এই মুহূর্তে

পুজোর আগে কেউ কালী প্রতিমা বাড়িতে রাখেন না! জানুন সারদা মা ও রঘু ডাকাতের কাহিনী

নিজস্ব প্রতিনিধি : সামনেই কালীপুজো। প্রত্যেক বছরের ন্যায় হুগলির সিঙ্গুরে অবস্থিত ডাকাতকালী মন্দিরও সেজে ওঠে। বৈদ্যবাটী-তারকেশ্বর রোডের পাশে পুরুষোত্তমপুর এলাকায় এই ডাকাতকালী মন্দির ঘিরে রয়েছে পুরনো ইতিহাস। এই কালী মন্দিরে নিয়ম করে নিত্য পুজো হয়। তবে কালী পুজোর সময়ে হয় বিশেষ পুজো। কালীপুজোর দিন মায়ের ভোগে থাকে লুচি ভোগ, পুজোর নৈবিদ্য হিসেবে দেওয়া হয় ফল।কালী পুজোর দিন চার প্রহরে চার বার পুজো ও পাঁঠা বলিও হয়।

তবে এই পুজোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল পুজোর আগে কেউ কালী প্রতিমা বাড়িতে রাখেন না।মল্লিকপুর গ্রামে এই ডাকাতকালী মন্দির থাকার কারণে আশেপাশের জামিনবেরিয়া, পুরষোত্তমপুর ও মল্লিকপুর গ্রামে কোনও বাড়িতে কালীপুজো হয় না। এমনকী কারও বাড়ির দেওয়ালে টাঙানো থাকে না বা ক্যালেন্ডারে আঁকা থাকে না কালী মূর্তির ছবি। বছরে একবার কালীপুজোর দিন গ্রামের ‘শুদ্রদের’ আনা গঙ্গাজলে ঘটের জল পাল্টানো হয়। ঘটের জল পাল্টানোর সময় মন্দিরের দরজা বন্ধ করে রাখা হয়। সেইসময় মহিলাদের মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রবেশ নিষেধ থাকে।

আজ থেকে প্রায় ৫০০ থেকে ৫৫০ বছর আগের কথা। লোকমুখে শোনা যায় এই মন্দিরের অতীত সম্পর্কে। কথিত আছে, একবার অসুস্থ ঠাকুর রামকৃষ্ণকে দেখতে মা সারদা কামারপুকুর থেকে দক্ষিণেশ্বর যাচ্ছিলেন। সেই সময় কুখ্যাত রঘু ডাকাত ও গগন ডাকাত মায়ের পথ আটকে দাঁড়ান।তবে আচমকা তাঁরা ভয়ে কেঁপে ওঠেন। তাঁরা দেখেন যে মা সারদা নয়,স্বয়ং মা কালী সামনে রয়েছে।তেমনই রক্ত চক্ষু ও হুবহু দেবী কালী।ডাকাতদের আর বুঝতে বাকি রইল না যে সারদা মা সাক্ষাৎ কালী। তখন ডাকাতরা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে মা সারদার কাছে ক্ষমা চান। এদিকে বেলা তখন প্রায় সন্ধে। তাই সেই রাতে তাঁদের আস্তানায় মা সারদাকে থাকার ব্যবস্থা করে দেয় ডাকাতরা।

আরও পড়ুন : কৃষ্ণ স্বয়ং কালী, জানেন কী সেই কৃষ্ণকালী রূপের রহস্য?

তখন নাকি মায়ের রক্ত চক্ষু দেখতে পান। মা কালীর মুখ দেখতে পান ডাকাতরা।ভুল বুঝতে পেরে মা সারদার কাছে ক্ষমা চান ডাকাত দল। সন্ধে নামায় সেই রাতে ডাকাতদের আস্তানায় একরাত থাকার জন্য মা সারদাকে অনুরোধ জানান এবং থাকারও ব্যবস্থা করে দেন ডাকাতরা। মা সারদাকে ডাকাতরা খেতে দেন চালকড়াই ভাজা। এতে খুশি হয়েছিলেন সারদা দেবী। অতীতের সেই রেওয়াজ মেনেই আজও কালিপুজোর দিনে মায়ের প্রসাদ হিসাবে চালকড়াই ভাজা দেওয়া হয় এই মন্দিরে।

এই নিয়ে মন্দিরের ট্রাস্টি বোর্ডের সম্পাদক মদন মোহন কোলে জানান, ‘আগে ডাকাতরা মাটির কুঁড়ে ঘর বানিয়ে মা কালীর মূর্তি প্রতিষ্ঠা করে পুজো শুরু করে। পরে বর্ধমানের রাজা মন্দির তৈরির জন্য জমি দান করেছিলেন। পরবর্তীতে স্বপ্নাদেশ পেয়ে সিঙ্গুর থানার চালকেবাটি গ্রামের মোড়লরা এই মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেন। কালী পুজোর দিন মোড়লদের পুজোর পর অন্য ভক্তদের পুজো শুরু হয়।’

আরও পড়ুন : রাতেই হয় পুজো থেকে বিসর্জন,এখানে সূর্যের মুখ দেখেন না মা কালী

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

রাজার নির্দেশে চাঁচলের ৩৫০ বছরের রীতি মেনে কালী প্রতিমা কাঁধে নিয়ে দৌড় ভক্তদের

মা সেজেছেন দশ হাত-পায়ে, বসিরহাটেই এবার উজ্জয়ণের মহাকালেশ্বর মন্দির

মা কালীকে বিসর্জন দিতে গিয়ে কালীর কোলে বিলীন হয়েছিলেন রামপ্রসাদ 

৪০০ বছর আগে ডাকাতদের হাত ধরে শুরু হয়েছিল এই কালী পুজো

জানুন দক্ষিণেশ্বরে কালীপুজোর মহাভোগে কী থাকছে, রইল বিশেষ প্রণালী

ঘরে উপচে পড়বে ধন-সম্পদ, জেনে নিন দীপাবলিতে লক্ষীপুজোর সময়কাল এবং নিয়ম

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর