নিজস্ব প্রতিনিধি: কী মর্মান্তিক! নিখোঁজ হওয়ার ১ বছর পর থাইল্যান্ডের একজন ৩১ বছর বয়সী মডেলের মরদেহ মিলল বাহরাইনের একটি মর্গ থেকে। নিহত মডেলের নাম কাইকান কেননাকাম। চীনের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, তাঁর দেশে চাকরির সুযোগ কমে যাওয়ার কারণে কাইকান মডেলিং থেকে সরে যান। এবং সে মধ্যপ্রাচ্যের একটি রেস্তোরাঁয় চাকরি নেন। চাকরির জন্যই তিনি ৩ বছর আগে বাহরাইনে চলে আসেন। তাঁর পরিবার যেহেতু আর্থিক দিক থেকে অচল, তাই তিনি উত্তর-পূর্ব থাইল্যান্ডে অবস্থানরত তাঁর পরিবারকে সমর্থন করার বাহারাইনে চলে যান। সেখানেই একটি রেস্তোরাঁয় কাজে লেগে পড়েন। সেখানে কর্মরত অবস্থায় প্রায়শই তিনি নিজের নানা আপডেট সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাগ করে নিতেন।
প্রাক্তন মডেলের পারিবারিক সূত্র অনুযায়ী, নিহত মডেল বাহরাইনের একটি ছেলের সঙ্গে প্রেম করতেন, প্রেমিকের সঙ্গেই সে দেশে চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে আচমকাই কাইকান তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া বা অনলাইন কার্যকলাপ বন্ধ করে দেন। এমনকি তাঁর ফোনেও যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছিল না কারোর। এরপরেই মডেলের পরিবার এবং আত্মীয়দের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়। দীর্ঘদিন ধরে তাঁর সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করতে পারেনি। এরপর এ বছর জানুয়ারিতে, তাঁর পরিবারের অনুরোধে থাই দূতাবাস থেকে সহায়তা চাওয়া হয়। বাহরাইনের থাই সম্প্রদায়ের মধ্যে তাঁকে অনেক খোঁজার চেষ্টা করা হলেও কাইকানকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। দুঃখজনকভাবে, নিখোঁজ হওয়ার প্রায় ১ বছর তাঁর কোনও খোঁজ মেলেনি।
এরপর গত ১৮ এপ্রিল, বাহরাইনের থাই দূতাবাস কাইকানের পরিবারকে জানায় যে, সালমানিয়া মেডিকেল কমপ্লেক্স মর্গে একজন অজ্ঞাত দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় মহিলার মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছে। এরপর ওই মডেলের পায়ে একটি ট্যাটু দেখে তাঁর পরিবার কাইকান কেননাকামের দেহ শনাক্ত করেন। তাঁর মৃত্যুর উল্লিখিত কারণ হিসেবে জানা যায়, অ্যালকোহল বিষক্রিয়ার কারণে তীব্র ফুসফুস এবং হৃদযন্ত্রের ব্যর্থ হয়ে মারা গিয়েছেন কাইকান।
তবে কাইকানের বোন সুথিদা এনগারনথাওর্ন, কাইকানের মৃত্যুর কারণ নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ পোষণ করছেন। কারণ কাইকানের শরীরের ফটোগ্রাফগুলি ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, তাঁর শরীরে অনেক ক্ষত রয়েছে। নিখোঁজ হওয়ার আগে, কাইকান সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি এবং ভিডিও শেয়ার করেছিলেন যাতে তার শরীরে দাগ এবং কাটা দিয়ে সজ্জিত ছিলল। এখন নিহত মডেলের পরিবার তাঁর মৃতদেহ থাইল্যান্ডে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন, কারণ ভ্রমণ বীমা ছাড়াই তাঁর মৃতদেহ থাইল্যান্ডে আসতে প্রচুর খরচা হতে পারে। সেই কারণ, তাঁর পরিবার থাইল্যান্ডের নারী ও শিশুদের জন্য নিবেদিত একটি দাতব্য সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা পাভিনা হংসাকুলের সাহায্য চেয়েছে।