নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: ঠ্যালার নাম বাবাজি। ‘ধোঁকা’ বিজ্ঞাপন নিয়ে শীর্ষ আদালত তলব করতেই সুড়সুড় করে ক্ষমা চাইলেন যোগগুরু বাবা রামদেবের সঙ্গী তথা পতঞ্জলির ম্যানেজিং ডিরেক্টর বালকৃষ্ণ। সেই সঙ্গে আশ্বাস দিয়েছেন, ভবিষ্যতে এমন বিভ্রান্তিমূলক বিজ্ঞাপন দেওয়া হবে না। গতকাল বুধবার সুপ্রিম কোর্টে জমা দেওয়া হলফনামাতেই নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন পতঞ্জলি আয়ুর্বেদ সংস্থার শীর্ষ কর্তা।
গত মঙ্গলবারই ‘মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর’ বিজ্ঞাপন মামলায় পতঞ্জলি আয়ুর্বেদ সংস্থার দুই শীর্ষ কর্তা যোগ গুরু বাবা রামদেব ও তার স্যাঙাত বালকৃষ্ণকে তলব করেছিল শীর্ষ আদালত। মামলার পরবর্তী শুনানির দিনে তাদের দুজনকেই হাজিরার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতিরা। কেন কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া সত্বেও তার জবাব দেওয়া হয়নি, সশরীরে হাজির হয়ে তার কারণ জানাতে হলফনামা জমা দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। সেই নির্দেশ মেনে জমা দেওয়া হলফনামায় বালকৃষ্ণ জানিয়েছেন, দেশের শীর্ষ আদালত ও বিচার ব্যবস্থার প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা রয়েছে।
রামদেবের পতঞ্জলির বিজ্ঞাপনে অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসা ও চিকিৎসকদের অপমান করা হয়েছে অভিযোগ তুলে মামলা দায়ের করেছিল চিকিৎসকদের সর্বভারতীয় সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন। আর্জিতে বলা হয়েছিল, করোনা অতিমারীর সময়ে কোভিড প্রতিরোধি না হওয়া সত্বেও মানুষকে ধোঁকা দিয়ে করোনিল কিট বিক্রি করেছিল রামদেবের সংস্থা। আড়াইশো কোটির বেশি টাকা মুনাফা লুঠেছিল। গত বছরের নভেম্বর মাসে মামলার শুনানিতে পতঞ্জলির মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপন নিয়ে রামদেবের সংস্থার বিরুদ্ধে তোপ দেহেছিলেন শীর্ষ আদালতের বিচারপতিরা। অবিলম্বে সংবাদমাধ্যমে ওই মিথ্যা বিজ্ঞাপন বন্ধ না করা হলে জরিমানা হতে পারে বলে মৌখিকভাবে সতর্কও করে দিয়েছিলেন বিচারপতিরা।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে মামলার শেষ শুনানিতে পতঞ্জলির মিথ্যা বিজ্ঞাপন বন্ধে মোদি সরকারের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা। বিরক্তির সুরে তারা বলেন, ‘দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করা সত্বেও সরকার চোখ বন্ধ করে রয়েছে।’ সেই সঙ্গে বৈদ্যুতিন মাধ্যম এবং সংবাদপত্রে পতঞ্জলির ওষুধের বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপন অবিলম্বে বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। পাশাপাশি কেন আদালত অবমাননার দায়ে পতঞ্জলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে তা জানতে চেয়ে রামদেব ও তার স্যাঙাত তথা পতঞ্জলির ম্যানেজিং ডিরেক্টর বালকৃষ্ণকে নোটিশও পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু সেই নোটিশের জবাব দেননি ‘মোদি সরকারের’ ঘনিষ্ঠ দুই পরাক্রমশালী।