নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: জেলার সবচেয়ে বড় দুর্গা প্রতিমা তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল জলপাইগুড়ি মুহুরি পাড়া সর্বজনীন দুর্গাপূজা কমিটি। পুজোও মিটেছে ভালোয় ভালোয়। কিন্তু এত বড় দুর্গা বিসর্জন দিতে গিয়ে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় উদ্যোক্তাদের। ঘাটে প্রতিমা নিয়ে যাওয়ার জন্য লোকই পাওয়া যাচ্ছিল না। অবশেষে দমকল মন্ত্রী সুজিত বসুর হস্তক্ষেপে হোস পাইপের মাধ্যমে জল দিয়ে মাটি গলিয়ে প্রতিমা বিসর্জন করা হল রবিবার সকালে। আর এই অভিনব কায়দায় বিসর্জন দেখতে এদিন ক্লাব প্রাঙ্গনে উপচে পড়ল ভিড়।
৭০তম বর্ষে জলপাইগুড়ি মুহুরি পাড়া সর্বজনীন ৩০ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট দুর্গা প্রতিমা বানিয়ে ছিল। এই প্রতিমাই ছিল এবছরের জলপাইগুড়ি জেলার মানুষের কাছে সবচেয়ে বড় চমক। তাই এই ক্লাবে এবারের থিমের নামও দেওয়া হয়েছিল ‘বড় মা’। এক পুজো উদ্যোক্তা সুশান্ত সেন জানা, প্রতিবারই নতুন নতুন থিম করেন। যা দেখতে প্রচুর মানুষ আসেন। প্রতিবারই পাড়ার ছেলেরা মিলেই প্রতিমা বিসর্জন করতে নিয়ে যায়। কিন্তু এবারে প্রতিমা নিরঞ্জন করতে ঘাটে নিয়ে যাওয়া যাচ্ছিল না।
উপায় না খুঁজে পেয়ে পুজো উদ্যোক্তারা দমকলের দারস্থ হন। কিন্তু সেখান থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর জেলা তৃণমূলের সভাপতি মহুয়া গোপ এবং প্রাক্তন জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তীর কাছে যান তাঁরা। তারপর ওই দুই নেতা যোগাযোগ করেন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুর সঙ্গে। মন্ত্রীর হস্তক্ষেপে দমকল দফতরের বিশেষ অনুমতি সাপেক্ষে রবিবার সকালে হোস পাইপের মাধ্যমে জল দিয়ে গলিয়ে দিয়ে প্রতিমা বিসর্জন করলেন।
ক্লাব সম্পাদক উত্তম বোস বলেন, ‘এত বড় মাপের প্রতিমা বিসর্জন দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো এই শহরে নেই। ফলে সত্যিই আমরা সমস্যায় পড়ি। একবার ভাবা হয়েছিল প্রতিমাকে খণ্ড খণ্ড করে নিয়ে গিয়ে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু এতে আপত্তি ওঠে অনেকের। শেষমেষ মন্ত্রী হস্তক্ষেপে সুষ্ঠুভাবেই মিটল বিসর্জন পর্ব। মন্ত্রীর কাছে আমরা চিরকৃতজ্ঞ। এক দমকল আধিকারিক বলেন, ‘বিশেষ অনুমতি পেয়ে আমরা এই ধরনের বিসর্জন করলাম। সম্ভবত আগে জলপাইগুড়িতে এভাবে বিসর্জন কেউ দেখেননি।’