নিজস্ব প্রতিনিধি: দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার(Chief Election Commissioner) ও অন্যান্য কমিশনারদের নিয়োগ নিয়ে নতুন আইন এনেছে কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদির(Narendra Modi) সরকার। সেই আইনে নির্বাচন কমিশনার বাছাইয়ের প্যানেলে সুপ্রিম কোর্টের(Supreme Court) প্রধান বিচারপতিকে(Chief Justice) বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই আইন নিয়েই এবার কেন্দ্রকে নোটিস পাঠাল দেশের শীর্ষ আদালত। কেন্দ্রের নয়া আইনকে চ্যালেঞ্জ করে একাধিক আবেদন জমা পড়েছে সুপ্রিম কোর্টে। সেই সব আবেদনের শুনানি চলছে একসঙ্গেই। সেই সূত্রেই এদিন অর্থাৎ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চ এদিন জানিয়েছে, তাঁরা সংশোধিত আইনের ওপরে কোনও স্থগিতাদেশ জারি করতে পারেন না। তবে তাঁরা কেন্দ্রকে নোটিস দিচ্ছেন। এপ্রিল মাসের মধ্যে এই নোটিসের জবাব দিতে হবে। নোটিসে জানতে চাওয়া হবে সংশোধিত আইনের বৈধতা(Challenging the Validity of New Law)।
দেশের সংবিধান অনুযায়ী দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ও অনান্য কমিশনার নিয়োগ করেন দেশের রাষ্ট্রপতি। তিনি সেই সিদ্ধান্ত নেন দেশের প্রধানমন্ত্রী, লোকসভার বিরোধীন দলনেতা এবং সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে গঠিত প্যানেলের সুপারিশ ক্রমে। এই জায়গাতেই বদল এনেছে মোদি সরকার। তাঁরা ওই প্যানেল থেকে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে কেঁটেছেঁটে ফেলে দিয়ে সেখানে প্রধানমন্ত্রীর মনোনিত একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে ঢুকিয়ে দিয়েছেন। সেই সংশোধিত আইনকেই এখন সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন অনেকেই। সেই সব আবেদনের ভিত্তিতে গঠিত মামলার শুনানি হচ্ছে একসঙ্গেই। সেই সূত্রেই কংগ্রেস নেত্রী জয়া ঠাকুর, কেন্দ্রের আনা এই আইনের ওপরে স্থগিতাদেশ জারির আর্জি জানিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টে। তাঁর তরফে আইনজীবী বিকাশ সিং শুনানিকালে বলেন, ‘এই আইন ক্ষমতার বিভাজনের ভাবনার সম্পূর্ণ বিরুদ্ধ। নয়া আইনে গোটা ব্যবস্থায় রাজনীতিকদেরই তুলে ধরা হয়েছে। তাই এই আইন কখনই নিরপেক্ষ সিদ্ধান্তের মাধ্যম হয়ে উঠতে পারে না।’
যদিও সেই আর্জি মানেননি সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চ। তাঁদের দাবি, তাঁরা এই আইনের ওপরে কোনও স্থগিতাদেশ জারি করতে পারেন না। তবে ২০২৩ সালের ২ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ নয়া সংশোধিত আইনের খসড়া সামনে আসার পরিপ্রেক্ষিতে জানিয়ে দিয়েছিল, নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের প্যানেল থেকে সুপ্রিম কোর্টের প্রতিনিধিকে বাদ দেওয়া যাবে না। যতক্ষণ না ওই আইনের যথার্থ বিকল্প কোনও আইন না আসে ততক্ষণ পুরাতন পদ্ধতিই বজায় থাকবে। তার পরেও অবশু কেন্দ্র সরকার আইন করে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে বাদ দিয়েছে প্যালেন থেকে। তাই সুপ্রিম কোর্ট সেই নয়া সংশোধিত আইনের বৈধতা জানতে চেয়ে কেন্দ্রকে নোটিস পাঠাবে যার জবাব কেন্দ্রকে আগামী ৩ মাসের মধ্যে দিতে হবে। এপ্রিল মাসে এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।