এই মুহূর্তে




রাহুলের দাবি মানল মোদি সরকার, দেশজুড়ে হবে জাতিগত সুমারি




নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়া দিল্লি: বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে একটি ‘সুপার ক্যাবিনেট’ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে বুধবার। সেখানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার কয়েকজন শীর্ষমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন। এতে জনগণনা সহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সরকার আদমসুমারির পাশাপাশি বর্ণ-গণনা করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বৈঠকের পর, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন যে আসন্ন জনগণনাতে জাতিগত সুমারিও হবে।

প্রকৃতপক্ষে, রাজনৈতিক বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটি ‘সুপার ক্যাবিনেট’ নামে পরিচিত কারণ এতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার শীর্ষ মন্ত্রীরা অন্তর্ভুক্ত থাকেন। সিসিপিএ-র বর্তমান সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনিই ক্যাবিনেটের সভাপতি। সঙ্গে রয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, সড়ক পরিবহনমন্ত্রী নীতিন গড়করি, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন এবং বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলও এতে অন্তর্ভুক্ত।

প্রেস ব্রিফিংয়ে অশ্বিনী বৈষ্ণব জানান কেন্দ্রীয় সরকার শিলং এবং শিলচরের মধ্যে একটি নতুন মহাসড়ক নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছে, যার মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ২২,৮৬৪ কোটি টাকা। এর পাশাপাশি, ২০২৫-২৬ আখ মরসুমে কৃষকদের স্বস্তি প্রদানের জন্য, প্রতি কুইন্টাল ৩৫৫ টাকা ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (এমএসপি) অনুমোদিত হয়েছে।

কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রীর কথায়, “আজ অনুষ্ঠিত রাজনৈতিক বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটির (সিসিপিএ) বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে পরবর্তী আদমসুমারিতে বর্ণ-গণনা অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এটিকে একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে, কারণ এখনও পর্যন্ত বর্ণ-গণনা মৌলিক আদমসুমারির অংশ ছিল না। কিছু রাজ্য তাদের নিজস্ব স্তরে বর্ণ জরিপ করেছে, কিন্তু সামাজিক কাঠামো বোঝার জন্য একটি সামগ্রিক পদ্ধতির প্রয়োজন। সিসিপিএ সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে এখন পরবর্তী আদমশুমারিতে বর্ণ গণনা করা হবে, কোনও পৃথক জরিপের অধীনে নয়।”

নিজ বক্তব্যের মাঝে কংগ্রেসকে বিঁধতে ভোলেননি অশ্বিনী। তিনি বলেন, “কংগ্রেস সরকারগুলি আজ পর্যন্ত বর্ণগত আদমসুমারির বিরোধিতা করে এসেছে। স্বাধীনতার পর সকল আদমসুমারিতে জাত গণনা করা হয়নি। ২০১০ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত ডঃ মনমোহন সিং লোকসভায় আশ্বাস দিয়েছিলেন যে মন্ত্রিসভায় বর্ণগত আদমসুমারির বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। এর পরে একটি মন্ত্রিসভা গোষ্ঠীও গঠন করা হয়, যেখানে বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল বর্ণ ভিত্তিক আদমসুমারির সুপারিশ করে। তা সত্ত্বেও, কংগ্রেস সরকার জাতিগত আদমশুমারির পরিবর্তে একটি জরিপ পরিচালনা করা উপযুক্ত বলে মনে করেছিল, যা SECC নামে পরিচিত।”

এরপর তিনি কড়া ভাষায় কংগ্রেস ও ইন্ডি জোটকে আক্রমণ করে বলেন, “এত কিছুর পরেও কংগ্রেস এবং ইন্ডি জোট কেবল তাদের রাজনৈতিক লাভের জন্য জাতিগত আদমসুমারির বিষয়টি ব্যবহার করেছে। সংবিধানের ২৪৬ অনুচ্ছেদের ইউনিয়ন তালিকার ৬৯ নম্বর ক্রমিক ধারায় আদমসুমারির বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। এটি একটি কেন্দ্রীয় বিষয়। তবে অনেক রাজ্য জরিপের মাধ্যমে বর্ণ-গণনা পরিচালনা করেছে। যেখানে কিছু রাজ্যে এই কাজটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। অন্যদিকে, কিছু রাজ্য রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে এবং অস্বচ্ছ পদ্ধতিতে জরিপটি পরিচালনা করেছে। এই ধরণের জরিপ সমাজে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে দিয়েছে। এই সমস্ত পরিস্থিতি মাথায় রেখে এবং আমাদের সামাজিক কাঠামো যাতে রাজনৈতিক চাপের মুখে না পড়ে তা নিশ্চিত করে, জরিপের পরিবর্তে মূল আদমশুমারিতে বর্ণ গণনা অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।”

রেল ও তথ্যসম্প্রচার মন্ত্রীর আরও সংযোজন, “এর ফলে সমাজ অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে শক্তিশালী হবে এবং দেশের অগ্রগতি নিরবচ্ছিন্নভাবে অব্যাহত থাকবে। আজ ৩০.০৪.২০২৫ তারিখে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে রাজনৈতিক বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে আসন্ন আদমসুমারিতে বর্ণ গণনা অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। এর থেকে বোঝা যায় যে বর্তমান সরকার দেশ ও সমাজের স্বার্থ ও মূল্যবোধের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এর আগেও, যখন সমাজের দরিদ্র শ্রেণির জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণের বিধান করা হয়েছিল, তখনও সমাজের কোনও অংশের মধ্যে কোনও উত্তেজনা ছিল না।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কংগ্রেসকে এখন বিঁধলেও একথা সত্য এর আগে একাধিক নির্বাচনী সভায় গিয়ে লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে জাতিগত আদমসুমারি করার কথা বলেছেন। কংগ্রেস দলনেতার বক্তব্য ছিল, এই গণনার ফলে দেশের গরিব,আদিবাসী, দলিতরা নিজেদের অধিকার সম্পর্কে জানতে পারবে। বড় বড় কোম্পানি, সরকারি চাকরিতে কত গরিব,আদিবাসী, দলিত কাজ করছে তা জানা যাবে। জাতি গণনা গরিব,আদিবাসী, দলিতদের হাতিয়ার। রাহুল এমনটাও বলেছিলেন যে, দেশের ৯০ শতাংশ মানুষ সিস্টেমের অংশ নয়। তাদের দক্ষতা, প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও তাঁরা সিস্টেমের সঙ্গে যুক্ত নন। তাই কংগ্রেস জাতগণনার দাবি করছে। অবশেষে পূর্ণ হতে চলেছে রাহুলের দাবি।




Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

পাকিস্তানি আরও এক দূতকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে দেশ ছাড়ার নির্দেশ

সাইফুল্লাহর শোকসভায় ভারতের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার, সন্ত্রাসীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন পাক সেনার

ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরে ‘আল্লাহ কে বান্দে …’ গেয়ে হিন্দুত্ববাদীদের হেনস্থার শিকার হিন্দু শিল্পী

রামমন্দিরের নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ জুনের মধ্যে, রাম দরবারের প্রাণ প্রতিষ্ঠা ৫ জুন

চলন্ত ট্রেন থেকে ছুঁড়ে ফেলা হল স্যুটকেস, ভিতরে মহিলার দেহ, চাঞ্চল্য স্টেশন চত্বরে

পাকিস্তানেই শিকড় জ্যোতিদের, সেই টানেই কী গদ্দারি ইউটিউবারের?

Advertisement




এক ঝলকে
Advertisement




জেলা ভিত্তিক সংবাদ