নিসর্গ নির্যাস: ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় শিউরে উঠেছে গোটা দেশ। এখনও করমণ্ডল (Coromandel Express) থেকে চলছে উদ্ধারকাজ। বাড়ছে লাশের স্তূপ। গত শুক্রবারে মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পরে এখনও থামেনি কান্নার রোল- আর্তনাদ। আহতদের উদ্ধার করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন স্থানীয়রা। তার মাঝেই চলল দেদার লুঠ। ‘মৃত্যু উপত্যকা’র অসহায় যাত্রীরা একই সঙ্গে দেখলেন ঈশ্বর এবং দানবদের।
অন্ধকারে উদ্ধারকাজ হচ্ছিল অত্যন্ত সাবধানতার সঙ্গে ধীরে ধীরে। গ্যাসকাটার দিয়ে বের করে আনা হচ্ছিল আটকে থাকা যাত্রীদের। রেল আধিকারিক-মেডিক্যাল টিম- বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী-পুলিশ এবং দমকল আসার আগে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন স্থানীয়রাই। চাপা পড়া- আটকে থাকা যাত্রীদের বের করে নিয়ে আসছিলেন। বাড়িয়ে দিচ্ছিলেন জল। তাঁদের উদ্যোগেই শুরু হয় জখমদের স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া। কিন্তু ‘মানবিক’ মুখের মাঝেই ঢুকে গেল স্বার্থান্বেষী ‘বেনোজল’। আহত এবং নিহতদের গলা থেকে টান মেরে ছিঁড়ে নিল হার। উপড়ে নিল কানের দুল। হ্যাঁচকা মেরে খোলা হলো চুড়ি। মৃতের স্তূপ আর আহতদের গোঙানির মাঝেই চলল ব্যাগ-টাকা হাতিয়ে নেওয়া। ছিনিয়ে নেওয়া হলো মোবাইলও। ‘খাজানা’ পেয়ে উল্লাসে মেতে উঠছে একদল মানুষ।
এই বীভৎস পরিস্থিতিতে কারা চালাল তাণ্ডব? বোঝা সম্ভব নয়। অন্ধকারে শুধু দেখা গিয়েছে কিছু অবয়ব- ‘ঠিক মানুষের মতো’। গতকাল ‘ছায়া মানব’দের সেই ভিড়েই মিশে ছিল ত্রাতা এবং দস্যু। কোনটা কে-তা চিহ্নিত করা যায় না। অসহায়দের চোখে সকলেই আবছা।
গতকাল যশবন্তপুর এক্সপ্রেসের যাত্রী ছিলেন উপমা দাস। দেখেছিলেন, ছিনিয়ে নেওয়া হচ্ছে হার। শিউরে উঠেছিলেন। এখনও আতঙ্কিত তিনি। ‘ঘোর’ লাগা অবস্থাতেই গন্তব্যে ফিরতে ফিরতে তিনি বললেন, ‘মনে হয় স্থানীয়রাই’। জানা গিয়েছে, ভোর হতেই সেই ‘দস্যু’রা বেমালুম ভ্যানিস। যাত্রীদের প্রশ্ন, ‘এ কোন সকাল রাতের চেয়েও অন্ধকার/ ও কি সূর্য না কি স্বপনের চিতা/ ও কি পাখির কুজন নাকি হাহাকার’