এই মুহূর্তে

WEB Ad Valentine 3

WEB Ad_Valentine

আটপৌরে শাড়িতে রাজবংশী বধূর সাজে ‘দেবী ঠাকুরানি’ দুর্গা

নিজস্ব প্রতিনিধি: সমগ্র বাংলাজুড়েই ভয়ালদর্শনা থেকে মমতাময়ী রূপে মা দুর্গার আরাধনা হয়। বছরের চারটে দিনের অপেক্ষায় থাকেন বঙ্গবাসী। আদতে মানুষের বিশ্বাস, ঘরের মেয়ের মতোই কৈলাশ থেকে উমা মর্তে আসেন বাপের বাড়ি। বাড়ির মেয়ের মতোই তাঁকে বরণ করে নেওয়া হয়। পুজোর জাঁকজমকেও সেই ছাপ স্পষ্ট থাকে। কারণ বছরে একবার ঘরের মেয়ে কয়েকদিন ফিরলে যেমন হইচই আনন্দ শুরু হয়, মা দুর্গার আগমনেও তাই হয়। আজ এক প্রাচীন পুজোর গল্প শোনাব, যা এই রীতির প্রকৃষ্ট উদাহরণ। মা এখানে গ্রাম্যবধূ, আটপৌরে শাড়িতে একদম অনাড়ম্বর সাজ। মুখের আদলে ধরা পড়ে মঙ্গোলীয় জনজাতির ছাপ। আসলে মা দুর্গা এখানে রাজবংশী বধূর সাজে ধরা দেয়। এই আটপৌরে শাড়ি পরা সাধারণ গ্রাম্যবধূ রূপের দুর্গা পুজো হয় একমাত্র জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ি ব্লকের আমগুড়ির বসুনিয়া পরিবারে।

আমগুড়ির বসুনিয়া পরিবারে গ্রামঠাকুর পুজো বা দেবী ঠাকুরানির আরাধনা গোটা জেলাতেই সমাদৃত। ষষ্ঠী থেকে নবমীতে যে আটপৌরে শাড়ি পরা সাধারণ গ্রাম্যবধূ রূপের দেবী প্রতিমার পুজো এই বাড়িতে শুরু হয়েছিল তার কোনও পরিবর্তন আজও ঘটেনি। যতদূর জানা যায়, ১৮১০ সাল থেকে এই আদলের দুর্গা প্রতিমা বসুনিয়া পরিবারে পুজো পেয়ে আসছে। তারপর পেরিয়েছে যুগের পর যুগ, কিন্তু মায়ের রূপ এখানে পরিবর্তন হয়নি। এখানে দেবীর পরনে লাল তাঁতের শাড়ি। চোখ, নাক ও মুখের গড়ন যেন ঘরের মেয়ে, স্থানীয় রাজবংশী জনজাতির ছাপ স্পষ্ট। দেবীর গায়েও আটপৌরে কয়েকটি গয়না। আর পুজোর আয়োজনেও তেমন কোনও আড়ম্বর নেই। পাশাপাশি মণ্ডপসজ্জাতেও খড়ের ছাউনি দেওয়া সাধারণ কুটির, তার তিন দিকে পাটকাঠির বেড়া। গ্রামের আর পাঁচটা সাধারণ বাড়ির মতোই বসুনিয়া পরিবারের দুর্গামণ্ডপ। ঐতিহ্যে অমলিন বসুনিয়া পরিবারের দেবী দুর্গা কিন্তু পরিচিত ‘দেবী ঠাকুরানি’ নামেই।

স্থানীয় ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, ২৬টি তালুক নিয়ে গঠিত জনবসতিপূর্ণ ময়নাগুড়ির নাম একসময় ছিল চাপগড়। ক্রমে বসুনিয়ারা ওই অঞ্চলের জোতদার হয়ে উঠেছিলেন। ধনবর বসুনিয়ার আমলেই এই পরিবারের প্রভাব প্রতিপত্তি বৃদ্ধি পায়, তিনিই এই পুজোর প্রচলন করেন। জানা যায়, তিনি নাকি স্বপ্নে দেবীর আদেশ পেয়েছিলেন। তিনিই এই রূপে দেবীর পুজো শুরু করেন। জানা যায়, পুজোর প্রথম বেশ কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশের রংপুর থেকে ঘোড়ার গাড়িতে প্রতিমা আনতে হয়েছে। এরপর সেই রংপুর থেকেই এক প্রতিমাশিল্পীকে আনা হয়েছিল আমবাড়িতে। একই ভাবে অসম থেকে পুরোহিত এবং ঢাকি এনে বসবাসের জায়গা করে দেন বসুনিয়া পরিবার। ধনবর পুজো শুরু করার ৫৯ বছর পরে ১৮৬৯ সালের ১ জানুয়ারি জেলা সদরের আত্মপ্রকাশ ঘটে।

রাজবংশী রীতি মেনে আজও পুজো হয় বসুনিয়া পরিবারে। মূর্তির আদল আজও বদল করা হয়নি। সাধারণ রাজবংশী বধূর রূপেই দেবী প্রতিমা তৈরি হয় প্রতিবছর। পুরোনো রীতি অনুসারে দেবীর মাথায় শোভা পায় শেয়ারা। বহুকাল আগে রাজবংশী সমাজে বিয়ের সময় কনেরা একধরণের মুকুট মাথায় পরতেন, তাকেই শেয়ারা বলা হতো। এছাড়া, মা দুর্গার আরাধনার আগে ‘গ্রামঠাকুর’-এর পুজো করা হয়। এই গ্রামঠাকুর হলেন ভগবান শিব। এছাড়া নবমীর দিন রাজবংশী রীতি মেনে কৃষি উৎসব পালন করা হয়। দেবীর থানে ওই দিন লাঙল, কোদাল, কাস্তে প্রভৃতি কৃষি যন্ত্রপাতির পুজো হয়।

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

কোজাগরী পুজো শেষে সবার অলক্ষ্যেই বিসর্জিত হবেন রাজবাড়ির দুর্গা

শিল্পের সন্ধানে জীবন্ত শিল্পীদের মণ্ডপে হাজির করেছে বহরমপুর

বামনগোলায় রায় বাড়ির দুর্গা পুজোয় নজর কাড়লেন মহিলা পুরোহিতরা

ধান্যকুড়িয়া গ্রামে, নিরামিষ বাল্যভোজনে মাতে বৈষ্ণব সমাজ

ঘাটালের হরিশপুরে পুজো মণ্ডপের থিম ‘মাটি আর মা’

বিদ্যাধরী নদীর তীরে উভয় সম্প্রদায়ের হাতে পুজীত হন দেবী দুর্গা

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর