নিজস্ব প্রতিনিধি: পরিস্থিতি কার্যত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেল। গত ২৪ ঘন্টায় রাজ্যে একদিনে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ১২৮ জন। তার মধ্যে শুধু কলকাতায় আক্রান্ত হয়েছেন এক হাজার ৯০ জন। ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে মারণ ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়েছে ১০০ শতাংশের কাছাকাছি। প্রাণঘাতী ভাইরাসের মৃত্যুমিছিলে সামিল হয়েছেন ১২ জন। নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৪৭ শতাংশে।
বুধবারই রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে অশনিসঙ্কেত মিলেছিল। ১৭৭ দিন বাদে দৈনিক সংক্রমণ হাজারের গণ্ডি ছাড়িয়ে গিয়েছিল। বড়দিন উপলক্ষে সাধারণ মানুষ যেভাবে কোভিড বিধিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে উৎসবের নামে বেলেল্লাপনায় মেতে উঠেছিল, তাতে এমনটা হওয়ার কথা ছিল বলেই মনে করেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে সংখ্যাটা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে উঠেছিল।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দুঃসংবাদটা জানাল স্বাস্থ্য দফতর। দৈনিক করোনা বুলেটিনে জানানো হয়েছিল, ‘গত ২৪ ঘন্টায় রাজ্যের ১৫৫টি ল্যাবরেটরিতে ৩৮ হাজার ৮৯৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। নয়া নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৪৭ শতাংশে। একদিনে নতুন করে ২ হাজার ১২৮ জনের শরীরে মারণ ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। ১৯১ দিন বাদে রাজ্যে প্রাণঘাতী ভাইরাসের দৈনিক সংক্রমণ দু’হাজারের গণ্ডি পার করল। চলতি বছরের ২০ জুন রাজ্যে মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন ২ হাজার ১৮৪ জন। দৈনিক সংক্রমণ যেমন বেড়েছে তেমনই দৈনিক মৃত্যুও চোখ রাঙাচ্ছে। আগের দিনের মতো গত ২৪ ঘন্টায় প্রাণঘাতী ভাইরাসের ছোবলে মৃত্যুমিছিলে সামিল হয়েছেন ১২ জন। এ নিয়ে রাজ্যে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৯ হাজার ৭৫৭ জন।’
সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়েই কলকাতায় করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠছে। আগের দিনই মহানগরীতে একদিনে আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচশোর গণ্ডি ছাড়িয়েছিল। আর এদিন হাজারের গণ্ডি ছাড়াল। নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১,০৯০ জন। মারণ ভাইরাসের ছোবলে প্রাণ হারিয়েছেন চার জন। উত্তর ২৪ পরগনায় একদিনে দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে সংক্রমণ। আগের দিন আক্রান্ত হয়েছিলেন ১৪৫ জন। আর গত ২৪ ঘন্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩১৫ জন। প্রাণ হারিয়েছেন দুই জন। হাওড়ায় দৈনিক সংক্রমণ যেমন দেড়শোর গণ্ডি ছাড়িয়েছে, তেমনই দক্ষিণ ২৪ পরগনায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা একশোর গণ্ডি পেরিয়েছে।
শুধু দৈনিক সংক্রমণই নয়, সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধিও উদ্বেগ বাড়িয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য অনুযায়ী, ‘মারণ ভাইরাসকে হারিয়ে একদিনে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১,০৬৭ জন। সুস্থতার হার এক ধাক্কায় কমে দাঁড়িয়েছে ৯৮ দশমিক ২৫ শতাংশে। একদিনে অ্যাকটিভ কেসের সংখ্যা বেড়েছে ১,০৪৯টি। সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৭৭৬ জনে।