নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা: দেশে ঘুরতে এসে প্রাণ খোয়াতে হল এক মার্কিন নাগরিককে। রাজধানীর অভিজাত বনানীর শ্বশুরবাড়ি থেকে ৪৪ বছর বয়সী শেখ শোয়েব সাজ্জাদ নামে ওই মার্কিন নাগরিকের লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয়েছে। তিনি জনপ্রিয় ই-কমার্স সংস্থা অ্যামাজনে চাকরি করতেন। ইতিমধ্যেই ঘটনায় সাজ্জাদের স্ত্রী সাবরিনা শারমিনের প্রেমিক কাজী ফাহাদকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। যদিও শনিবার রাত পর্যন্ত ঘটনার মূলচক্রী সাবরিনাকে ধরতে পারেনি পুলিশ। ইতিমধ্যেই নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে পুরো ঘটনাটি ঢাকায় অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসকে জানানো হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আমেরিকাতেই ২০১৭ সালে পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হন সাজ্জাদ ও সাবরিনা। আচমকাই ২০১৮ সালের দিকে স্বামীকে ছেড়ে ঢাকায় ফেরেন সাবরিনা। পুরান ঢাকার ওয়ারীতে শ্বশুরবাড়ির ফ্ল্যাটে থাকতে শুরু করেন। ফ্ল্যাটে থাকাকালীন পড়শি কাজী ফাহাদ নামে এক তরুণের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান সাবরিনা। নিয়মিতই ওই ফ্ল্যাটে যাতায়াত করতেন ফাহাদ। বিষয়টি জানতে পেরে সাজ্জাদের পরিবারের সদস্যরা আপত্তি জানান। আমেরিকায় সাজ্জাদকেও স্ত্রীর পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ার বিষয়টি জানানো হয়। গত ১৬ মার্চ দেশে আসেন সাজ্জাদ। দেশে এসেই স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে ওঠেন। গত ১৫ এপ্রিল সাবরিনা স্বামীর মোবাইল ও পাসপোর্ট নিয়ে ফ্ল্যাট থেকে পালিয়ে যান। তাতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন সাজ্জাদ। গত ৩০ এপ্রিল ইফতারের দশ মিনিট আগে গৃহ পরিচারিকা সাজ্জাদকে ইফতারের জন্য ডাকতে যান। কিন্তু কোনও সাড়া শব্দ না পেয়ে রুমের ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে দরজা খুলে সাজ্জাদকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। পুলিশ এসে লাশ নামিয়ে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থানায় নিহত সাজ্জাদের পরিবারের পক্ষ থেকে সাবরিনা ও তার প্রেমিক ফাহাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হলেও পুলিশ প্রথমে ব্যবস্থা নেয়নি। পরে ঢাকায় অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসের পক্ষ থেকে পুলিশের উপর মহলে যোগাযোগ করার পরেই ঘুম ভাঙে স্থানীয় থানার। ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার ইফতেখায়রুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, সাজ্জাদের রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় তাঁর স্ত্রীর প্রেমিক কাজী ফাহাদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে এখনও অধরা সাবরিনা। শোয়েব আত্মহত্যা করেছেন, নাকি তাকে হত্যা করা হয়েছে- ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরই নিশ্চিত করে বলা যাবে।