নিজস্ব প্রতিনিধি: দেখতে দেখতে ২ বছর পার। ২০২২ সালের ২৪ মার্চ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান অভিনেতা অভিষেক চট্টোপাধ্যায়। বাংলার অন্যতম দাপুটে অভিনেতা ছিলেন তিনি। টলিউডে তৎকালীন যুগে যে কটি অভিনেতা ছিলেন, তাঁদের মধ্যে একজন অভিষেক চট্টোপাধ্যায়। একাধিক ব্লকবাস্টার ছবি তাঁর মাধ্যমে উপহার পেয়েছে টলিউড ইন্ডাস্ট্রি। তবে সঠিক মর্যাদা পাননি তিনি। মৃত্যুর আগে ছোট পর্দায় চুটিয়ে অভিনয় করে গিয়েছেন তিনি। তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। দিন কয়েক আগেই অভিনেতার স্ত্রী সংযুক্তা জানিয়েছিলেন, অভিষেকের মৃত্যুর পর এই প্রথম তিনি তাঁদের বাড়ির দুর্গা পুজো করবেন।
গতবছর পুজোর সময় তিনি কলকাতায় ছিলেন না। তবে সংযুক্তা সবসময়ই বলেন, তাঁদের সঙ্গে এখনও অভিষেক রয়েছে। শারীরিকভাবেই না থাকলেও, তবে আসলে তাঁদের সঙ্গেই রয়েছেন। তাই এইবার বিশ্বাস নিয়েই পুজোতে সিঁদুরও খেলবেন সংযুক্তা। দুর্গাপুজোর শেষদিনে অর্থাৎ দশমীতে বাঙালির সিঁদুর খেলা রীতি বহুদিনের। যেখানে গা ভাসান অবিবাহিত এবং বিবাহিত মেয়ে সকলেই। কিন্তু সামাজিক নিয়ম অনুসারে হিন্দু বিধবারা সিঁদুর পড়েন না, তাই পুজোতেও তাঁরা সিঁদুর খেলেন না। এদেশের বেশিরভাগ মহিলারা এই নিয়মই মানেন এখনও। তবে অভিষেক ঘরণী সংযুক্তা মুক্তমনা বরাবরই সমাজের উল্টো স্রোতে ভেসেছেন। তিনি অভিষেক আছেন, এই বিশ্বাস নিয়েই এবছর সিঁদুর খেলবেন।
এবিষয়ে সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে সংযুত্তা জানিয়েছেন, ‘আমি এবারও সিঁদুর খেলব, মায়ের পায়ের সিঁদুর। কারণ, অভিষেক সশরীরে নেই, তবে আমি এখনও অভিষেকের স্ত্রী। বিয়ের দিন ও আমার সিঁথিতে সিঁদুর পরিয়েছিল, তাই আমি ওটা ওঁর জন্য পরতেই পারি। যদিও আমি অভিষেককে ভুলে অন্য কাউকে বিয়ে করতাম, তাহলে ওঁর সঙ্গে আমার বিচ্ছেদ হত। তবে সে সম্ভবনা নেই, আমি চিরকাল ওঁর স্ত্রী হয়েই থাকব। ওঁকে এখনও অন্তর থেকে ভালোবাসি, ওঁর পরিচয়েই বেঁচে আছি। সমাজের কোনও রীতি এটার বিরুদ্ধে আমায় নিয়ে যেতে পারবে না। আমি এখনও অভিষেকের দেওয়া নোয়া পরি। যদিও এটা আমির ব্যক্তিগত মতামত, অন্য কারোর মতের সঙ্গে নাও মিলতে পারে, না মিললেও কোনও ব্যাপার নয়।’ এর আগে সংযুক্তা জানিয়েছিলেন, অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুর পর মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছিল তাঁকে। সেই যন্ত্রণা তিনি মেয়ের দিকে তাকিয়ে কাটিয়ে ফেলেছেন। প্রসঙ্গত, অভিনেতা, স্বামী অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুর পর ২০২২-এ দুর্গাপুজোর সময় কলকাতায় ছিলেন না সংযুক্তা। মেয়ে ডলকে নিয়ে কেরল চলে গিয়েছিলেন। তবে এবার স্বামীর স্মৃতি আগলে রাখতেই বাড়িতে পুজো করবেন।