোধক গানও লিখেছেন। তার মধ্যে অন্যতম ‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’, ‘একবার যেতে দে না আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়’, ‘এক তারা তুই দেশের কথা বল রে এবার বল’।’ বিবিসির পক্ষ থেকে সর্বকালের সেরা ২০টি বাংলা গানের যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল, তার মধ্যে তিনটি গানের রচয়িতা ছিলেন তিনি। সঙ্গীত ও চলচ্চিত্র জগতে বিশেষ অবদানের জন্য ২০০২ সালে গাজী মাজহারুল আনোয়ারকে ‘একুশে পদক’ (Ekushe Padak) দেওয়া হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য গতবারই বাংলাদেশ সরকারের দেওয়া সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান ‘স্বাধীনতা পদক’ (Independence Award) পেয়েছিলেন।