নিজস্ব প্রতিনিধি: শুধুই কি বাগদেবীর আরাধনা হয় বসন্ত পঞ্চমীতে? হয় কামদেবের উপাসনাও। কে এই কামদেব (KAMA DEVA)? তিনি প্রেম, কামনা, বাসনার দেবতা। আবার কোথাও তিনি স্বর্গীয় উদ্ভিদের উপদেবতা। অথর্ব বেদ অনুযায়ী, ‘কাম’ মানে ‘যৌন আকাঙ্খা’ নয়। এর অর্থ ‘মঙ্গলাকাঙ্খা’। তিনি বীর যোদ্ধাও।
কৃষ্ণ এবং রুক্মিণী’র পুত্র প্রদ্যুম্ন- কামদেবের একটি অবতার। কামদেবের মা- দেবী শ্রী। আবার কোথাও বলা হয়েছে, তিনি ব্রহ্মার মানসপুত্র। কখনও তিনি বিষ্ণুর পুত্র। কখনও বা ব্রহ্মাকন্যা শতরূপার সন্তান। আবার কখনও কামদেবই হয়ে উঠেছেন কৃষ্ণের অংশ। উল্লেখ্য, কামদেব বলতে শিব, কৃষ্ণ, অগ্নি, বিষ্ণুকেও বিভিন্ন সময়ে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে ‘কামদেব’ হলেন দেবতা মদন। তাঁর স্ত্রী- রতি। সঙ্গী- ঋতুরাজ বসন্ত। তিনি দেবরাজ ইন্দ্রের ভক্ত।
আরও পড়ুন: বাঙালির লক্ষ্মী’র কিন্তু হাত দুটো, মনে থাকবে?
সুদর্শন পুরুষ এই দেবতা। তাঁর চুল কোঁকড়ানো ও নীল রঙের। চোখ, মুখমণ্ডল, পায়ের পাতা এবং নখ লাল রঙের। তাঁর গায়ে বকুলের গন্ধ। অস্ত্র বলতে তির ও ধনুক। তবে এই ধনুক আখের তৈরি। ধনুলের গুণ- মৌমাছির সমাহার। আর তির তৈরি- অশোক, সাদা পদ্ম, নীল পদ্ম, আমের মুকুল ও মল্লিকা ফুল দিয়ে।
প্রজাপিতা ব্রহ্মার বর ছিল, তারকাসুরের নিধন হবে শিবপুত্রের দ্বারা। দেবাদিদেব শিব তখন হিমালয়ে ধ্যানমগ্ন। দেবী পার্বতী আসতেন শিবের পুজো করতে। তখনও তাঁদের বিয়ে হয়নি। এদিকে শিবপুত্র ছাড়া তারকাসুরের বিনাশ সম্ভব নয়। দেবতাদের পরামর্শে বন্ধু বসন্ত এবং স্ত্রী রতিকে নিয়ে ওই স্থানে এলেন কামদেব। হিমালয় জুড়ে বসন্তের পরিবেশ আনলেন ঋতুরাজ। নৃত্যগীত শুরু করেছিলেন মদন ও রতি। কামদেব (মদন) যোগীপরুষকে লক্ষ্য করে পঞ্চবাণ নিক্ষেপ করেন। তবু নির্বিকার দেবাদিদেব। তবে ক্রুদ্ধ শিব তাঁর তৃতীয় নয়ন থেকে তেজরশ্মি বের করে ভস্ম করেন কামদেবকে।
আরও পড়ুন: দেব সৈন্য পরিচালনা করেছিলেন বলেই কার্তিক ‘দেবসেনাপতি’? কারণ আছে আরও…
এরপরে কঠোর তপস্যা করে পার্বতী বিবাহ করেছিলেন মহাদেবকে। সেই সময় রতির প্রার্থনার পরে শিবের বরে কামদেব কায়াহীন ছায়া হয়ে প্রকট হন। পরে তিনি কৃষ্ণপুত্র হয়ে জন্মগ্রহণ করেন।