এই মুহূর্তে

WEB Ad Valentine 3

WEB Ad_Valentine

দেবী চণ্ডীর রাজকীয় শোভাযাত্রার পর পুজো শুরু চাঁচলে

নিজস্ব প্রতিনিধি, চাঁচল: সপ্তমীর উষালগ্নে সিংহবাহিনী পৌঁছলেন পাহাড়পুরের চণ্ডী মন্দিরে। আয়োজন করা হয়েছিল রাজকীয় শোভাযাত্রার। পুরোহিতের মন্ত্রোচ্চারণ, ঢাকের বাদ্যির ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠল গোটা শহর। রাজা রামচন্দ্র রায়চৌধুরী বাড়ির সিংহবাহিনী পাহাড়পুরের চণ্ডী মন্দিরে পৌঁছতে শুরু হয়ে গেল সমগ্র চাঁচলে পুজো।

আজ থেকে প্রায় ৩০০ বছর আগে চাঁচলের রাজা রামচন্দ্র রায়চৌধুরী প্রথম এই প্রথা প্রচলন করেছিলেন। সেই থেকে আজও রাজার প্রাচীন প্রথা মেনে চাঁচলের রাজঠাকুর বাড়ি থেকে সপ্তমীর সকালে মহা শোভাযাত্রার মধ্যে দিয়ে দেবী চণ্ডীর কষ্টিপাথরের মূর্তিকে নিয়ে যাওয়া হয় চাঁচলের পাহাড়পুর চণ্ডী মন্দিরে। তবে এই প্রথার নেপথ্যে রয়েছে রাজ পরিবারের এক কাহিনী। তখন সপ্তদশ শতাব্দীর শেষভাগ। সেই সময় উত্তর মালদার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে রাজ করতেন রাজা রামচন্দ্র রায়চৌধুরি। বিহারের কিছু অংশও তাঁর রাজত্বের অন্তর্ভুক্ত ছিল। দোর্দণ্ডপ্রতাপ হলেও প্রজাদরদী এবং ধর্মপ্রাণ হিসেবে তাঁর নাম ছড়িয়ে পড়েছিল পূর্ব ভারত জুড়ে। নিয়মিত হাতির পিঠে চেপে তিনি বেরিয়ে পড়তেন রাজত্ব দেখাশোনা করতে। গঙ্গা-মহানন্দা দু’পাড়ের উর্বরা জমির চাষ পরিদর্শন, প্রজাদের সুখ-দুঃখের খবরাখবর নেওয়া ছিল তাঁর রোজনামচা। কখনও কয়েকদিন, আবার কখনও মাসাধিককাল পেরিয়ে বাড়ি ফিরতেন।

কথিত আছে, একবার তিনি যখন এভাবেই রাজত্ব দেখতে বেরিয়ে বাইরে রাত কাটাচ্ছিলেন, তখন তাঁকে স্বপ্নাদেশ দেন দেবী চণ্ডী। রাজাকে তিনি আদেশ দিয়েছিলেন, মহানন্দার সতীঘাটায় তাঁর চতুর্ভূজা অষ্টধাতু নির্মিত মূর্তি রয়েছে। রাজমাতাকে দিয়ে সেই মূর্তি নদী থেকে তুলে রাজাকে তা প্রতিষ্ঠা করতে হবে । শুরু করতে হবে দুর্গাপুজো। আদেশ পেয়ে পরদিন সকালেই সতীঘাটায় চলে যান রাজা। স্বপ্নাদেশে বর্ণিত জায়গায় নদীতে নেমে রাজমাতা তুলে আনেন দেবী চণ্ডীর মূর্তি। এই পুজোর আরও একটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে। কথিত আছে, একসময় সতীঘাটায়, মহানন্দার পশ্চিম পাড়ে মহামারী দেখা দিয়েছিল। তখন দেবী সেখানকার মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষকে স্বপ্নাদেশ দিয়েছিলেন, গোধূলিলগ্নে বিসর্জনের সময় তাঁরা যেন মাকে আলো হাতে পথ দেখায়। মাকে আলো দেখানোর পর থেকেই মহামারী দূর হয়। সেই রীতি-রেওয়াজ এখনও রয়েছে। তবে লণ্ঠন, মোমবাতির পাশাপাশি এখন মোবাইলের টর্চ জ্বালিয়েও অনেকে মায়ের যাত্রাপথে আলো দেখায়।

চাঁচল রাজ ট্রাস্টিবোর্ডের সুপারভাইজার দেবাজয় ভট্টাচার্য জানান, প্রাচীন প্রথা মেনে এখনও সপ্তমী তিথিতে রাজবাড়ি থেকে পাহাড়পুর দুর্গা দালানে নিয়ে আসা হয় অষ্টধাতুর চতুর্ভূজা মা চণ্ডীকে। দশমীতে তিনি ফের রাজবাড়িতে ফিরে যান। সপ্তমীর সকালে মহা ধুমধাম সহকারে ঢাকঢোল বাজিয়ে নিয়ে যাওয়া হল মা সিংহবাহিনীকে। সেখানে তিন দিন ধরে চলবে তার পুজো। তবে করোনার কারণে নিয়মে কিছুটা বদল আনা হয়েছে। মন্দিরের মূল ফটক বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সাধারণের জন্য গর্ভগৃহে ঢোকা নিষেধ। ঠাকুরদালানের বাইরে থেকেই মাকে পুজো দিতে পারবেন ভক্তরা।

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

জলপাইগুড়ির রাজবাড়িতে মা দুর্গার ভোগে দেওয়া হল পাঁচ রকমের মাছ

দশমীতে মাকে গঙ্গার উত্তর থেকে দক্ষিণে প্রদক্ষিণ করিয়ে দেওয়া হয় বিসর্জন….

মহিষাদল রাজবাড়ির অষ্টমী পুজো ঘিরে চরম উদ্দীপনা

বেঙ্গালুরুতে জমজমাট বনেদি পাল বাড়ির দুর্গাপুজো

জলপাইগুড়ির রাজবাড়ির পুজোয় আজও বলি হয় পায়রা

এই বনেদি বাড়িতে মহামায়াকে সোনার অলঙ্কার পরিয়েই বিসর্জনে পাঠানো হয়

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর