নিজস্ব প্রতিনিধি: বাঁকুড়া-১ নম্বর ব্লকের কালাবতি গ্রামে আলাদা করে দুর্গা কিংবা কালীপুজো হয় না। এখানকার বাসিন্দারা প্রাচীন কাল থেকেই মহা সরস্বতীর পুজো করে উৎসবে মাতেন। দেবী এখানে অষ্টভুজা, প্রত্যেক হাতেই অস্ত্র। নীলবর্ণা দেবী বাঘের পিঠে চড়ে বধ করছেন শুম্ভ ও নিশুম্ভকে। পায়ের তলায় কাটা মুণ্ড এবং মাথার উপরে ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বর ও ইন্দ্র। এবং দেবীর দু’পাশে রয়েছে জয়া-বিজয়া। পুজো হয় দীপাবলীর রাতেই। মোট তিনদিনের পুজো। দীপাবলীর সারারাত মহা সরস্বতীর পুজো করার পর ভোররাতে হয় বলি। পরদিন সকালে হয় কুমারী পুজো ও হোম-ষজ্ঞ। এরপর হয় চণ্ডীপাঠ। তৃতীয় দিনেও পুজো, চণ্ডীপাঠের পর হয় সিঁদুর খেলা। তারপর দেবীর ঘট বিসর্জন। কিন্তু প্রতিমা বিসর্জন হয়না, মন্দিরেই সারা বছর রেখে দেওয়া হয়। কারণ প্রতি অমাবস্যায় দেবীর পুজো হয় এই মন্দিরে। পুরোনো প্রতিমা বিসর্জন হয় প্রতি বছর মহালয়ার দিন।
স্থানীয়রা বলেন এই পুজোর ইতিহাস শতাব্দী প্রাচীন। তবে মন্দিরের প্রধান পুরোহিত জানিয়েছেন, মোটামুটি ৮৫ বছর আগের ইতিহাস জানা যায়। কালাবতি গ্রামেরই রামলাল চৌধুরী গিয়েছিলেন বিন্ধ্য পর্বত দর্শন করতে। সেখানেই তিনি এই পুজোর জন্য স্বপ্নাদেশ পান। এরপর গ্রামে ফিরে তিনি পুরোহিত রামরতন মুখুটিকে ডেকে ঘট পেতে মায়ের পুজো শুরু করেন। পরে আবারও স্বপ্নাদেশ পেয়ে রামলাল প্রতিমা তৈরি করান বড়জোড়া গ্রামের এক মৃৎশিল্পীকে দিয়ে। স্বপ্নাদেশেই ঠিক হয় প্রতিমার গায়ের রং ও রূপ। সূর্য অস্ত গেলে তার রঙ যেমন হয় এখানে প্রতিমার গায়ের রঙও ঠিক তেমনই। কালাবতি গ্রামের এই সর্বজনীন পুজো মূলত তাম্বুলি সম্প্রদায়ের। পুজো পরিচালনার জন্য রয়েছে কালাবতি সর্বষোলআনা কমিটি।